বড়লেখায় বন্যার অবনতি ডায়রিয়া ও চর্মরোগের প্রাদুর্ভাব জরুরী চিকিৎসার ব্যবস্থা নেই
বড়লেখা প্রতিনিধি॥ হাকালুকি হাওরপাড়ের বড়লেখায় বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করতে যাচ্ছে।
বৃহস্পতিবার থেকে ফের বন্যার অবনতি ঘটেছে। শনিবার রাতের ৩ ঘন্টার ভারী বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে হাওর ও লোকালয়ের বাড়ি-ঘর ও রাস্তা-ঘাটে পানি বাড়তে থাকে। উপজেলার সুজানগর ও তালিমপুর ইউনিয়নে ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া ও চর্মরোগের প্রাদুর্ভার দেখা দিয়েছে। গত ৩ দিনে প্রায় সাড়ে ৪শ’ ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া ও চর্মরোগী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্র, ইউনিয়ন পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র ও কমিউনিটি ক্লিনিকে চিকিৎসা নিয়েছেন। হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে ৬ জন। বন্যা দুর্গতদের জন্য মেডিকেল টিম গঠন ছাড়া জরুরী চিকিৎসা সেবায় এখনও বিশেষ কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। চিকিৎসক সংকট নিরসনে অন্য উপজেলা থেকে ডেপুটেশনে ডাক্তার নিয়োগের দাবী উঠেছে।
সরেজমিনে উপজেলার সুজানগর ইউনিয়নের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে বন্যাদুর্গত এলাকার নারী ও শিশু রোগীর ভিড় থাকতে দেখা গেছে। হাওরপারের ভোলারকান্দি গ্রামের রহিমা বেগম জানান, পানি বাড়ায় রাস্তা দিয়ে চলাচল করা যাচ্ছে না। অনেকের ডায়রিয়া, জ্বর ও কাশি দেখা দিয়েছে। নৌকা না থাকায় অসুস্থ লোকজন হাসপাতলে আসতে পারছেন না। তিনি গত ৩ দিন ধরে জ্বরে ভোগছেন। কর্তব্যরত চিকিৎসক উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার নজরুল ইসলাম জানান, গত ৩ দিনে এ স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে বন্যা দুর্গত এলাকার ২০০ রোগি চিকিৎসা নিয়েছেন। কয়েকজনের নিউমোনিয়া ও মারাত্মক শ্বাসকষ্ট ধরা পড়েছে। প্রতিদিন রোগির ভিড় পড়ছে। হাকালুকি উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রের ইনচার্জ উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার মোবারক হোসেন, জানান, রোববার একেন্দ্রে ৫০ জন চর্মরোগী চিকিৎসা নিয়েছেন। সকাল সাড়ে ৮টা থেকে বেলা আড়াইটা পর্যন্ত চিকিৎসা সেবা দেয়া হচ্ছে। এপর এখানে কেউ থাকেন না। প্রয়োজন পড়লে অনকলে চিকিৎসা দেয়া হয়।
এলাকার বাসিন্দা মুক্তিযোদ্ধা এখলাছুর রহমান জানান, হাকালুকি হাওরপাড়ের দুর্গত এলাকার প্রাণকেন্দ্র এ উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রেটি। কিন্তু স্বাভাবিক নিয়মেই এখানে চিকিৎসকরা ডিউটি করছেন। ভাড়তি কোন সেবা দিচ্ছেন না। বন্যাকালিন ক্ষতিগ্রস্ত দরিদ্র লোকজনের কথা চিন্তা করে জরুরী চিকিৎসার জন্য একজন মেডিকেল অফিসারসহ উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রটি সার্বক্ষণিক খোলা রাখার দাবী জানান। বড়লেখায় ডাক্তার সংকট থাকলে অন্য উপজেলা থেকে ডেপুটেশনে ডাক্তার এনে ব্যবস্থা নেয়া হউক।
মন্তব্য করুন