বড়লেখায় ভূয়া বিক্রেতা সাজিয়ে দলিল রেজিষ্ট্রীর চেষ্টা : দলিল জব্দ ক্রেতা বিক্রেতাসহ আটক ৪
আব্দুর রব॥ বড়লেখা সাব-রেজিষ্ট্রার অফিসে বুধবার জালিয়াতির মাধ্যমে ভুমি রেজিষ্ট্রেশনকালে ভূয়া ভুমি বিক্রেতা, গ্রহীতা ও সহযোগীসহ ৪ জালিয়াতকে আটক করা হয়েছে। আটকৃতরা হলো উপজেলার বর্ণি ইউনিয়নের মৃত আজমল আলীর ছেলে ভুমি বিক্রেতা মতলিব আলী (৫৫), ভুমি গ্রহীতা (ক্রেতা) সামছুল হক (৬০), ভূয়া ভুমিদাতা একই ইউনিয়নের ছমির উদ্দিনের স্ত্রী হাওয়ারুন নেছা (৬৫) ও সহযোগী শামীম আহমদের স্ত্রী হাজেরা বেগম (৩৫)। গোপন সংবাদে প্রকৃত ভুমিদাতা সাব-রেজিষ্ট্রী অফিসে জালিয়াতির অভিযোগ করায় সাব-রেজিষ্ট্রার আব্দুল করিম দোলা তাৎক্ষণিক দলিলটি জব্ধ করেন এবং জড়িতদের আটক করেন। দলিল জালিয়াতির ঘটনা জানাজানি হলে সাবরেজিষ্ট্রার অফিস ও দলিল লেখক শেডে তোলপাড় শুরু হয়।
সাবরেজিষ্ট্রার অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার বর্ণি মৌজার আর,এস ৯৪৯ ও আর,এস খতিয়ান ৩৫ দাগের সাড়ে ৪ শতক ভূমি একই ইউনিয়নের সামছুল হক ক্রয় করেন মুতলিব গং ৬জনের নিকট থেকে। বুধবার ক্রেতা সামছুল হক ও বিক্রেতা মুতলিব, দলিল লেখক আব্দুল হক যোগসাজস করে পৈত্রিক সম্পত্তির অংশিদার দাতাদের একজন নেওয়ারুন নেছাকে না জানিয়ে ভূমি রেজিষ্ট্রির দলিলে সাক্ষরসহ সকল কার্যক্রম সম্পন্ন করেন। জালিয়াতির কাজে তারা বর্ণি গ্রামের ছমির উদ্দিনের স্ত্রী হাওয়ারুন নেছাকে নেওয়ারুন নেছা সাজিয়ে সাক্ষর নেন। প্রকৃত নেওয়ারুন নেছা দীর্ঘদিন থেকে অসুস্থ। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পৈত্রিক সম্পত্তির প্রকৃত শরিক নেওয়ারুন নেছার ছেলে সাবুল আহমদ সাবরেজিষ্ট্রার অফিসে মায়ের জাতীয় পরিচয়পত্রসহ মাকে নিয়ে হাজির হয়ে ভূয়া নেওয়ারুন নেছাকে সনাক্ত করেন। জালিয়াতির বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে সাব-রেজিষ্ট্রার আব্দুল করিম দোলা উক্ত দলিল রেজিষ্ট্রী স্থগিত করে তা জব্দ করেন ।
প্রকৃত নেওয়ারুন নেছার ছেলে সাবুল আহমদ বলেন, ‘আমার মা দীর্ঘদিন থেকে অসুস্থ। মাকে না জানিয়ে কৌশলে মায়ের ছবি সংগ্রহ করে ভূয়া দাতা সাজিয়ে ভূমি রেজিষ্ট্রির চেষ্টা করা হয়। আমি খবর পেয়ে মাকে নিয়ে সাব-রেজিষ্ট্রার অফিসে গেলে জালিয়াতির বিষয়টি ধরা পড়ে।’
দলিল লেখক আব্দুল হক জানান স্থানীয় ইউপি মেম্বার শাহাব উদ্দিন নেওয়ারুন নেছাকে সনাক্ত করায় আমি আর যাচাই-বাচাই না করেই দলিল রেজিষ্ট্রীর কার্যক্রম চালিয়ে যাই। আমি জানতাম না বায়া আব্দুল মতলিবের শরিকান নেওয়ারুন নেছা ভুয়া বায়া।
দলিল লেখক সমিতির সভাপতি মীর মখলিছুর রহমান বলেন, ‘জাল জালিয়াতির বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে সাব-রেজিষ্ট্রার মহোদয় দলিল জব্দ করেছেন। সমিতি বৈঠক করে দলিল লেখক আব্দুল হকের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে।’
সাব-রেজিষ্ট্রার আব্দুল করিম দোলা জানান, ‘ দলিল রেজিষ্ট্রেশনে জালিয়াতির চেষ্টার অভিযোগ পেয়েই দলিলটি রেজিষ্ট্রি না করে জব্দ করি। এ ঘটনায় দলিল লেখকসহ দায়ীদের বিরুদ্ধে বিধিমোতাবেক ব্যবস্থা নেয়া হবে।
মন্তব্য করুন