বড়লেখা দক্ষিণভাগ ইউনিয়নে আটক রাখা প্রেমিক যুগল এখন শ্রীঘরে
বড়লেখা প্রতিনিধি॥ বড়লেখায় স্ত্রীর দেনমোহর পরিশোধ না করে প্রেমিকাকে নিয়ে পালিয়ে বিয়ে করায় বিয়ানীবাজারের প্রেমিক যুগলকে লোকজন ২দিন ধরে ইউনিয়ন কাস্টডিতে আটক রাখে। এখন ওই প্রেমিক যুগলের ঠাঁই হয়েছে শ্রীঘরে।
১৯ অক্টোবর বৃহস্পতিবার বিকেলে সালিস বৈঠকে দেনমোহর ও খোরপুষের টাকা পরিশোধের পর তাদেরকে ছেড়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত হলেও প্রেমিকার বাবার অভিযোগে শুক্রবার বিকেলে পুলিশ ইউনিয়ন কাস্টডি থেকে তাদেরকে উদ্ধার করে থানা হেফাজতে নিয়েছে। প্রেমিক-প্রেমিকাকে আটকের ঘটনায় দুই উপজেলা জুড়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে।
পুলিশ ও এলাকাবাসী সুত্রে জানা গেছে, ২০০৫ সালে বিয়ানীবাজারের দিগলবাগ গ্রামের মৃত মোজাফ্ফর আলীর ছেলে হেলাল উদ্দিন (৩০) পালিয়ে নিয়ে বড়লেখা উপজেলার দোহালিয়া গ্রামের আব্দুল কাদিরের মেয়ে শিমু বেগমকে বিয়ে করেন। তাদের ২ ছেলে-মেয়ে রয়েছে। পারিবারিক মনমালিন্যে ৫ মাস ধরে শিমু বেগম বাবার বাড়ীতে। স্ত্রীকে তালাক ও দেনমোহর পরিশোধ কিংবা দ্বিতীয় বিয়ের অনুমতি না নিয়েই হেলাল উদ্দিন গত ৬ আগষ্ট প্রেমিকা বিয়ানীবাজার উপজেলার নোয়াগাও গ্রামের আজিজুর রহমানের মেয়ে খাদিজা বেগমকে বিয়ে করেন। অবৈধ বিয়ের কাবিন রেজিষ্ট্রী করেন মুল্লাপুর ইউনিয়নের নিকাহ রেজিষ্টার কেএম আমিনুল ইসলাম।
শিমু বেগম অভিযোগ করেন, হেলাল উদ্দিন তার সাথে প্রতারণা করেছে। রাস্তা থেকে ধরে নিয়ে তাকে বিয়ে করেছে। ৪ লাখ টাকা দেনমোহর দেয়ার কথা বলে মাত্র ৫০ হাজার টাকার কাবিন রেজিষ্ট্রী করেছে। দুই সন্তান জন্মের পরও তার লাম্পট্য যায়নি। আমাকে নির্যাতন করে। তালাক ও দেনমোহর না দিয়েই আরেকটি মেয়েকে বিয়ে করেছে।
এদিকে ১৮ অক্টোবর দুই সন্তানের জনক হেলাল উদ্দিন প্রেমিকা খাদিজা বেগমকে নিয়ে মৌলভীবাজার থেকে বিয়ানীবাজার যাওয়ার পথে স্ত্রী শিমু বেগমের বাবা, ভাইসহ আত্মীয়-স্বজন প্রেমিকাসহ হেলাল উদ্দিনকে আটক করে স্থানীয় দক্ষিণভাগ দক্ষিণ ইউনিয়ন অফিসে সোপর্দ করেন।
ইউপি চেয়ারম্যান আজির উদ্দিন জানান, স্ত্রীকে তালাক ও দেনমোহর পরিশোধ না করে আরেকটি মেয়েকে অবৈধভাবে বিয়ে করায় হেলালের শ্বশুর বাড়ির লোকজন তাদেরকে আটকের পর ইউনিয়ন অফিসে সোপর্দ করে। বৃহস্পতিবার হেলাল উদ্দিনের অভিভাবকসহ তার এলাকার জনপ্রতিনিধিরা স্ত্রী শিমু বেগমের দেনমোহর ও খোরপুষ পরিশোধ করে শুক্রবার তাদেরকে ছাড়িয়ে নিবেন বলে মুচলেখা দিয়েছেন।
এদিকে হেলালের প্রেমিকা খাদিজা বেগমের বাবা আজিজুর রহমান শুক্রবার বিকেলে থানায় মেয়ে ও জামাতাকে আটক রাখার অভিযোগ করলে পুলিশ ইউনিয়ন কাস্টডি থেকে উদ্ধার করে তাদেরকে থানা হেফাজতে নিয়েছে।
আজিজুর রহমান জানান, হেলাল তার মেয়েকে পালিয়ে নিয়ে বিয়ে করেছে। ৩ মাস পর তাদের বিয়ে মেনে নিয়েছি। কিন্তু জানতাম না সে বিবাহিত ও দুই সন্তানের জনক।
বড়লেখা থানার ভারপ্রাপ্ত মোহাম্মদ সহিদুর রহমান জানান, ইউনিয়ন কাস্টডিতে এভাবে কাউকে আটক রাখার নিয়ম নেই। বিষয়টি তিনি জানতেন না। অভিযোগ পাওয়ার পরই পুলিশ তাদেরকে উদ্ধার করে থানা হেফাজতে নিয়েছে।
মন্তব্য করুন