বড়লেখা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ
বড়লেখা প্রতিনিধি॥ বড়লেখা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে বদলি বাণিজ্য, টাইম স্কেল, এরিয়ার বিল, উৎসব ভাতা, মাতৃত্বকালীন ছুটি মঞ্জুরসহ নানাক্ষেত্রে ঘুষ আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। ভুক্তভোগী শিক্ষকরা ভারপ্রাপ্ত প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও উচ্চমান সহকারীর বিরুদ্ধে এসব অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগের আঙুল তুললেও তারা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন এসব তাদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার ও গভীর ষড়যন্ত্র।
অভিযোগ সুত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি অবসরকালীণ ছুটিতে (পিআরএল) গমনের ২ মাস বাকী থাকতে নীতিমালা ভঙ্গ করে বড়লেখা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা গীতা রানী দেবীকে কাঁঠালতলী প্রাইমারী স্কুলে, ছোটলেখা দক্ষিণভাগ প্রাইমারী স্কুলের এক শিক্ষিকাকে মৌখিকভাবে ডেপুটেশনে উত্তর বাগিরপার স্কুলে বদলি করা হয়। সাম্প্রতিক উপজেলার বিভিন্ন বিদ্যালয়ে কর্মরত ৬৫জন শিক্ষক সুবিধাজনক স্থানে বদলির আবেদন করেন। এরমধ্যে ৪০ জনের বদলি হয়। চাকরির ক্ষেত্রে নানা ক্ষতির আশংকায় নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ভুক্তভোগী শিক্ষকরা অভিযোগ করেন শিক্ষক নেতাদের মাধ্যমে বদলি বাণিজ্য ও জাতীয় বেতন স্কেল পে-ফিক্সেশনে শিক্ষক প্রতি ৩শ’ থেকে ৫শ’ টাকা করে আদায় করা হয়। সূত্র জানায়, পে-ফিক্সেশনের নামে টাকা আদায়ের জন্য শিক্ষা কর্মকর্তার অফিসে বৈঠক বসে। এতে কয়েকজন শিক্ষকের আপত্তি উপেক্ষা করে টাকা আদায়ের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, টাইম স্কেল, এরিয়ার বিল, উৎসব ভাতা, মাতৃত্বকালীন ছুটি, ভবিষ্যৎ তহবিল, উচ্চতর ডিগ্রি গ্রহণ, বকেয়া বিল উত্তোলন ও চিকিৎসাসহ নানা ধরনের ছুটি, বদলি, সরকারিভাবে বরাদ্দকৃত উন্নয়ন কাজের অর্থ পেতে, প্রাক্-প্রাথমিকের মালামাল ক্রয়, শিক্ষকদের বেতন-বিলসহ সকল ক্ষেত্রেই ঘুষ দেয়ার অলিখিত নিয়ম চালু করেছেন ভারপ্রাপ্ত শিক্ষা কর্মকর্তা অরবিন্দ কর্মকার ও অফিসের উচ্চমান সহকারী সমরেশ চন্দ্র দেবনাথ। টাকা না দিলে বিভিন্ন পাওনার ফাইল ঝুলিয়ে সময়ক্ষেপন ও হয়রানী করা হয়। কিন্তু হয়রানির ভয়ে তারা প্রকাশ্যে মুখ খুলতে নারাজ। নাম প্রকাশ না করার শর্তে শতাধিক সহকারী ও প্রধান শিক্ষক ক্ষুব্ধ কণ্ঠে অভিযোগ করেন, ‘শিক্ষা অফিসে ঘুষ ছাড়া কিছুই হয় না। সার্ভিস বুক খোলা থেকে ঘুষ নেয়রা শুরু আর অবসর নেয়া পর্যন্ত ঘুষ চালিয়ে যেতে হয়। তবে অভিযোগের বিষয়ে উচ্চমান সহকারী সমরেশ চন্দ্র দেবনাথ বলেন, ‘বদলির বিষয়ে আমার কোনো হাত নেই। এতে টাকা নেয়ার প্রশ্নই আসে না। এটা আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার ও ষড়যন্ত্র।’
ভারপ্রাপ্ত প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা অরবিন্দ কর্মকার বলেন, ‘বদলি কমিটির সিদ্ধান্তে শিক্ষক বদলি করা হন। এখানে বাণিজ্যের কিছু নেই। পে-ফিক্সেশনের নামে টাকা আদায়ের বিষয়ও তার জানা নেই। কিছু শিক্ষক আমাকে অপছন্দ করায় তারাই আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছেন।
মন্তব্য করুন