(ভিডিওসহ) ভাটেরা রেলওয়ে স্টেশন এলাকায় উম্মুক্ত রেল ক্রসিং পারাবত ট্রেনের ধাক্কায় মাইক্রোবাসের ৭ যাত্রী আহত
স্টাফ রিপোর্টার॥ মৌলভীবাজারের কুলাউড়ার ভাটেরা রেলওয়ে স্টেশন এলাকায় পারাবত ট্রেনের ধাক্কায় মাইক্রোবাসের ৭ যাত্রী আহত হয়েছেন। আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
রেলওয়ে পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, ভাটেরা রেলওয়ে স্টেশনের কাছাকাছি উম্মুক্ত রেল ক্রসিং পারাপারের জন্য একটি মাইক্রেবাস শনিবার দুপুর দেড়টার দিকে উঠলে ঢাকা থেকে সিলেটগামী পারাবত ট্রেনের সাথে ধাক্কা লেগে মাইক্রোবাসটি দুমড়েমুচরে যায়। এ সময় মাইক্রোবাসের মাঝের ও পেছনের সিটে থাকা ৭ জন যাত্রী আহত হন। সামনে থাকা চালক ও ২ যাত্রী ট্রেন আসতে দেখে দ্রত নেমে যান। স্থানীয়রা উদ্ধার করে আহতদের ২ জনকে কুলাউড়া হাসপাতালে ও গুরুত্বর ৫ জনকে সিলেট এম এ জি ওসমানি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
আহতরা হলেন, কুলাউড়া সদর ইউনিয়নের প্রতাবী গ্রামের আছকির মিয়া (৫০), তার ছেলে রিয়াদ আহমদ (৭), গুতগুতি গ্রামের জামাল মিয়ার ছেলে ফাহাত (১৫), মুজিব আলীর ছেলে তাহছিন (১৫), বাবুল মিয়ার স্ত্রী জলি বেগম (৪৫), সহ আরও ২ জন।
আহতদের মধ্যে ৫ জনকে কুলাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তাদের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। এদিকে দুর্ঘটনার পর থেকে গাড়ির চালক মোস্তফা মিয়া পলাতক রয়েছেন।
জানা গেছে, কুলাউড়া উপজেলার সদর ইউনিয়নের গুতগুতি গ্রামের বাসিন্দা বাবুল মিয়ার মেয়ের সাথে ভাটেরা ইউনিয়নের পশ্চিম মাইজগাঁও এলাকার বাসিন্দা মৃত সফর আলীর ছেলে ও মোঃ তাজুল ইসলামের ভাই ছোট ভাই পর্তুগাল প্রবাসীর বিয়ের কথাবার্তা বলার জন্য একটি মাইক্রোবাসে রওয়ানা দেন ১০জন যাত্রী।
অপরদিকে সিলেট থেকে বাবুল মিয়ার এক আত্মীয় আগে থেকেই ভাটেরা পুরান বাজারে এসে যাত্রীবাহি নোহা গাড়ির জন্য অপেক্ষা করছিলেন। ট্রেন দূর্ঘটনার আগমুহুর্তে গাড়ির চালক কুলাউড়ার রাউৎগাঁও ইউনিয়নের নর্তন এলাকার মোস্তফা মিয়া ভাটেরা সাইফুল তাহমিনা আলিম মাদ্রাসার সামনে রেললাইনের ওপর তার গাড়িটি তুলে বাবুল মিয়ার ওই আত্মীয়ের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। এসময় গাড়ির সামনের সিটে বসা ছিলেন প্রতাবী গ্রামের বাসিন্দা ও সাবেক ইউপি সদস্য মোঃ আজাদ মিয়া ও একই গ্রামের শফিক মিয়া। ওই সময় সিলেটগামী পারাবত এক্সপ্রেস ট্রেনের শব্দ শুনে গাড়ির পেছনে থাকা যাত্রীরা তাৎক্ষণিক নামতে পারেননি। এসময় ট্রেনটি মাইক্রোবাসটিকে ধাক্কা দিয়ে ১৫-২০ ফুট দুরে ঠেলে নিয়ে যায়। এতে আহত হন গাড়িতে থাকা ৭ জন যাত্রী। তন্মধ্যে ৫ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
দূর্ঘটনা কবলিত মাইক্রোবাসের যাত্রী কুলাউড়া উপজেলার প্রতাবী গ্রামের বাসিন্দা সাবেক ইউপি সদস্য মোঃ আজাদ মিয়া বলেন, বাবুল মিয়ার মেয়ের জন্য বর দেখতে ভাটেরার উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেই। কিন্তু পথিমধ্যে আমাদের মাইক্রোবাসটি ট্রেন দুর্ঘটনায় কবলিত হলে আহত হন। একমাত্র আল্লাহ পাকের মেহেরবাণীতে গাড়ির সামনের সিটে থাকা ২ জন সহ ৩ জন গাড়ি থেকে নেমে পড়ি। ট্রেনটি আমাদের মাইক্রোবাসকে ধাক্কা দিলে গাড়িটি দুমড়ে-মুচড়ে যায়। এলাকার মানুষের সহায়তায় আহত ৫ জনকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠান।
কুলাউড়া হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. জাকির হোসেন বলেন, আহতদের মধ্যে ৩জন কুলাউড়া হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা নেন। তাদের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাদের সিলেট ওসমানী হাসপাতালে উন্নত চিকিৎসার জন্য প্রেরণ করা হয়।
এ বিষয়ে কুলাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আলী মাহমুদ বলেন, দুর্ঘটনার খবর শুনে পুলিশ ঘটনাস্থলে ছুটে যায়। মাইক্রোবাসের চালকের গাফিলতির কারণে এই দুর্ঘটনাটি ঘটে। আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
কুলাউড়া রেলওয়ে থানার ওসি মিহির কান্তি দে বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যাই। ঘটনাস্থলে কোন রেলক্রসিং নেই। নোহা গাড়ির চালক পলাতক রয়েছে। গুরুতর আহত ৩ জনকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।
মন্তব্য করুন