ভাতিজির বাল্য বিবাহে বাধা দেওয়ায় কাল হলো চাচার পরিবারের
আল আমিন আহমদ॥ ভাতিজির বাল্য বিবাহে বাধা দেওয়ার কারণে চাচার পরিবারকে মামলা করে হয়রানির অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন করেছেন জুড়ীর গোয়ালবাড়ী ইউনিয়নের পশ্চিম শিলুয়া গ্রামের হারুন মিয়া নামের একটি ভুক্তভোগী পরিবার।
ভুক্তভোগী হারুন মিয়া অভিযোগ করে বলেন, তার আপন ভাই লোকমান আলী প্রায় ১ বছর পূর্বে প্রবাসে মারা যান। ভাইয়ের মারা যাওয়ার পর তার স্ত্রী ও একমাত্র মেয়েকে নিয়ে একই বাড়িতে বসবাস করেন। গত ২৪ ডিসেম্বর পরিবারের কাউকে না বলে আমার ভাবী, একমাত্র ভাতিজি মারজানা আক্তার ফাতেহা (১৬) কে পাশ্ববর্তী আকতার মিয়ার পুত্র রাসেল মিয়ার সাথে বিবাহ দিতে চান।আমাদের ভাতিজির ভবিষ্যৎ কথা চিন্তা করে আমি ও আমার ছেলেরা তাতে বাধা দেই।
আমার ভাতিজি শিলুয়া উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের দশম শ্রেণীর ছাত্রী। তার বর্তমান বয়স ১৬ বছর ৫ মাস হওয়াতে আমরা বাল্য বিয়ে দিতে রাজি না হয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে ফোনে অবগত করি । তিনি সাথে সাথে আমাদের বাড়ীতে জুড়ী থানার একদল পুলিশ পাঠান। বাড়ির পার্শ্বে মাগুরা বাজারে পুলিশ আসলে ইউপি সদস্য জয়নাল আবেদীন বিষয়টি দেখবেন বলে তাদেরকে ফিরিয়ে দেন।
ঐ দিন রাতে বর পক্ষের উপস্থিতিতে কন্যার মা আমাদের ভাতিজির বিয়ে দিয়ে দেন। এ সময় স্থানীয় ইউপি সদস্য জয়নাল আবেদিন উপস্থিত ছিলেন। ইউপি সদস্যদের সাথে আমাদের কথা কাটাকাটি হয়। বাল্য বিয়ে বন্ধের বিষয়টি আমাদের ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ আব্দুল কাইয়ুম অবগত রয়েছেন। বিয়ের পর ২১ জানুয়ারি আমাদের ভাতিজি তার নতুন বরকে নিয়ে আমাদের বাড়িতে বেড়াতে আসে।
সাথে বরের চাচাতো ভাই রাসেল সহ ৭-৮ জন পুরুষ ছিলেন। বরের পক্ষ থেকে আসা লোকজন আমাদের বাড়িতে দাওয়াত খাওয়ার পর আমাদের উপর অতর্কিত হামলা করে। এরপর তারা জুড়ী থানায় আমাদের নামে মামলা দায়ের করে। মামলায় আমার ছেলে তোফাজ্জল হোসেন (২২) জোবায়ের হোসেন (১৫) এবং আমার স্ত্রী আছমা বেগম (৪০) কে আসামী করা হয়।
পুলিশ আমার ছেলে জুবায়েরকে আটক করে জেল হাজতে প্রেরণ করে। আমরা কোন কিছু বুঝে উঠার আগে এ রকম ঘটনা হয়ে যায়। এর ভুক্তভোগী হয়ে আমাদের মামলা ঘাটতে হচ্ছে। তার পরিবারকে মামলা থেকে মুক্তি দিয়ে হয়রানি বন্ধ করতে প্রশাসনের প্রতি আহবান জানান তিনি। জুড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোশাররফ হোসেন জানান, মারামারির ঘটনায় মামলা হয়েছে।
মন্তব্য করুন