ভারতে মূদ্রা বাতিল: চাতলাপুর স্থল শুল্ক ষ্টেশনে প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে আমদানি রপ্তানি কার্যক্রম
কমলগঞ্জ প্রতিনিধি॥ সম্প্রতি ভারত সরকার ভারতীয় ৫০০ ও ১০০০ হাজার টাকার কাগুজে নোট বাতিল করায় সরাসরি প্রভাব পড়েছে বাংলাদেশের সাথে আমদানি রপ্তানি কার্যক্রমেও। মূদ্রা বাতিলে ভারতে বাংলাদেশী টাকার ও ই্উএস মূদ্রা ডলারের মানও কমে যাওয়া ভারতের উত্তর ত্রিপুরা অঞ্চলের ব্যবসায়ীরা চাহিদাকৃত বাংলাদেশী পণ্য নিতে এলসি করতে পারছেন না। এলসি করতে না পারায় মৌলভীবাজারের চাতলাপুর স্থল শুল্ক ষ্টেশনের বাংলাদেশ ও ভারতের ব্যবসায়ীরা ব্যাংকের মাধ্যমে টিটি ও এলসি করতে পারছেন না বলে এ শুল্ক স্টেশনে গত ১২ দিন ধরে আমদানি রপ্তানি কার্যক্রম প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে।
১৯ নভেম্বর শনিবার দুপুরে সরেজমিন চাতলাপুর স্থল শুল্ক স্টেশন ঘুরে দেখা যায়, এখানে নেই কোন পণ্যবাহী পরিবহনের লাইন। শুল্ক স্টেশনের শ্রমিকরা অলস বসে সময় পার করছেন। দুই সপ্তাহ আগেও এখানে প্রাণ আরএফ এল সামগ্রী, বাংলাদেশী বিভিন্ন কোম্পানীর সিমেন্টবাহী ট্রাক, মাছবাহী কার্গোসহ বাংলাদেশী পণ্যবাহী গাড়ির দীর্ঘ লাইন থাকতো। এখন চার দিনে একবার সামান্য পণ্য যাচ্ছে ভারতের ত্রিপুরার কৈলাসহরে।
চাতলাপুর স্থল শুল্ক স্টেশনের ভারতীয় অংশে অবস্থানরত ভারতীয় আমদানী রপ্তানীকারক আব্দুল মুহিত মিটন, গৌরা অধিকারী, ওয়াহিদুজ্জামান বলেন, ভারতীয় মূদ্রা বাতিলে ব্যাংক থেকে কোন টাকা উত্তোলন করতে পারছেনা না বলে এলসি ও টিটিও করতে পারছেন না। ব্যাংকে এক লাখ টাকার চাহিদা দিলে ব্যাংক মাত্র দুই হাজার টাকা দিতে চায়। ফলে এলসির মাধ্যমে বাংলাদেশে কোন পণ্যের চাহিদাও দিতে পারছেন না। বাংলাদেশ অংশে চাতলাপুর স্থল র্শুক স্টেশন এলাকায় অবস্থানরত বাংলাদেশী ব্যবসায়ী সাইফুর রহমান রিমন, ইমরান আহমেদ ও সোহেল আহমদ বলেন, আগে ভারতে বাংলাদেশী ১ শত টাকার নোটের বিনিময়ে ভারতীয় ৮২ টাকা পাওয়া যেত। গত দুই সপ্তাহ ধরে বাংলাদেশী ১ শত টাকার বিনিময়ে ৭০ টাকা পাওয়া যায়। মার্কিনী মূদ্রা ডলালেরও মান কমে গেছে। ফলে বাংলাদেশ থেকে কোন সামগ্রী রপ্তানি করতে পারছেন না। এমনকি ভারত থেকে সাতকরা, ভাঙ্গা কঁঅচ, কলঅসহ ফন্য আমদানিও করতে পারছেন না।
বাংলাদেশী ব্যবসায়ী সাইফুর রহমান রিমন বলেন, আগে প্রতিদিন কোন না কোন কোম্পানীর ৪ থেকে ৫ ট্রাক পণ্য এই পথে ভারত রপ্তানি হত। এখন চারদিনে একবার হচ্ছে মাত্র। তিনি আরও বলেন, ভারতে মাছ রপ্তানির একটি চালানপত্র নিয়ে তিনি চাতলাপুর শুল্ক স্টেশন এলাকা এসেছিলেন। তবে টাকার অভাবে ভারতীয় ব্যবসায়ী চালানপত্র গ্রহন করিেন বলে তিনি তা ফিরিয়ে আনতে বাধ্য হয়েছেন।
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার শমশেরনগরস্থ চাতলাপুর স্থল শুল্ক স্টেশনের সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা আতাউর রহমান ভারতীয় দুটি মূদ্রা বাতিলে এই পথে আমদানি রপ্তার উপর বড় ধরনের প্রভাব পড়ার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ১০/১২ আগেও আমদানি রপ্তানি কার্যক্রমে তারার সীমান্তে শুল্ক স্টেশন এলাকায় ব্যস্ত থাকতেন। মূদ্রা বাতিলে ভারতীয় ব্যবসায়ীরা বাংলাদেশী ব্যবসায়ীদের টিটি ও এলসি দিতে পারছে না বলে এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।
মন্তব্য করুন