(ভিডিওসহ) মৌলভীবাজারে একই স্থানে ইজতেমা ও তাফসিরুল কুরআন মাহফিলের ডাক : দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে

October 28, 2018,

স্টাফ রিপোর্টার॥ আগামী ৭, ৮, ৯ ও ১০ নভেম্বর মাওলানা সাদের অনুসারীদের আয়োজনের মৌলভীবাজার ইজতেমা মাঠের একই স্থানে তাফসিরুল কুরআন মাহফিলের ডাক দিয়েছেন জেলার ২৫০টি কওমি মাদ্রসার ও ওলামা মাশায়েখরা।
জেলা ইজতেমা বন্ধের দাবীতে জেলা প্রশাসক বরাবরে কওমি মাদ্রসার ও ওলামা মাশায়েখদের আপত্তি থাকা সত্বেও মাওলানা সাদ সাহেবের ভ্রান্ত মতবাদ প্রচারের লক্ষ্যে মৌলভীবাজারের জগন্নাথপুর (আবাসন) এলাকায় ইজতেমার আয়োজন করেছেন একটি পক্ষ। পরে জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত আপত্তি থাকার পরও বিরোধপূর্ন তথাকথিত ইজতেমার উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক। এ নিয়ে জেলার ওলামা মাশয়েখদের মধ্যে চরম ক্ষোভের সৃষ্ঠি হয়েছে।
রোববার ২৮ অক্টোবর দূপুরে মৌলভীবাজার প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে জেলা উলামা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মাওলানা গিয়াস উদ্দিন আরো বলেন, তাবলীগ জামায়েতের মূল নীতি থেকে সরে কিছু ভাই এই ইজতেমার আয়োজন করতে যাচ্ছে। সরকারের সাথে পরামর্শক্রমে আগামী বিশ্ব ইজতেমা তাবলীগের কেন্দ্রীয় মারকাজ মসজিদ কাকরাইলের সিন্ধান্ত অনুযায়ী এ বছর ৬৪টি জেলার ইজতেমা টঙ্গিস্থ বিশ্ব ইজতেমারর মাঠে অনুষ্ঠিত হবে। টঙ্গিতে দুই পূর্বে যথাক্রমে ১৮, ১৯ ও ২০ এবং ২৫, ২৬ ও ২৭ জানুয়ারী ২০১৯ইং অনুষ্ঠিত হবে। ২য় পর্বে মৌলভীবাজার জেলা টঙ্গি বিশ্ব ইজতেমার অংশগ্রহণ করবে। পৃথক ভাবে জেলা পর্যায়ে ইজতেমা করার সুযোগ নেই।


২৫০টি কওমি মাদ্রসার ও ওলামা মাশায়েখরা আগামী ৭, ৮, ৯ ও ১০ নভেম্বর মৌলভীবাজার মাওলানা সাদের অনুসারীদের ডাকা ইজতেমা আয়োজনের মাঠের একই স্থানে একই তারিখে তাফসিরুল কুরআন মাহফিলের ডাক দিয়েছেন। এ ছাড়াও তারা বিক্ষোভ মিছিল, প্রতিবাদ সমাবেশ ও ইজতেমা মাঠ ঘেড়াও কর্মসূচি দিয়েছেন।
এ বিষয়ে জানতে জেলায় ইজতেমা আয়োজনকারী মাওলানা সাদ পন্থি হিসেবে পরিচিত তাবলীগ জামাতের সূরা সদস্য এ এইচ এম ময়নুল ইসলাম বিকেলে মুঠোফোনে জানান আমরা প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে শৃঙ্খলিত ভাবে ইজতেমার আয়োজন করতে যাচ্ছি। সে লক্ষ্যে মাঠে কাজও চলছে। আমরা কোন দাঙ্গা ফাসাদে জড়াতে চাইনা। আমরা তাদেরও সহযোগিতা চাই। তিনি বলেন মাওলানা সাদকে নিয়ে তারা ভুল বুঝে অহেতুক বিবেধ ও বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছেন। তাছাড়া জেলা পর্যায়ে যে ইজতেমা হবেনা সেটাও ঠিক নয়। কাকরাইলের মার্কাজ মসজিদে এবছর টঙ্গি ও জেলা পর্যায়েও ইজতেমা হবে এই দু’সিন্ধান্তই হয়।
মৌলভীবাজার ইজতেমার বিষয়ে জেলা প্রশাসক মোঃ তোফায়েল ইসলাম বলেন, স্থানীয় ওলামা মাশয়েখদের আপত্তির পূর্বেই আসছে ৭, ৮, ৯ ও ১০ নভেম্বর ইজতেমার করার জন্য অনুমতি দেয়া হয়েছে। অনুমতির পূর্বে পুলিশ রিপোর্ট পেয়ে অনুমতি দেন তিনি। পরে যারা এসেছিলেন তাদেরকেও আমি বলেছি ভিন্ন তারিখে তারাও ইচ্ছে করলে ইজতেমা করতে পারবেন, জেলা প্রশাসন এ বিষয়ে অনুমতি দিবে। উদ্বোধনের বিষয়ে তিনি বলেন গত শুক্রবার ইজতেমা মাঠে জুম্মার নামাজ আদায়ের পর বয়ান শেষে এক দোয়ায় মিলিত হন। উদ্বোধন হয়নি মূলত আগামী ৭, ৮, ৯ ও ১০ নভেম্বর ইজতেমা এর আগে উদ্বোধন হবে।
লিখিত বক্তব্যে আরো বলেন বাংলাদেশ তথা বিশ্বের জমহুর ওলামা মাশায়েখ একমত হয়েছেন যে, তিনটি মৌলিক কারণে :- (১) কোরআন ও হাসিদের মনগড়া ব্যাখ্যা (২) তাবলীগের গুরত্ব বুঝাতে গিয়ে তাবলীগ ব্যতীত দ্বীনের অন্যান্য মেহনতকে যথা দ্বীনি শিক্ষা ও তাসাওফ ইত্যাদিকে হেয় প্রতিপন্ন করা (৩) পূর্ববর্তী তিন হজরতজি (হযরত মাওলানা ইলিয়াছ (র:), হযরত মাওলানা ইউসুফ (র:) ও হযরত মাওলানা এনামুল হাসান (র:) এর উসুল ও কর্মপন্থা থেকে সরে যাওয়ার কারণে বর্তমানে মাওলানা সাদ সাহেবকে অনুসরণ করা সম্পূর্ণ বর্জনীয় ও নিষিদ্ধ।
জেলা ইজতেমা হলে ধর্মীয় ব্যাপারে মাওলানা সাদ সাহেবের ভ্রান্ত আকিদা বিশ্বাস এবং দৃষ্টিভঙ্গিও প্রচার হবে। যা কোন ভাবেই হতে দেয়া যায় না।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, জেলা ওলামা পরিষদের সহ-সভাপতি মাওলানা সামছুদ্দোহা, মাওঃ জামিল আহমদ, মুজাহিদুল ইসলাম, হাবিবুর রহমান, মাও ঃ রশিদ আহমদ, ফারুক আহমদ ও হাফেজ সুলাইমান আহমদ প্রমুখ। এছাড়াও জেলর বিভিন্ন মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল ও আলেমরা উপস্থিত ছিলেন।

সংবাদটি শেয়ার করতে নিচের “আপনার প্রিয় শেয়ার বাটনটিতে ক্লিক করুন”

মন্তব্য করুন

Social Media Auto Publish Powered By : XYZScripts.com