(ভিডিও সহ) কুদালীছড়া পুন খনন কাজের উদ্বোধন : কাজ ভাল না হলে “যাহা লাউ তাহাই কদু” হবে-জেলা প্রশাসক

January 17, 2018,

আশরাফ আলী॥ বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএডিসি) সিলেট বিভাগ ক্ষুদ্রসেচ প্রকল্প এর বাস্তবায়নে কুদালীছড়া খাল-২ কিলোমিটার পুন:খনন কাজের উদ্বোধন হয়েছে।
বুধবার ১৭ জানুয়ারী দুপুরে জগন্নাথপুর উপশহর মাঠে সদর উপজেলা চেয়ারম্যান মিজানুর রহমানের সভাপতিত্বে ও কাউন্সিলর আয়াছ আহমদের পরিচালনায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা প্রশাসক মোঃ তোফায়েল ইসলাম। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন পৌর মেয়র ফজলুর রহমান, সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ মনিরুজ্জামান, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান শাহীন রহমান, বিএডিসির সহকারী প্রকৌশলী মোহাম্মদ আরিফুল হক, মোস্তফাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান তাজুল ইসলাম তাজ।

এছাড়াও বক্তব্য রাখেন মোস্তফাপুর ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ডের সদস্য ওয়াছির মিয়া, ৩নং ওয়ার্ডের সদস্য শহীদুল ইসলাম। 

উপস্থিত ছিলেন পৌর প্যানেল মেয়র ফয়সল আহমদ, চাঁদনীঘাট ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন বাদশা প্রমুখ।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক তোফায়েল ইসলাম বলেন, মাঠিগুলা যা খনন করা হয় সেগুলা যেন দুই পাশে সুন্দরভাবে ড্রেসিং করা হয়। ড্রেসিং যদি সুন্দরভাবে না করা হয় তাহলে সেই মাটিই আবার গর্তে যাবে। যাহা লাউ তাহাই কদু হবে। কাজের কাজ কিছুই হবে না। আমরা যতটুকু কাজ করব তা সুন্দরভাবে করব।
এসময় তিনি আরোও বলেন, কুদালীছড়ায় যারা বাঁধ দেয় তাদের বিরোদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।বিশেষ অতিথির বক্তব্যে পৌর মেয়র ফজলুর রহমান বলেন, মৌলভীবাজারে কুদালীছড়ার মাধ্যমে পৌরসভা, মোস্তফাপুর ইউনিয়ন, রহিমপুর ইউনিয়ন, গিয়াসনগর ইউনিয়ন, নাজিরাবাদ ইউনিয়নের পানি প্রবাহিত হয়। কুদালীছড়া দীর্ঘদিন যাবত খনন করা না হওয়ার কারণে ভরাট হয়ে গেছে।

এই ভরাটের কারণে মৌলভীবাজার শহর সহ কয়েকটি ইউনিয়নে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। ফলে মানুষের ফসল নষ্ট হয়ে যায়। এই খননের কাজ সম্পন্ন হলে আশা রাখি মৌলভীবাজার শহরে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হবে না। তিনি আরোও বলেন, ছড়ার দুই দিকে দু’টি রাস্তা হলে এ ছড়াটি লেইকের মতো হতে পারে। খালটি খননের ফলে ইউনিয়ন ও পৌর শহরবাসী জলাবদ্ধতার হাত থেকে মুক্তি পাবে।
সভাপতির বক্তবে সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বলেন, গত বছর কুদালীছড়া সাড়ে ৫ কিলোমিটার খনন করার ফলে জলাবদ্ধতার নিরসন হয়েছে। এর আগে শহরে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হত। পানি সঠিকভাবে নিষ্কাশন হতো না। কুদালীছড়া খনন করার পর গত বছর প্রচুর বৃষ্টি হলেও ১০-১৫ মিনিটের মধ্যে শহরের পানি নিষ্কাশন হয়ে গেছে। ইতোমধ্যে যা খনন করা হয়েছে তার উপকার ভোগ করছে জনগণ।
মোস্তফাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান তাজুল ইসলাম তাজ বলেন, মোস্তফাপুর ইউনিয়নের অনেক দিনের দাবী ছিল এ খালটি খননের। অনেকদিন পরে এ দাবী বাস্তবায়ন হচ্ছে। কুদালীছড়া খননের ফলে হাওরের ত্রিফসলী ধান উৎপাদন হবে।
তিনি বলেন, কুদালীছড়ার দুই পাশে গাছ লাগানো যায় সেই ব্যবস্থা করতে হবে। আর বাধেঁ ড্রেসিং করা হলে টেকসই হবে।
মোস্তফাপুর ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের সদস্য ওয়াছির মিয়া বলেন, দীর্ঘদিন ধরে কুদালীছড়া খননের কাজ করার জন্য বড় বড় মিটিং করা হয়। কাজের কাজ কিছুই হয় না। এখন হুনছি ৪০ফুট পাশ আর ১০ গভীর ও দুইটা পাড় হবে। কিন্তু কাজের সময় দেখা যায় ৪০ ফুট তো দূরের কথা অর্ধেক কাজ হয় না।
তিনি বলেন, কুদালীছড়া খনন না হওয়ার কারণে কাঞ্জার হাওরের কৃষকদের ফসল নষ্ট হয়ে যায়। অনেক সময় কাজ শুরু হলেও অর্ধেক হয়, অর্ধেক হয় না।
বিএডিসির উপ-সহকারী প্রকৌশলী আতিকুর রহমান জানান, কুদালীছড়া পুন:খননে ২ ভাগে কাজ করা হবে মোট ৪ কিলোমিটার। দুটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান দু’কিলোমিটার করে কাজ করবে। ৪কিলোমিটার কাজে মোট ব্যয় হচ্ছে ৪৬ লক্ষ টাকা। বর্তমানে কাজ হবে দু’কিলোমিটার। এতে ব্যয় হবে ২৩ লক্ষ টাকা। এ দু’কিলোমিটারের কাজ করবে হবিগঞ্জের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মের্সাস চৌধুরী এন্টার প্রাইজ।
তিনি আরোও বলেন, কুদালীছড়া পুন: খননের মূল লক্ষ হচ্ছে পানি নিষ্কাশন। ছড়া খনন হবে গভীরে ১০ ফুট এবং প্রস্থে ৪০ফুট। ছড়ার দু’পাশে তৈরী করা হবে বাঁধ। পরিকল্পনা রয়েছে ছড়ার দু’বাঁধের উপর গাছ লাগানোর। আগামী জুনের মধ্যে পুন:খননের কাজ শেষ হবার কথা রয়েছে।

 

সংবাদটি শেয়ার করতে নিচের “আপনার প্রিয় শেয়ার বাটনটিতে ক্লিক করুন”

মন্তব্য করুন

Social Media Auto Publish Powered By : XYZScripts.com