(ভিডিও সহ) রাজনগরের আলোচিত ইউপি চেয়ারম্যান গ্রেপ্তারের পর ফেসবুক লাইভ, জেলা জুড়ে তোলপাড়
স্টাফ রিপোর্টার : পুলিশ হেফাজতে থাকাবস্থায় ফেসবুকে লাইভে এসে বির্তকের জন্মদেন এক ইউপি চেয়ারম্যান। তার এমন কর্মকান্ডে এখন জেলা জুড়ে চলছে তোলপাড়। এই ঘটনায় সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশের কর্তব্য ও পেশাদারিত্ব নিয়ে চলছে নানা সমালোচনা। প্রশ্ন উঠেছে ওই ইউপি চেয়ারম্যানের নানা অপকর্ম ঢাকতে খুটির জোর ও নেপথ্যে মদদ দাতাদের নিয়ে।
জানা যায় জেলা জুড়ে চিনি চোরাচালানি, নানা অপকর্ম ও অবৈধ বালু উত্তোলন চক্রের হোতা রাজনগর উপজেলার কামারচাক ইউপি চেয়ারম্যান ও অলিলা গ্রুপের এমডি সাবেক এমপি মোহাম্মদ জিল্লুর রহমান এর ছোট ভাই আতাউর রহমান (৪৬) শুক্রবার ১১ অক্টোবর রাতে র্যাবের হাতে আটক হন। এরপর এমন বির্তকের জন্মদেন তিনি। ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে তিনি নিজ এলাকায় নানা অপকর্ম করতেন বলে অভিযোগ ভোক্তভোগী এলাকাবাসীদের।
জানা যায় আতাউর রহমান আওয়ামীলীগের কোনো পদধারী বা সক্রিয় কর্মী না হয়েও জেলা আওয়ামীলীগের নেতৃবৃন্দকে চ্যালেঞ্জ করে ভাগিয়ে নেন দলীয় মনোনয়ন। অভিযোগ উঠে ওই সময়ে বড় অংকের আর্থিক লেনদেনের মাধ্যমে কেন্দ্রীয় নেতাদের ম্যানেজ করতে সক্ষম হয়েছিলেন তিনি। তখন ইউপি চেয়ারম্যানের ওই মনোনয়ন পাওয়া নিয়ে জেলা জুড়ে আওয়ামীলীগ নেতাকর্মীদের মধ্যে সৃষ্টি হয় ক্ষোভ ও বির্তক। শুরুতে এমন ঘটনার জন্ম দিয়ে আলোচনায় আসেন তিনি। এখন আবারও তাকে নিয়ে চলছে নানা আলোচনা সমালোচনা। কারণ গ্রেপ্তার অবস্থায় নিজের ফেসবুক আইডি থেকে লাইভে আসেন।
জানা যায় পলাতক ও আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় শুক্রবার রাত ২টার দিকে জেলার শ্রীমঙ্গল উপজেলার রেলক্রসিং এলাকায় অভিযান চালিয়ে আতাউরকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। গ্রেপ্তারের প্রায় ১০ ঘন্টা পর থানা হাজতে পুলিশ হেফাজতে থেকে শনিবার দুপুর ১২টার দিকে ফেসবুক লাইভে আসেন তিনি। এই ঘটনা জানাজানি হলে বিস্মিত হন জেলার সর্বস্থরের সচেতন মহল। পুলিশের এমন কর্মকান্ডে হতবাক সবাই। চলছে বিতর্কিত এই ঘটনার নেপথ্যের চুলচেরা বিশ্লেষন।
স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন আতাউরের ভাই সাবেক এমপি মোহাম্মদ জিল্লুর রহমানের সাথে স্বৈচারী সরকারের তৎকালিন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, পুলিশের আইজিপিসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের সাথে দহরম মহরম ও সৌখতা ছিলো সে সুবাধে এখনো প্রভাব দেখাচ্ছেন কি না এমন প্রশ্নও তুলছেন অনেকে। এবিষয়ে র্যাব জানিয়েছে ওই দিন সকালেই তাকে গ্রেপ্তারের পর থানায় হস্তান্তর করা হয়।
র্যাবের হাতে গ্রেপ্তার হওয়া আতাউর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে নিজের আইডিতে লাইভে এসে গ্রেপ্তারের বিষয়টি জানিয়ে নিজেকে ওই মামলাগুতো নির্দোষ থাকার কথা জানিয়ে কামারচাক ইউনিয়নবাসীর কাছে দোয়া চান। তিনি নিজ ইউনিয়ন ছাড়েননি বলেই গ্রেপ্তার হন বলে জানান। ভাইরাল হওয়া ওই ভিডিওটি মৌলভীবাজার মডেল থানার একটি কক্ষে ধারণ করা হয়। অবশ্য কয়েক ঘণ্টাপর ওই ভিডিওটি আর তার আইডিতে পাওয়া যায়নি। আতাউর রহমানের আওয়ামী লীগে কোনো পদ-পদবী না থাকলেও আওয়ামী লীগের মনোনয়নে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। তিনি মৌলভীবাজার-৩ (সদর-রাজনগর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মো. জিল্লুর রহমানের ভাই।
গোপনসুত্রে ১০ অক্টোবর রাতে আতাউর রহমানের গুদাম থেকে ভারত থেকে অবৈধভাবে আনা ২৩১ বস্তা চিনি পাওয়া যায়। ওই ঘটনায় তার নামে রাজনগর থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা দায়ের করা হয়।
এবিষয়ে মৌলভীবাজার মডেল থানার ওসি গাজী মো. মাহবুবুর রহমান র্যাবের হাতে ইউপি চেয়ারম্যান আতাউর রহমান গ্রেপ্তার হওয়ার পর থানায় হস্তান্তরের কথা স্বীকার করে জানান পুলিশ হেফাজতে ফেসবুক লাইভের বিষয়টি তার জনা নেই। ওই ভিডিওটি পূর্বের হতে পারে। তবে বিষয়টি তিনি খতিয়ে দেখছেন।
র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) ৯ শ্রীমঙ্গল ক্যাম্পের মিডিয়া উংয়ের দায়িত্ব্প্রাপ্ত সংশ্লিষ্টরা মুঠোফোন জানান গ্রেপ্তারকৃত ইউপি চেয়ারম্যান আতাউর রহমানকে শুক্রবার রাতেই মৌলভীবাজার মডেল থানায় হস্তান্তর করা হয়। সে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মামলার এজাহারভুক্ত আসামি।
মন্তব্য করুন