ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের এক যুগ পার ১৭ বছরেও আপন ঠিকানা হয়নি বড়লেখা পৌরসভার
আবদুর রব॥ বড়লেখা পৌরসভা প্রতিষ্ঠার প্রায় ১৭ বছর অতিবাহিত হলেও আজও আপন ঠিকানা খুজে পায়নি ইতিপুর্বে ‘বি’ গ্রেডে উন্নীত এ পৌরসভাটি। প্রতিষ্ঠাকালিন সময় থেকে জেলা পরিষদের জনমিলন কেন্দ্রকে কার্যালয় বানিয়ে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের নাগরিক সেবাদানকারী এ প্রতিষ্ঠানটি কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।
এদিকে প্রায় ১২ বছর পূর্বে পৌর ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হলেও ভুমি সংকটের কারণে ভবন নির্মাণ কাজ আজও শুরু হয়নি। ভবন না থাকায় পৌরসভার সার্বিক কার্যক্রমে ব্যাঘাত ঘটছে। স্থান সংকটে সরকারি কোটি টাকা মূল্যের যানবাহন রাখতে হচ্ছে খোলা আকাশের নিচে। এ ছাড়া রয়েছে তীব্র জনবল সংকট।
বড়লেখা পৌরসভা ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ২০০১ সালের ১৪ জুন ১১ দশমিক ৩০ বর্গ কিলোমিটার এলাকা নিয়ে বড়লেখা পৌরসভা ঘোষিত হয়। সেই সময় জেলা পরিষদের জনমিলন কেন্দ্রকে কার্যালয় বানিয়ে কার্যক্রম শুরু হয়েছিল। সেই জরাজীর্ণ টিনশেডের জনমিলন ভবনটি আজও কার্যালয় হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। ২০০৪ সালে তৎকালিন নির্বাচিত পৌরপিতা আলহাজ আব্দুল মালিক পৌরসভাটিকে ‘সি’ থেকে ‘বি’ গ্রেডে উন্নীত করেন। অপরদিকে ২০০৬ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া বড়লেখা সফরে গিয়ে পৌরসভা ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।
কিন্তু জায়গা সংকটের কারণে এখন পর্যন্ত নিজস্ব পৌরভবন নির্মাণ সম্ভব হয়নি। ১৭ বছরেও আপন একটি ঠিকানা খুঁজে পায়নি বড়লেখা পৌরসভা। পৌরসভায় উল্লেখযোগ্য তেমন কোনো উন্নয়ন হয়নি। পৌরসভার বর্তমান জনসংখ্যা প্রায় ৩০ হাজার। সর্বশেষ ২০১৫ সালের পৌর নির্বাচনে মেয়র নির্বাচিত হন আওয়ামী লীগের প্রার্থী আবুল ইমাম মো. কামরান চৌধুরী।
স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে, ১৯৮০ সালে স্থানীয় বাসিন্দা জফুর আলীর নিকট থেকে ৩০ শতক ভূমি ক্রয় করে জেলা পরিষদ। পরে এই ভূমিতে জেলা পরিষদ জনমিলন কেন্দ্রের ভবন নির্মাণ করে। যা এখনও পৌরসভার কার্যালয় হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। সম্প্রতি ভূমি জরিপের সময় জেলা পরিষদের এ ভূমি জেলা প্রশাসকের নামে রেকর্ডভুক্ত হয়ে যায়। ফলে এ ভূমিতে পৌরসভার জন্য নতুন ভবন নির্মাণ করা নিয়েও জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে।
বড়লেখা পৌরসভার মেয়র আবুল ইমাম মো. কামরান চৌধুরী জানান, ‘জেলা পরিষদের অডিটোরিয়ামে কোনরকমে পৌরসভার কাজ চালানো হচ্ছে। নিজস্ব ভবন না থাকায় বড় সমস্যা হচ্ছে। ভূমি সংক্রান্ত জটিলতায় ভবন নির্মাণ হচ্ছে না। যার কারণে প্রয়োজন থাকা সত্ত্বেও অনেক স্টাফ নিয়োগ দেয়া যাচ্ছে না। সরকারি কোটি টাকা মূল্যের গাড়ি খোলা আকাশের নিচে রাখতে হচ্ছে। বর্তমান ভবনের জায়গাটি সরকার প্রতীকী মূল্যে পৌরসভাকে বুঝিয়ে দিলে ভবন নির্মাণ সম্ভব হবে। ভবন নির্মাণের জন্য ইতিমধ্যে মন্ত্রণালয়ে চিঠি প্রেরণ করা হয়েছে।’
মন্তব্য করুন