মনসুরনগর ইউ.পি স্থানীয় সরকার ব্যবস্থার ক্ষেত্রে মডেল
শংকর দুলাল দেব॥ রাজনগর উপজেলার ৮নং মনসুরনগর ইউনিয়ন পরিষদ স্থানীয় সরকার ব্যবস্থার ক্ষেত্রে এক চমৎকার মডেল। জন প্রতিনিধিদের বর্তমান প্যানেল নির্বাচিত হবার পর থেকে জনসেবা মূলক বিভিন্ন কার্যক্রম সহ ইউনিয়নের সার্বিক পরিস্থিতি এক ইতিবাচক রোপ নিয়েছে বলে স্থানীয় গন্যমান্য ব্যাক্তিরা জানান।
মনসুরনগর ইউপি কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ১৯৬০ সালে প্রতিষ্ঠিত মনসুরনগর ইউনিয়ন পরিষদের অস্থিত্ব বলতে ছিল মাত্র ১৫ শতক জমি এবং এর উপর নির্মিত পুরাতন একটি ভবন। এখানে পরিষদের সভা করার মত কোন সভাকক্ষ ছিলনা। রাস্থাঘাট, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পরিকল্পনা, কৃষি, পল্লী উন্নয়ন, আইন শৃংখলা, স্যানিটেশন, সামাজিক ও পরিবেশ উন্নয়ন, খেলাধূলা, মা ও শিশু উন্নয়ন, পরিষদের ভূমি স্বল্পতা, নথি সংরক্ষন সহ বহু সমস্যায় জর্জরিত ছিল এ ইউনিয়ন।
মনসুরনগর ইউনিয়নের মানুষের নানাবিধ সমস্যা দূরিকরণ ও বিভিন্ন সেবামূলক কার্যক্রম এবং স্থানীয় সরকার ব্যবস্থাকে শক্তিশালী ও কার্যকর করতে রাজনগর উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ মিলন বখতের নেতৃত্বে জন প্রতিনিধিদের বর্তমান প্যানেল নিরলস ভাবে কাজ করে যাচ্ছে। চেয়ারম্যানের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় পরিষদের ভূমি ও ভবন সমস্যা দূর করতে এলাকার দানশীল ব্যাক্তি লেবু মিয়া ও প্রগতি সমাজ কল্যান পরিষদ (প্রসকপ) এর নিকট থেকে বিনামূল্যে ভূমি গ্রহন, সীমানা প্রাচীর নির্মান এবং স্থানীয় সরকার বিভাগের ৮৬ লাখ টাকা প্রাক্কলনে নতুন ইউনিয়ন পরিষদ ভবন নির্মান করা হয়। এছাড়াও ইউনিয়নের কম্পাউন্ডে চেয়ারম্যান মিলন বখত তার পরিষদের মেম্বারদের নিয়ে একটি বিশাল ফলদ বাগান গড়ে তুলেন। যেখানে পেয়ারা, কাঠাল, আম সহ বিভিন্ন ফলের গাছ রয়েছে। ইউনিয়নের সর্বস্তরের মানুষের বিভিন্ন সেবা নিশ্চিত করতে মেম্বারদের নিয়ে নিয়মিত অফিস করছেন। অসহায়, দরিদ্র মানুষের জন্য সরকার প্রদত্ত সকল সুবিধা যথাযথ ভাবে তাদের নিকট পৌছে দিয়ে জনসেবা নিশ্চিত করেছেন। স্থানীয় সরকার ব্যবস্থাকে শক্তিশালী ও কার্যকর করতে ‘স্থানীয় সরকার আইন-২০০৯ এর ৪৫ ধারা’ মোতাবেক বিগত ইউপি নির্বাচনের দুই মাসের মধ্যে ১৩টি ষ্ট্যান্ডিং কমিটি গঠন করা হয়। প্রতিটি কমিটি তাদের নিয়মিত বৈঠক সহ ইউনিয়নের অর্থ ও সংস্থাপন, হিসাব নিরীক্ষা, টেক্স, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পরিকল্পনা, কৃষি, পল্লী উন্নয়ন, আইন শৃংখলা, স্যানিটেশন, সামাজিক ও পরিবেশ উন্নয়ন, খেলাধূলা, মা ও শিশু উন্নয়ন, পাবিারিক বিরোধ মিমাংসা সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে কাজ করে যাচ্ছে। চেয়ারম্যানের পরামর্শে বিভিন্ন কমিটিতে নির্বাচিত নারী সদস্যরাও প্রশংসনীয় ভূমিকা পালন করে যাচ্ছেন। তারা গ্রামের নারী ও শিশুর অধিকার প্রতিষ্ঠায় নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন।
জানাযায়, ২০১৯ সালের এক জড়িপ অনুযায়ী ১৫ বর্গ কিলোমিটার আয়তন বিশিষ্ট মনসুরনগর ইউনিয়নে মোট জনসংখ্যা-৩৭হাজার ৩২৩জন। এর মধ্যে পূরুষ-১৮হাজার৩৯৩জন এবং নারী-১৮হাজার ৯৩০জন। শিক্ষার হার ৬০ ভাগ। ইউনিয়নে মোট রাস্তা ৬০.০৬ কি.মি.। এর মধ্যে পাকা ৪০ কি.মি. এবং আধাপাকা ২০ কি.মি.। মনসুরনগর ইউনিয়নের শোভাবর্ধনে রাস্তার প্রত্যেকটি গুরুত্বপূর্ণ স্থানে স্ট্রীট লাইট স্থাপন করা হয়েছে এবং প্রতিটি রাস্তায় চেয়ারম্যানের উদ্যোগে বৃক্ষরোপন করা হয়েছে।
এব্যাপারে চেয়ারম্যান মিলন বখত জানান, অতীতে কে কি করেছেন সেটা আমার বিবেচ্য নয়। জনগন তাদের সেবা করার জন্য তৃতীয়বারের মতো দায়িত্ব আমাকে দিয়েছেন। আমার সাধ্য অনুযায়ী চেষ্টা করে যাচ্ছি। জনৈক দানশীল এক ব্যাক্তি ও একটি ক্লাবের নিকট থেকে বিনা মূল্যে ৩১ শতক জমি চেয়ে এনেছি। ইউনিয়নে বসার ভাল ব্যবস্থা ছিল না, অনেক চেষ্টা করে নতুন ভবন করেছি। ইউনিয়নের রাস্থাঘাট, ব্রীজ কালভার্ট, শিক্ষা,স্বাস্থ্য, খেলাধূলা, আইন-শৃংখলার উন্নয়ন করেছি। তথ্য সেবার অবাধ সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে এবং গ্রাম আদালত নিয়মিত বসছে। তবে তা সম্ভব হয়েছে ইউনিয়নের সর্বস্তরের মানুষের সহযোগিতার কারণে।
মন্তব্য করুন