মনু নদী সেচ প্রকল্পের ১২ হাজার হেক্টর জমিতে পাউবোর পানি সরবরাহের দাবি
স্টাফ রিপোর্টার॥ মৌলভীবাজার শহর ঘেঁষা মনু নদী সেচ প্রকল্পের অধিনে পাউবো কর্তৃক ১২ হাজার হেক্টর বোরো জমিতে পানি পৌঁছানোর দাবি করছে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড। তবে ৩০৫টি স্লুইচ গেটের প্রায় অনেকগুলো গেইট বিকল থাকায় কৃষকের জমিতে দেরীতে হলেও পানি পৌঁছানো হয়েছে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট বিভাগ।
মনু নদ প্রকল্প বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে সর্ব-বৃহত্তম সেচ ও পানি ব্যবস্থাপনা বিষয়ক প্রকল্প। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মতে প্রতি হেক্টরে ৭ মন ধান ফলন হয়। এরকম ধারবাহিকতা থাকলে এবার ১২ হাজার হেক্টর জমিতে ৮৪ হাজার টন ধান উৎপাদন হবে। যার বাজার মূল্য ২২৬ কোটি ৮০ লাখ টাকার।
এ প্রকল্পের মাধ্যমে মৌলভীবাজার সদর ও রাজনগর উপজেলায় ২২ হাজার ৫৮০ হেক্টর জমিতে সেচ সুবিধা প্রদান করার লক্ষ্যে ১৯৭৫-৭৬ অর্থবছরে কাজটি শুরুর পর এটি সমাপ্ত হয় ১৯৮২-৮৩ অর্থবছরে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, মনূ নদ স্লুইচ গেইট থেকে বোরো চাষাবাদ করা লক্ষ্যে ১৯৮৩ সাল থেকে ৩০৫টি স্লুইচ গেটের মাধ্যমে শুধু রাজনগর উপজেলায় ২শ ও অবশিষ্ট ১শ ৫টি স্লুইচ গেট দিয়ে সদর উপজেলাস্থ কাউয়াদীঘি হাওরে পানি পৌছে সরবরাহ।
রাজনগর উপজেলার ঘরগাঁও গ্রামের কৃষক ফাক্কান মিয়া বলেন, রাজনগর সরকারি কলেজে’র পাশ দিয়ে একটি কেনেল ঘরগাঁও আর অপরটি বিশাইর দোকান হয়ে রক্তা এলাকার হাওরাঞ্চলে চলে গেছে।
তিনি বলেন, ঘরগাঁও এলাকায় দিয়ে যাওয়া কেনেল দিয়ে প্রায় ১ সপ্তাহ ধরে পানি সরবরাহ বন্ধ ছিল। এতে প্রায় ৫০০ কিয়ার জমি চাষাবাদ করতে সমস্যায় পড়েন কৃষকেরা। পাঁচগাঁও ইউনিয়নের সারামপুর গ্রামের কৃষক কুটি মিয়া বলেন, বোরো চষাবাদে কিছুদিন আগে কর্তৃপক্ষ স্লুইচ গেটে কাজ চলছে বলে দেবীপুর,ত্রিভুক, উতাইশা এলাকায় পানি সরবরাহ বন্ধ রাখা হয়।
সপ্তাহ পর বোরো উপযোগী পানি পৌছে দেয়া হয়। তিনি আরও বলেন, প্রতি ৩০ শতক জমি থেকে তারা ফি বাবৎ ১৫ থেকে ২০ টাকা আদায়ের দাবী করছেন। মৌলভীবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহি প্রকৌশলী মোঃ জাবেদ ইকবাল বলেন, ১২ হাজার হেক্টর বোরো জমিতে আমরা পানি সরবরাহ করছি।
তবে পানির চাহিদা বেশি থাকায় সেচ প্রক্রিয়া ব্যাহত হচ্ছে। তিনি বলেন, ৩০৫টি স্লুইচ গেটের অনেকগুলো বিকল থাকায় এসব জমিতে দেরীতে হলেও পানি সরবরাহ করতে পেরেছি। পাউবো প্রকৌশলী বলেন, জমির চাহিদা ও স্লুইচ বিকল’র বিষয়টি আমরা সংশ্লিষ্ট দফতরে জানিয়েছি।
মৌলভীবাজার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর’র উপ-পরিচালক সামছুদ্দিন আহমেদ সোমবার দুপুরে বলেন, মনূ প্রকল্পসহ জেলা জুড়ে ৫৮ হাজার ৭৫০ হেক্টর জমির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। এবার অর্জিত হয়েছে ৫৮ হাজার ৮২০ হেক্টর জমি। গেল বার ৫৭ হাজার হেক্টর বোরো জমিতে চাষাবাদ হয়। এক প্রশ্নের জবাবে উপ-পরিচালক বলেন, এবার সময়মত বৃষ্টিপাত না হলে ক্ষয়ক্ষতির মুখে পড়বেন কৃষকেরা।
মন্তব্য করুন