মনু প্রকল্পে কাসিমপুরে পাম্প স্থাপনে ৪০ কোটি টাকা লুটপাট
স্টাফ রিপোর্টার॥ মৌলভীবাজারে মনু নদী প্রকল্পের কাশিমপুর পাম্প হাউসের মেশিন ও প্যানেল বোর্ড পুনঃস্থাপনে সরকারি বরাদ্দের ৪০ কোটি টাকা লুটপাটের অভিযোগ ওঠেছে।
জানা যায় ওপেন টেন্ডারের পরিবর্তে ডাইরেক্ট প্রকিউরমেন্ট পদ্ধতিতে ৮টি পাম্প পুনঃস্থাপনের কাজ দেখিয়ে এ বিপুল পরিমাণ টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে এমন অভিযোগ মৌলভীবাজারে আলোচনার কেন্দ্র বিন্দুতে পরিণত হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে- মনু প্রকল্পের অভ্যন্তরীণ ওয়াটার লেবেল নিয়ন্ত্রণ কল্পে ১৯৭৬-৭৭ সালে রাজনগর উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়নের কাশিমপুরে কুশিয়ারা নদীর ডান তীর ঘেষে স্থাপিত হয় পাম্পিং প্ল্যান্ট। ওই সময় প্ল্যান্টের ৮টি মেশিন ও প্যানেল বোর্ড স্থাপন করেছিল জার্মানভিত্তিক কেএসবি এবং সিমেন্স কোম্পানি। বর্তমানে এগুলোর কর্মক্ষমতা শতকরা ১৫ থেকে ২০ ভাগে নেমে এসেছে। কয়েক কোটি টাকা ব্যয়ে মেশিনগুলো ওভারহোলিং করা হলেও এর সক্ষমতা পূর্বের ধারণক্ষমতায় ফিরিয়ে আনা সম্ভব হয়নি। ফলে পাউবো কর্তৃপক্ষের উদ্যোগে নতুন পাম্প মেশিন স্থাপনের প্রস্তাব তোলা হয়। এ সংক্রান্ত প্রকল্প অনুমোদনও পায় একনেকে। সে অনুযায়ী নতুন মেশিন ও প্যানেল বোর্ড স্থাপনের জন্য ৮৪ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। প্রকল্পের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার নেতৃত্বে একটি চক্র এ কাজে জড়িত রয়েছে বলে এই বিভাগের দায়িত্বশীল কয়েকজন কর্মকর্তা ও ঠিকাদার নাম প্রকাশ না-করার শর্তে এ তথ্য নিঃশ্চিত করেছেন।
পাউবোর কর্তৃপক্ষ আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বান ছাড়াই ডাইরেক্ট প্রকিউরমেন্ট পদ্ধতিতে কেএসবি কোম্পানির কাছ থেকে ৬৯ কোটি ৮২ লাখ টাকা ব্যয় দেখিয়ে ৮টি পাম্প মেশিন এবং ৮ কোটি ২২ লাখ টাকা ব্যয় দেখিয়ে প্যানেল বোর্ড স্থাপনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
মৌলভীবাজার পানি উন্নয়ন বোডের মেকানিক্যাল সেকশন এ বিষয়ে ডিপিপি প্রস্তুত করে। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন ওঠে।
এমন কি পানি উন্নয়ন বোডের অনেক কর্মকর্তার মধ্যেও নানা গুঞ্জন শুরু হয়। পাম্প মেশিন ও প্যানেল বোর্ড সরবরাহের ক্ষেত্রে কেএসবির দেশীয় এজেন্ট ‘সিগমা’ মুখ্য ভূমিকা পালন করছে বলে অভিযোগ রয়েছে। সিগমার পিরাপিড়িতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ কেএসবির প্রতি দুর্বলতা দেখাচ্ছে। এর ফলে বরাদ্দকৃত অর্থের ৪০ কোটি টাকা বাড়তি ব্যয় হচ্ছে।
সূত্র মতে- কেএসবির চাইতে অধিক ক্ষমতাসম্পন্ন ৮টি পাম্প মেশিন ৩০ কোটি টাকা এবং প্যানেল বোর্ড ৫ কোটি টাকার বিনিময়ে সরবরাহে আগ্রহ ব্যক্ত করে জার্মানভিত্তিক ‘উইলো’, আমেরিকাভিত্তিক ‘রোরপ্রামকা’ এবং অস্ট্রেলিয়াভিত্তিক ‘এন্ডরিজ’ কোম্পানি। কিন্তু এ তিন কোম্পানির কম টাকার কোটেশনে পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষ গুরুত্ব দেননি। এ রহস্যকে ভিত্তি করেই বিপুল পরিমাণ টাকা লুটপাটের অভিযোগ ওঠেছে।
এ বিষয়ে জানতে মৌলভীবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের সুপারেন্টেনডেন্ট ধীরেন নাথের সঙ্গে সোমবার (২৭ জুন) দুপুরে কয়েক দফা তার মুঠো ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
মন্তব্য করুন