মামার বাড়িতে আটক মাকে ফিরে পেতে অবুঝ ভাইবোনের আকুতি
সালেহ আহমদ (স‘লিপক)॥ রাজনগর উপজেলার নন্দিউড়ায় বাবার বাড়ি আটক মাকে ফিরে পাওয়ার আশায় অবুঝ দু’টি শিশু ও স্বামী অপেক্ষার প্রহর গুনছে।
মায়ের স্নেহ থেকে বঞ্চিত হয়ে পিতার আদরে শিশু দু’টি লালন পালন হচ্ছে। আহাজরি করছে মায়ের স্নেহ ভালোবাসার জন্য। সমাজ সামাজিকতার দোহাই দিয়ে সাড়ে ৩ বছর তাদের মাকে মামার বাড়িতে আটকে রাখা হয়েছে।
জানাযায়, নন্দিউড়া গ্রামের মৃত অচিন্ত কুমার সেনের পুত্র নারায়ন সেন একই গ্রামের নির্মাল্য অর্জ্জুন নান্টুর মেয়ে তনুশ্রী অর্জ্জুনের সাথে প্রেম ভালোবাসার সম্পর্ক গড়ে উঠে। ২০১১ সালে কোর্টে এফিডেভিট করে হিন্দু রীতিনীতি মতে মন্দিরে গিয়ে তনুশ্রী সেন মুন ও নারায়ন সেনের বিয়ে হয়।
বিয়ের পরবর্তী সময়ে সমাজ সামাজিকতার দোহাই দিয়ে নির্মাল্য অর্জ্জুন নান্টু ও তার পরিবার এ বিয়ে মেনে নেননি। পরবর্তীতে সাবেক সমাজকল্যাণ মন্ত্রী সৈয়দ মহসীন আলী ও এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের মধ্যস্থতায় বিষয়টি আপোষ মিমাংসা হয়।
সংসারে আসে ফুটফুটে দু’টি সন্তান নবনীতা সেন নোভা ও মহান সেন দেশমুখ্য। পররবর্তীতে ২০২০ সালে নির্মাল্য অর্জ্জুন নান্ট বাড়িতে পূঁজার কথা বলে নিয়ে তনুশ্রী সেন মুনকে আটক করে রাখেন। এ ঘটনার পর নারায়ন সেন এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিসহ অনেক চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন।
নারায়ন সেন জানান, শ^শুরের পরিবারের লোকজন তাকে ও তার দ’’টি ছেলে-মেয়েকে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে স্ত্রীকে দিয়ে তনুশ্রী অর্জ্জুন নাম ব্যবহার করে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজেষ্ট্রেট আদালতে যৌতুক মামলা দায়ে করান।
এই মামলায় নারায়ন সেন নির্দোষভাবে খালাস পান। পরবর্তীতে তারা আবার পারিবারিক আদালতে আলাদাভাবে থাকার অনুমতি চেয়ে মামলা করেন। জারী মামলা নং ৫/২৩।
অন্যদিকে নারায়ন সেন তার ডকুমেন্ট অনুযায়ী স্ত্রীকে তার সংসারে ফেরৎ পাওয়ার জন্য একটি আবেদন করেন। এই মামলায় আদালত তনুশ্রী সেন মুনের পিতা-মাতা সহ উভয় পক্ষকে কাগজপত্র নিয়ে ২৫ জুলাই আদালতে হাজির হওয়ার জন্য আদেশ প্রদান করেন।
নবনীতা সেন নোভা ও মহান সেন দেশমুখ্য কান্না জড়িত কন্ঠে বলে, আমাদের মাকে প্রাণনাশের ভয় দেখিয়ে মামা নিলয় অর্জ্জুনসহ পরিবারের সবাই আটকে রেখেছে। আমরা আর একা থাকতে পারছিনা। আমরা আমাদের মা-বাবার আদর স্নেহ পেতে চাই। আমরা এক সাথে থাকতে চাই।
মা কাছে না থাকায় আমাদের লেখাপড়া সহ আমাদের জীবন নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। আমাদের মাতৃ পরিচয় নিয়ে সংকট দেখা দিয়েছে। আমাদের মার নাম তনুশ্রী সেন মুন।
আমাদের মায়ের সাথে মামা ফোনেও কথা বলতে বা দেখা করতে দেন না। শিশু ভাইবোনের আকুতি- মা তুমি ফিরে আসো।
৫নং রাজনগর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান, নন্দীউড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, রাজনগর উপজেলা চেয়ারম্যান অফিসের প্রত্যায়ন পত্রে দেখাযায়, নারায়ন সেন এর স্ত্রীর নাম তনুশ্রী সেন মুন।
এব্যাপারে নিলয় অর্জ্জুনের সাথে মোবাইল ফোনে কথা বললে, তারা স্বপরিবারে সিলেট আছেন বলে জানান। তনুশ্রী সেন মুনের বিষয়ে কথা বলতে অপারগতা প্রকাশ করেন।
মন্তব্য করুন