মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রতিষ্ঠানিক ইতিহাস বচনায় অগ্রনী ব্যাংক এর এমডি ও সিইও মোহাম্মদ সামস-উল-ইসলামের অগ্রনী ভূমিকাঃ প্রশংসনীয়ঃ অনুকরণীয়

October 5, 2020,

মুজিবুর রহমান মুজিব॥ বাংলা ও বাঙ্গাঁলির হাজার বছরের সংগ্রামী ইতিহাসে একাত্তোরের মহান মুক্তিযুদ্ধ-সসস্ত্র স্বাধীনতা সংগ্রাম একটি গৌরবময় অধ্যায়। একাত্তোর সালের পচিশে মার্চ থেকে ষোলই ডিসেম্বর পর্য্যন্ত প্রবাসী মুজিবনগর সরকার এর অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম এবং প্রধানমন্ত্রী তাজ উদ্দিন আহমদ এর নেতৃত্বে মুক্তি বাহিনী হানাদার পাকিস্তানীবাহিনীর বিরুদ্ধে মরণ পন লড়াই করে চূড়ান্ত বিজয় ছিনিয়ে আনেন। বাঙ্গাঁলি জাতীয়তা বাদী আন্দোলনের মহান জনক, স্বাধীনতার মহান স্থপতি বঙ্গঁবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তখন পাকিস্তানের কারাগারে বন্দি। একাত্তোরের পচিশে মার্চের কাল রাত্রিতে পাক ফৌজি প্রেসিডেন্ট লেঃ জেনারেল আগা মোহাম্মদ ইয়াহিয়া খানের বাঙ্গাঁলি নিধনযজ্ঞ এবং-বাংলা বিরান- পরিকল্পনা “অপারেশন সার্চ লাইট” শুরুর প্রাক্কালে বঙ্গঁবন্ধুকে তাঁর ধানমন্ডির বত্রিশ নম্বরের বাড়ি থেকে খান সেনারা গ্রেপ্তার করে নিয়ে যায়। জলে, স্থলে, আকাশে নয় মাসের রক্তক্ষয়ী লড়াই শেষে হানাদার হায়না বাহিনীকে হার মানতেই হয়। চীন-মার্কিন এর মদদ শেষে ও শেষ রক্ষা হয়নি গণ বিচ্ছিন্ন-গণধিকৃত পাকিস্তান সেনাবাহিনী
এবং প্রাষাদ ষড়যন্ত্রী প্রতিক্রিয়াশীল পাকিস্তান সরকারের। ষোলই ডিসেম্বরের পড়ন্ত শীত বিকেলে ঢাকার ঐতিহাসিক রেসকোর্স ময়দানে মুক্তি ও মিত্র বাহিনীর যৌথ কমান্ড এর কাছে পাক হানাদার বাহিনীর এতদাঞ্চলীয় আঞ্চলিক অধিনায়ক লেঃ জেনারেল আমীর আব্দুল্লাহ খাঁন নিয়াজীর নিঃশর্ত আনুষ্ঠানিক আত্ব সমর্পনের মাধ্যমে বাংলাদেশের সসস্ত্র স্বাধীনতা সংগ্রামের পরি সমাপ্তি ঘটে। এক মাসের মাথায় বাহাত্তোরের দশই জানুয়ারী বাংলাদেশের মহামান্য রাষ্ট্রপতি বঙ্গঁবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করে তাঁর আজীবনের লালিত স্বপ্ন সোনার বাংলা গঠনের লক্ষে সদ্য স্বাধীনতা প্রাপ্ত প্রিয় স্বদেশের দায়িত্ব ভার গ্রহণ করেন। বাংলাদেশের বীর মুক্তিযোদ্ধাদের কল্যান ও পূনর্বাসনে বঙ্গঁবন্ধুর সরকার তেয়াত্তোরের প্রথম বি.সি.এস. স্পেশিয়ালি ব্যাচ, মুক্তিযোদ্ধা কল্যান ষ্ট্রাষ্ট সহ বিভিন্ন কল্যান মূলক কার্য্যক্রম শুরু করলেও পঁচাত্তোরের পনেরোই আগষ্ট তাঁর সরকারের এক ক্ষুদ্রাংশ এবং সেনা বাহিনীর কতেক জুনিওর সেনা কর্ম্মকর্তা তাঁকে তাঁর ধানমন্ডির বত্রিশ নম্বরের বাসভবনে নির্মম ভাবে হত্যা করে। বঙ্গঁবন্ধুর সরকারামলের স্বল্পসময় মুক্তিযোদ্ধাদের কোন পুর্নাঙ্গ তালিকা তৈরী কিংবা সরকারি ভাবে বাংলাদেশের রক্তক্ষয়ী স্বাধীনতা সংগ্রামের কোন পূর্নাঙ্গঁ ইতিহাস রচিত হয় নি। স্বাধীন বাংলাদেশে সরকারের তথ্য মন্ত্রনালয়ের উদ্যোগে দেশের বিশিষ্ট কবি ও সাংবাদিক হাসান হাফিজুর রহমানের সম্পাদনায় ষোল খন্ডে হাজার হাজার পৃষ্ঠার বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধঃ দলিলপত্র নামে যে খন্ডাবলি বেরিয়েছে তাকে স্বাধীনতা যুদ্ধেয় ইতিহাস না বলে দলিল পত্র বলা হয়েছে-যদি ও সেই কমিটিতে দেশের বরন্যে বুদ্ধিজীবী কবি সাংবাদিক লেখক গবেষক ইতিহাসবিদ গণ সম্পৃক্ত ছিলেন। এসব দলিল পত্রের উপর ভিত্তি করে অদ্যাবধি বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের কোন পূর্নাঙ্গঁ ইতিহাস রচিত হয়নি, ব্যক্তিগত ভাবে স্মৃতি কথা এবং প্রাতিষ্ঠানিক ভাবে এই জাতীয় গ্রহ্ণ কোথাও প্রকাশিত হয়েছে বটে। প্রসঙ্গঁত উল্লেখ যোগ্য বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস রচনা করতে হলে প্রথমেই মুক্তিযোদ্ধাদের সংজ্ঞা নির্ধারন এবং তালিকা তৈরী প্রয়োজন। দুঃখ ও দূর্ভাগ্যজনক ভাবে সকল সরকারামলেই পূনাঙ্গঁ তালিকা তৈরীর উদ্যোগ নিলেও এমন মহৎ কমিটি সম্পাদন করা সম্ভব হয়নি। মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মাননীয় মন্ত্রী, বীর মুক্তিযোদ্ধা আ,ক,ম, মোজাম্মেল হক তালিকা তৈরীর ব্যর্থতা স্বীকার করে দূঃখ প্রকাশ করেছেন। অথছ টানা এক দশকাধিক কাল যাবত মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব দানকারী দেশের প্রাচীনতম দল আওয়ামীলীগ ক্ষমতাসীন আছেন। দীর্ঘদিন যাবত মুক্তিযোদ্ধাদের জাতীয় সংগঠন বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিল থেকে উপজেলা কমান্ড কাউন্সিল পর্য্যন্ত নির্বাচিত কমিটি ও সাংগঠনিক কার্য্যক্রম নাই। জেলা পর্য্যায়ে জেলা প্রশাসক সাহেবানরা পদাধিকার বলে জেলা কমান্ডার এর দায়িত্ব পালন করছেন মাত্র। নির্বাচিত নেতা না থাকায় দেশের মুক্তি যোদ্ধা সমাজ অভিভাবকহীন অসহায়। বিব্রত। বিপর্য্যস্থ। দেশব্যাপী এমন বিব্রত কর অবস্থার মাঝে একটি আশা জাগানিয়া ব্যতিক্রমী-মহত কর্ম সম্পাদন করেছেন বাংলাদেশের অগ্রনী ব্যাংক লিমিটেড এর কর্মঠ-কর্মচঞ্চল-কর্মবীর ম্যানেজিং ডাইরেক্টার ও সিইও বিশিষ্ট ব্যাংকার মোহাম্মদ শামস উল ইসলাম। মহান মুক্তিযুদ্ধের বীর সেনানীদের বীরত্বপূর্ণ অবদান ও কৃতিত্বপূর্ণ কার্য্যক্রমকে আগামী প্রজন্মের জন্য, আগামী দিনে জাতীয় পর্য্যায়ে জাতীয় স্বাধীনতা সংগ্রামের পূনাঙ্গঁ ইতিহাস রচনায় তথ্য উপাত্ত হিসাবে ব্যবহারের জন্য প্রকাশ করেছেন-‘অগ্রনী ব্যাংক পরিবার মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি কথা’ সুবিশাল গবেষনা গ্রহ্ণ। ইতিপূর্বে অগ্রনী ব্যাংক এদেশে প্রথমবারের মত ‘বঙ্গঁবন্ধু কর্নার-স্থাপন করে, “বঙ্গঁবন্ধু কর্ণারের স্বপ্ন ভ্রষ্টা ও বাস্তবায়নকারী মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধা অন্ত প্রাণ ব্যতিক্রমী ব্যাংকার মোহাম্মদ শামস উল ইসলাম অগ্রনী ভূমিকা পালন করেছেন। গবেষনা গ্রহ্ণ “অগ্রনী ব্যাংক পরিবার মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি কথা”-র ভূমিকায় ব্যাংক এর এম.ডি.এবং সিইও, এবং এই গ্রহ্ণের মূল পরিকল্পনা কারি জনাব ইসলাম বলেন- “মুক্তিযোদ্ধারা জাতির শ্রেষ্ট সন্তান। তাই প্রত্যেক মুক্তিযোদ্ধার অবদানকে স্বীকৃতি দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের সার্বিক ও সঠিক ইতিহাস সংরক্ষন করলে তাঁদের প্রতি জাতির ঋণ কিছু হলেও লাঘব হবে বলে আমাদের বিশ্বাস। কিন্তু প্রত্যেক মুক্তিযোদ্ধার যাপিত প্রতিটি স্মৃতি রচনা করার কাজটি অত্যন্ত কঠিন। কিন্তু অসম্ভব নয়। প্রত্যেক মুক্তিযোদ্ধাই কোন না কোন প্রতিষ্ঠানে বা সমাজের একটি অংশে অবস্থান করছে।”
স্বাধীনতা উত্তরকালে স্বাধীনতার মহান স্থপতি, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বঙ্গঁবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের হাবিব ব্যাংক লিঃ, কমার্স ব্যাংক লিঃ কে একত্রিভূত করে একটি ব্যাংক এ রূপান্তরিত করতঃ নামাকরন করেন অগ্রনী ব্যাংক লিঃ। বঙ্গঁবন্ধুর নামাকরন সফল ও সার্থক হয়েছে। সাম্প্রতিক কালে বাংলাদেশের ব্যাংক সমূহ কিছু ব্যতিক্রম বাদে অদক্ষতা-দূর্নীতি-ক্ষমতার অপব্যবহার, নিয়োগ বানিজ্য, এবং বিধি বহির্ভূত ভাবে ঋণ বন্টনের নামে অর্থ পাচার ও লুন্ঠন করে বাংলাদেশের ব্যাংকিং ব্যবস্থা ও আর্থীক খাতকে বেহাল করেছেন সেখানে অগ্রনী ব্যাংক সেবায় বিশ্বস্থতায় একটি সম্মান জনক অবস্থানে আছেন। আমেরিকা প্রবাসী ইঞ্জিনিয়ার ফরাসত আলীর নেতৃত্বাধীন এন,আরবি, কমাশিয়াল ব্যাংক বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগে অভিযুক্ত হলে বাংলাদেশ ব্যাংক এন,আর,বি,সি, এর এম.ডি দেওয়ান মুজিবুর রহমানকে বরখাস্থ করেন। বাংলাদেশ ব্যাংক এর এই আদেশে ক্ষুদ্ধ হয়ে বরখাস্থ কৃত এমডি দেওয়ান মুজিবুর রহমান চাকরি ফিরিয়ে পাবার দাবীতে এক রীট পিটিশন দাখিল করলে মহামান্য হাইকোর্ট পূর্ন শুনানী অন্তে বরখাস্থ এম.ডি.র রিট পিটিশন খারিজ করতঃ বাংলাদেশ ব্যাংক এর চাকরির বাতিলাদেশ বহাল রাখেন, সেখানে অগ্রনী ব্যাংক এর এম.ডি. মোঃ শামসুল ইসলাম তাঁর ব্যতিক্রম। এই বিশিষ্ট ব্যাংকার এর কর্ম্মদক্ষতা, দায়িত্ব সচেতনতা ও সততার কারনে সরকার তাঁর চাকরির মেয়াদ শেষে পুনঃ নিয়োগ দিয়েছেন। আনছার ও ভিডিপি ব্যাংক-এ-এম,ডি, হিসাবে তিনি দক্ষতার প্রমাণ দিয়েছিলেন।
অগ্রনী ব্যাংক-এ-বঙ্গঁবন্ধু কর্ণার স্থাপন করে কর্ণার এর স্বপ্ন দ্রষ্টা ও বাস্তবায়ন কারি মোঃ শামসুল ইসলাম এখন এ ক্ষেত্রে অনুকরণীয় ব্যাংকার, বরনীয় ব্যক্তিত্ব। অগ্রনী পরিবারের মুক্তিযোদ্ধাদের ইতিহাস, এই গ্রহ্ণ মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি কথা প্রকাশ করে ব্যাংক, ব্যাংক এর এমডি ও সিইও অগ্রনী ভূমিকাই পালন করলেন। আটশত ষোল পৃষ্ঠার এই বিশাল গবেষনা গ্রহ্ণে মুক্তিযুদ্ধে অংশ গ্রহণ কারি অগ্রনী পরিবারের একশত আটত্রিশজন মুক্তিযোদ্ধার সচিত্র আত্ব কথন ও ইতিহাস স্থান পেয়েছে। মোঃ শামসুল ইসলাম এই গ্রহ্ণে তাঁর ভূমিকায় আত্ব বিশ্বাস ও আত্ব প্রত্যয়ের সাথে যথাযর্থই বলেছিলেন “কাজটি অত্যন্ত কঠিন, কিন্তু অসম্ভব নয়”। অগ্রনী ব্যাংক কর্তৃপক্ষ এমন কঠিন জটিল কার্য্য সম্পাদন করে প্রমাণ করলেন কোন কঠিন কাজই অসম্ভব নয়। এই গ্রহ্ণ মুক্তিযুদ্ধের একটি আকর গ্রহ্ণ হিসাবে বিবেচিত হবে। গ্রহ্ণে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের মূল ইতিহাসের প্রাথমিক পর্য্যায় থেকে চূড়ান্ত পরিণতি ঐতিহাসিক আত্বসমর্পনের সচিত্র ইতিহাসের কথাও কাহিনী, মুক্তিযুদ্ধের প্রধান সেনাপতি, এগারো সেক্টার কমান্ডার, তিন ব্রিগেড কমান্ডার, মুজিব বাহিনীর চার আঞ্চলিক অধিনায়ক, এর সচিত্র ব্যাখ্যা বর্ণনা আছে। গ্রহ্ণ খানি- অগ্রনী ব্যাংক পরিবার মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি কথা হলে ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক এই গ্রহ্ণে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ প্রসঙ্গেঁ প্রাসঙ্গিঁক ও বিষদ আলোচনা আছে।
অগ্রনী-স্মৃতি কথা
বাংলাদেশের ইতিবৃত্ত, বঙ্গঁবন্ধুর সাতই মার্চের ভাষন, এবং সাতশত ঊনসত্তর পৃষ্ঠা থেকে আটশত চার পৃষ্টা পর্য্যন্ত খেতাব প্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা, সাত বীর শ্রেষ্ট এর সচিত্র পরিচিতি স্থান পেয়েছে। গ্রহ্ণে বঙ্গঁবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের ঐতিহাসিক আলোক চিত্র সহ বহু গুরুত্বপূর্ণ আলোক চিত্র স্থান পেয়েছে-যা গ্রহ্ণ খানিকে মুক্তিযুদ্ধের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রাসঙ্গিঁক গ্রহ্ণের মর্য্যাদা দিয়েছে-আকর-গ্রহ্ণ হিসাবে বিবেচিত হয়েছে। গ্রহ্ণখানি প্রথম প্রকাশিত হয়, আগষ্ট উনিশ সালে। গ্রহ্ণ স্বত্ব অগ্রনী ব্যাংক লিঃ এর। প্রকাশক আলা উদ্দিন আল আজাদ, আরবি বাংলা কমিউনিকেশন্স, সারা কমপ্লেক্স ৬৪/৪ নয়াপল্টন, ঢাকা, প্রচ্ছদে- ফিরোজ আহম্মেদ পরিচ্ছন্নতা ও রুচীর পরিচয় দিয়েছেন। বাংলার শ্যামল সবুজ প্রান্তর এবং দেশের জাতীয় পতাকা লাল সবুজের আলোকে ও আদলের প্রচ্ছদ মনলোভা। আকর্ষনীয়। নান্দনিক। দৃষ্টি নন্দন। রং এর বাহার আধিক্য নেই-আবার একেবারে রংহীন ও নয়। বোর্ড বাঁধাই রুচীশিল প্রচ্ছদ গ্রহ্ণখানিকে আকর্ষনীয় ও দৃষ্টি নন্দন করে তুলেছে। ঝকঝকে নির্ভল ছাপার সাদা কাগজের আটশত ষোল পৃষ্টার বিশাল গবেষনা গ্রহ্ণ খানার মূল্যমাত্র এক হাজার টাকা বেশি কিছু নয়, বরং কমই বলা চলে। এমন মূল্যবান ও প্রাসঙ্গিঁক গ্রহ্ণ প্রকাশের জন্য অগ্রনী ব্যাংক, অগ্রনী ব্যাংক এর সুযোগ্য এম.ডি.ও সিইও অর্থনৈতিক মুক্তির সংগ্রামের নিরন্তর সৈনিক মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধা অন্ত প্রাণ, সহজ সরল সাদামনের মানুষ মোাহাম্মদ শামস-উল-ইসলাম দেশ ও জাতির ধন্যবাদ ও প্রশংসা পাবার হকদার-দাবীদার। জনাব ইসলাম এমন মহৎ কর্ম সম্পাদন করে বাংলাদেশের মুক্তিযোদ্ধা সম্প্রদায়-সমাজকে কৃতজ্ঞতা পাশে আবদ্ধ করলেন-ঋণী করলেন। চট্টগ্রাম অঞ্চলের মুজিব বাহিনীর বীর যোদ্ধা আয়ূব খান ব্যাংক ঋণ সাহায্য-সহায়তার আশায় ঘুরতে ঘুরতে, সংশ্লিষ্ট কর্তা ব্যক্তিরা তাঁকে ঘোরাতে ঘোরাতে তিনি মনে কষ্ট পেয়ে অপমানিত হয়ে বাংলা দেশের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা সপীপে ‘ডেথ নোট’ লিখে ঢাকার একটি আবাসিক হোটেলে আত্ব হত্যা করেছিলেন, পরদিন জাতীয় সংবাদ পত্র সমূহে এই মর্মান্তিক মৃত্যো সংবাদ প্রচারিত হলে সমগ্র জাতি-ঢাকা-চট্টগ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা সমাজ স্তাম্বিত, মর্মাহত, শোকাভিভূত হয়েছিলেন কিন্তু কোন কাজের কাজ হয় নি। অথছ ড্রাইবার মোবারক; কেরানী আবজল শত কোটি টাকা এবং বাবু প্রশান্ত কুমার হালদার সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা আত্বসাৎ করে প্রশান্তিতেই আছেন। এ ক্ষেত্রে অগ্রনী ব্যাংক এর এমডি মোহাম্মদ শামস উল ইসলাম একজন ব্যতিক্রমী ব্যক্তিত্ব। তিনি অগ্রনী ব্যাংক-এ-বঙ্গঁবন্ধু কর্নার-স্থাপন করতঃ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য সহজ শর্তে ঋণ প্রাপ্তির ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। অগ্রনী ব্যাংক-এ-এ ক্ষেত্রে-স্পীড মানি-অবৈধ লেনদেন-কিংবা নয় ছয় এর কোন অভিযোগ বদনাম নেই।
মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক এই মূল্যবান গ্রহ্ণের প্রাসঙ্গিঁক ভূমিকায় ব্যাংক এর এম.ডি ও এই গ্রহ্ণের মূল পরিকল্পনাকারি মোহাম্মদ শামস-উল-ইলসাম যথার্যই বলেছেন-“প্রতিটি স্মৃতি রচনা করার কাজটি অত্যন্ত কঠিন, কিন্তু অসম্ভব নয়” এমন অসম্ভবকে সম্ভব করে তিনি দেশ ও জাতির সম্মুখে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাব সবিনয়ে পেশ করেছেন। বলেছেন “প্রত্যেক মুক্তিযোদ্ধাই কোন না কোন প্রতিষ্ঠানে বাসমাজের একটি অংশে অবস্থান করছে। মিঃ ইসলাম এর এই অভিমত সঠিক এবং যুক্তি সঙ্গঁত। বাংলাদেশে বিভিন্ন কর্মজীবী-পেশাজীবীদের সংগঠন রয়েছে। এসব সংগঠন সমূহ অত্যন্ত শক্তিশালী ও সুসংগঠিত। বাংলাদেশের নিবন্ধন কৃত রাজনৈতিক দল সমূহ, বিভিন্ন পেশাজীবীদের মধ্যে আইনজীবীদের মধ্যে আইনজীবী সমিতি বাংলাদেশ বার কাউন্সিল, চিকিৎসকদের সংস্থা বাংলাদেশ মেডিকেল এসোসিয়েশন-বি,এম,এ, সাংবাদিকদের সংস্থা সাংবাদিক সমিতি, সাংবাদিক ইউনিয়ন, প্রেসক্লাব, টি.ভি মালিকদের সংস্থা এ্যটকো, ব্যবসায়ী সমাজের শীর্ষ সংগঠন-এফ,বি,সি,সি,আই,শ্রমিক সমাজের নিজস্ব সংগঠন ট্রেড ইউনিয়ন, পরিবহন, সেক্টারে, বাস-ট্রাক-ঔনার্স এসোসিয়েশন, পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়ন সহ সমাজের প্রত্যেক পেশাজীবী-কর্ম্মজীবীর নিজস্ব সংগঠন-সংস্থা-সমিতি রয়েছে। এই সব সংস্থা ও সমিতি এবং বাংলাদেশের প্রায় অর্ধশত বানিজ্যিক ব্যাংক সমূহ যদি প্রাতিষ্ঠানিক পর্য্যায়ে অগ্রনী ব্যাংক এর মত উদ্যোগ নেন তাহলে আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের গৌরবময় ইতিহাস রচনা কোন কঠিন বা জটিল কাজ নয়। মুক্তিযোদ্ধাদের নিজস্ব জাতীয় সংগঠন বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ-কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিল জেলা ও উপজেলা কমান্ডের নির্বাচন বন্ধ থাকায় দেশের মুক্তিযোদ্ধা সমাজ নেতাহীন-অভিভাবক ছাড়া। সন্তান কমান্ড দেশব্যাপী কার্য্যকর নয়, তারাও কার্য্যকরী ভূমিকা নিতে পারে। স্বাধীনতার মহান স্থপতি বঙ্গঁবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা শেখ হাসিনা বর্তমানে সরকার প্রধান। দেশের মুক্তিযোদ্ধাদের কল্যানে তিনি খুবই আন্তরিক। বিদ্যমান সমস্যা ও সংকট সমাধানে তাঁরই সদয় দৃষ্টি দেয়া উচিত, কারণ এ ছাড়া আর কোন উপায় নাই।
এ বছর স্বাধীনতার অর্ধশত বৎসর পূর্ণ হবে। একাত্তোরের বীরেরা এখন সত্তরোর্ধ-জীবন সায়াহ্ণে। অনেকেই কবরবাসি। সম্প্রতি স্বাধীনতার মহান ঘোষক-স্বাধীন বাংলা ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ এর নেতা শাহ জাহান সিরাজ, সেক্টার কমান্ডার মেজর জেনারেল সি,আর, দত্ত, আবু ওসমান চৌধুরী, গণপরিষদ সদস্য, সি-ইন-সি স্পেশিয়াল ব্যাচ এর বীর যোদ্ধা, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আজিজুর রহমান, ইতিপূর্বে বীরমুক্তিযোদ্ধা সমাজ কল্যান মন্ত্রী সৈয়দ মহসীন আলী ইন্তেকাল করেছেন। “একে একে নিভিছে দেউটি”-যাঁরা আছেন তাঁদের জীবিতাবস্থায় মুক্তিযুদ্ধের তালিকা প্রনয়ন এবং পূর্ণাঙ্গ ইতিহাস রচনার এখনই সময়।
গণতান্ত্রীক সমাজে রাজনৈতিক মত পার্থক্য থাকাটাই স্বাভাবিক। একটি সুখী সম্বৃদ্ধ শোষণহীন গণতান্ত্রীক সমাজ প্রতিষ্টা ছিল মুক্তিযুদ্ধের মূল লক্ষ। সংসদীয় গণতন্ত্র সংসদীয় সংস্কৃতি, সংসদীয় রীতিনীতির চর্চাও ছিল মহান মুক্তি যুদ্ধের মূল চেতনা।
রাজনৈতিক অসহিষ্ণুতার মাঝে ও দেশের সকল রাজনৈতিক দল-মত-মুক্তি যুদ্ধের ব্যাপারে ঐক্যমত-একমত-পোষণ করতঃ জাতীয় ঐক্যমত সৃষ্টি করে মহান মুক্তিযুদ্ধের তালিকা তৈরী ও একটি পূর্নাঙ্গ ইতিহাস রচনায় এখনই সিদ্ধান্ত নেয়া উচিত। অগ্রনী ব্যাংক লিঃ এবং অগ্রনীর পূনঃ নিয়োগ প্রাপ্ত এম.ডি. মানবতাবদি ব্যাংকার মোহাম্মদ শামস-উল-ইসলাম এর “অগ্রনী ব্যাংক পরিবার মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি কথা” গবেষনা ও আকর গ্রহ্ণ হতে পারে একটি অনুকরণীয় উদাহরণ। অনুসরণীয় নমুনা।
দেশ ও জাতি-দেশের বীর মুক্তিযোদ্ধা সমাজকে অগ্রনী ব্যাংক এবং ব্যাংক এর মুক্তিযোদ্ধা অন্তপ্রাণ এম.ডি.মোহাম্মদ সামস-উল-ইসলাম প্রদত্ত উপহার “অগ্রনী ব্যাংক পরিবার মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি কথা-র” বহুল প্রচার এবং এম.ডি. মহোদয় ও সম্পাদক এর সু-স্বাস্থ- দীর্ঘায়ূ ও কল্যান কামনা করি।
[ষাটের দশকের সাংবাদিক। একাত্তোরের মুক্তিযোদ্ধা। স্বাধীনতা উত্তর কালে ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতির অধ্যাপনা-অতঃপর আইনজীবী সিনিওর এডভোকে হাইকোর্ট। সাবেক সভাপতি, মৌলভীবাজার প্রেসক্লাব]

সংবাদটি শেয়ার করতে নিচের “আপনার প্রিয় শেয়ার বাটনটিতে ক্লিক করুন”

মন্তব্য করুন

Social Media Auto Publish Powered By : XYZScripts.com