মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ বুদ্বিজীবি সনদ থেকে বঞ্চিত পরিবার

December 13, 2016,

স্টাফ রিপোর্টার॥ মৌলভীবাজার শহরে প্রদর্শনী হত্যাকান্ড ১৯৭১ সালের উল্লেখ যোগ্য ঘটনা হচ্ছে শহরের মনুব্রীজের হত্যা কান্ড এই হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছিলেন মৌলভীবাজার সদর উপজেলার হিলালপুর গ্রামের হাজী মোঃ আব্দুল মন্নান, হাজী মোঃ উস্তার মিয়া ও সিরাজুল ইসলাম ওরফে কলমদর মিয়া। ১৯৭০ সালের নির্বাচনে তাঁরা তিনজন মিলে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর পক্ষে প্রচার- প্রচারনা করেছিলেন, হানাদারদের অত্যাচারে অত্যাচারিত হিন্দুধর্ম অবলম্বীদের তারা বিভিন্ন ভাবে সহযোগীতা ও মুক্তিযোদ্ধাদেরকে রসদ সরবরাহই ছিল তাদের অপরাধ। জানাগেল মৌলভীবাজার শহরতলীর সোনাপুর গ্রামের তৎকালীন প্রভাবশালী মুসলিমলীগ নেতা হাজী ইনাম উলার চক্ষুশূল হিসেবে গন্য ঘরোয়া গ্রামের প্রসন্ন কুমার রায়ের সাথে ও তাদের ভাল সম্পর্ক ছিল। তাই শহীদ আব্দুল মান্নান ও শহীদ উস্তার মিয়ার নামে হিন্দুদের মালামাল লুটের মিথ্যা অভিযোগ আনা হয়। এই অভিযোগের ভিত্তিতে ১৯৭১ সালের ১২মে শহীদ আব্দুল মান্নান,শহীদ উস্তার মিয়া ও শহীদ সিরাজুল ইসলাম ওরফে কলমদর মিয়াকে তাঁদের বাড়ি থেকে ধরে আনে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী। আরও জানাযায় যখন হানাদার বাহিনী উস্তার মিয়ার বাড়িতে প্রবেশ করেছিল তখনই তাঁর পরিবারের লোকজন তাকে আত্মগোপন করার জন্য বলেছিলেন কিন্তু তিনি তা করেননি। তিনি একটি কথা বলেছিলেন আমি কোন অপরাধ করিনি আ¤্ররিা আমাকে ধরে নিয়ে যাবে কেন? তাছাড়া শহীদ উস্তার মিয়ার আত্মবিশ্বাস ছিল যে তিনি এবং হাজী ইনাম উল্ল্যাহ একসাথে ১৯৬৬সালে মক্কায় হজব্রত পালন করেছিলেন। এসুবাদে হাজ্বী ইনাম উল্ল্যাহ ও শহীদ হাজী উস্তার মিয়ার বেশ ভাল সম্পর্ক ছিল। এই সম্পর্কের উপর ভরসা করে শহীদ হাজ্বী উস্তার মিয়া বাড়ি থেকে সরে যাননি বা আত্মগোপন করেন নি। কিন্তু সব কিছুকে তুচ্ছ করে সেই নিরপরাধ তিনটি মানুষকে রসিদিয়ে হাত বেধে গাড়িতে তুলে নিয়ে যায় হানাদার বাহিনী। আবার ঐ দিন রাতেই ব্রিগেড হেড্-কোয়াটার্স দ্রুত তিন জনের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে মৃত্যুদন্ড কার্যকর করার নির্দেশ দেয়। পরদিন ১৩মে দুপুরে শহীদ হাজী উস্তার মিয়া ও শহীদ সিরাজুল ইসলাম ওরফে কলমদর মিয়াকে দুহাত ও দুচোখ বাধা অবস্থায় শহরের চাঁদনীঘাটস্হ মনুব্রীজের রেলিং এর সাথে বেধেছিল পাকিস্তানী হানাদাররা। পাশাপাশি চারদিক থেকে মানুষ জন এনে মনুব্রিজের উপর জরো করা হয়েছিল।এবং মানুষের ভিতি সঞ্চারের জন্য সেনা কর্মকর্তার নির্দেশ মত শহীদ হাজী উস্তার মিয়া ও শহীদ সিরাজুল ইসলাম ওরফে কলমদর মিয়ার মৃত্যু দন্ড কার্যকর করা হয়।এবং তাদের মৃত্যু নিশ্চিত হবার পর রশি কেটে দুটি লাশ মনু-নদীতে ফেলে দেওয়া হয়।এবং শহীদ হাজী আব্দুল মন্নানকে প্রকাশ্যে হত্যা না করে বর্ষিজোড়ার পাহাড়ে মাটি চাপা দিয়ে হত্যা করা হয়েছিল।শহীদ হাজী আব্দুল মন্নান ছিলেন শহীদ সিরাজুল ইসলাম ওরফে কলমদর মিয়ার বাবা ও শহীদ হাজী উস্তার মিয়া ছিলেন চাচা। শহীদ সিরাজুল ইসলাম ওরফে কলমদর মিয়ার নাতি মৌলভীবাজার জেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জনাব জাকের আহমদ (অপু)”র সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বাংলার ১৬ কোটি মানুষের অভিভাবক আমার প্রাণপ্রিয় নেত্রীর কাছে আমার আকুল আবেদন আমার নানা শহীদ সিরাজুল ইসলাম (কলমদর মিয়া) ও উনার চাচা শহীদ হাজী উস্তার মিয়াকে চাঁদিনী ঘাট মনুব্রীজে এবং আমার নানার বাবা শহীদ হাজী আব্দুল মন্নান কে বর্ষিজোড়ার পাহাড়ে মাটি চাপা দিয়ে হত্যায় যারা সহযোগীতা করেছে, এই বাংলার মাটিতে তাদের বিচার ও পাশাপাশি,শহীদ বুদ্ধিজীবী সনদ সহ চাঁদিনীঘাট ব্রীজের নাম তাদের নামে নাম করণ করার জন্য জোর দাবী জানাচ্ছি।

সংবাদটি শেয়ার করতে নিচের “আপনার প্রিয় শেয়ার বাটনটিতে ক্লিক করুন”

মন্তব্য করুন

Social Media Auto Publish Powered By : XYZScripts.com