মেঘালয় থেকে মৌলভীবাজার হয়ে এ মাসে আরো জ্বালানি তৈল ভারতের ত্রিপুরায় যাবে

September 24, 2016,

স্টাফ রিপোর্টার॥ তৈল ভর্তি ৯টি ট্রাংক লরি ও ১টি গ্যাসবাহী (এলপিজি) লরি ভারতের কৈলাশহরে খালাসের পর খালি অবস্থায় বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে ফেরত না এসে ত্রিপুরা ও আসামে বন্যা ও ভারী বর্ষণে ক্ষতিগ্রস্থ রাস্তা পারি দিয়ে মেঘালয় পৌছায়। ১০ সেপ্টেম্বর জ্বালানি তৈল ভর্তি ১০টি ট্রাংক লরি তামাবিল স্থলবন্দর দিয়ে বিকেল সোয়া ৪ টায় বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে যাত্রা শুরু করে রাত সোয়া ১১ টায় পূনরায় ভারতের ভেতর প্রবেশ করে।
চাতলাপুর কাষ্টমস সুপারেনটেন্ট অবিনাস রায় জানান, চেকপোষ্ট দিয়ে চলতি মাসের ২৪ তারিখ ভারতীয় জ্বালানি তৈল ও গ্যাসবাহী ১৬ টি লরি কৈলাশহর হয়ে ত্রিপুরায় প্রবেশ করবে। প্রতি কিলোমিটারে প্রতিটন ১ টাকা ২ পয়সা হারে শুল্ক পরিশোধের কাগজ জমা দিয়ে জ্বালানি তৈল ভর্তি ১০টি ট্রাংক লরি ভারতে প্রবেশ করে। সকাল ১০টা ৫টা চাতলাপুর কাষ্টমস ও ইমিগ্রেশন চেক পোষ্টে কার্যক্রমের কথা থাকলেও জ্বালানি তৈল ভর্তি লরিকে নিরাপত্তা জনিত কারণে যে কোন সময় কাষ্টমস ও ইমিগ্রেশন কাজ সম্পন্ করা হবে।
মৌলভীবাজার সড়কও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী উৎপল সামন্ত জানান, তামাবিল সীমান্ত চেকপোস্ট থেকে মৌলভীবাজার চৌমুহনা পর্যন্ত ১০৬ কিলোমিটার সড়ক হাইওয়ের মধ্যে পড়েছে ও এর অবকাঠামো ভাল রয়েছে। চৌমুহনা থেকে শমসের নগর পর্যন্ত ১৮ কিলোমিটার সড়কটি হাইওয়ে না হলেও এর অবকাঠামো মজবুত রয়েছে। শমসের নগর থেকে চাতলাপুর সীমান্ত চেকপোস্ট পর্যন্ত ১৬ কিলোমিটার সড়কের অবকাঠামো অপেক্ষাকিত সরু রয়েছে। ১৫ থেকে ২০টন ভাড়ী যান চলাচলের উপযোগী রয়েছে এ সড়ক। সরু সড়ক ব্যবহার করে চাতলাপুর চেকপোস্ট দিয়ে পাথর, সিমেন্ট সহ বিভিন্ন কোম্পানি পণ্য ভারতে এক্সপোর্ট করে আসছে। তেলের লরিতে পাথরের মতো ওজন হয় না। তবে বেশী সংখ্যক গাড়ী চলাচল করলে কিছুটা ক্ষতি হতে পারে।
এদিকে প্রতি কিলোমিটারে প্রতিটন ১ টাকা ২ পয়সা হারে বাংলাদেশ ভারত থেকে যে শুল্ক পাওয়ার কথা অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের অনুমোদন সাপেক্ষে এনবিআর শুল্ককর মওকুফের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে ১৬০টি ট্রাক-লরি তেল ও গ্যাস নিয়ে যাতায়াতের ওপর কোনো ধরনের ফি না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এ ছাড়া ট্রানজিট পণ্য পরিবহনকারী যানবাহনের ওপর প্রযোজ্য শুল্ককরও মওকুফ করার সিদ্ধান্ত নিয়ে আদেশ জারি করেছে এনবিআর।
এডভোকেট মুজিবুর রহমান মুজিব জানান ভারত আমাদের প্রতিবেশী বন্ধু রাষ্ট্র, আমাদের সু-সম্পর্ক ও সৌজন্য বোধ সবসময় রয়েছে তাদের প্রতি। এ দেশের কেউ ট্রানজিট বিরোধী থাকার কথা নয়। ভারী যানবাহন চলাচলের উপযোগী নয় আমাদের এই সড়ক গুলো, যানবাহন চলাচল করলে কম বেশী সড়কের ক্ষতি হবে। সড়ক গুলো ভারী যানবাহন চলাচলের উপযোগী সড়ক নির্মানের দাবী জানান। তবে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) শুল্ক মওকুফের যে আদেশ জারি করেছে তা সঠিক নহে, এটি একটি আত্মজ্ঞাতি সিদ্ধান্ত হয়েছে।
জাতীয় পার্টি নেতা সৈয়দ সাহাব উদ্দিন জানান, ভারতীয় ভারী যানবাহন চলাচলে আমাদের রাস্থার ব্যপক ক্ষতি হবে। আগে আমাদের রাস্থাগুলো ভারী যানবাহন চলাচলের উপযোগী অবকাঠামো তৈরী করে ট্রানজিটের সুবিদে দেয়া উচিৎ ছিল। গাড়ী চলাচলে বাংলাদেশ ভুখন্ড ব্যবহারে ভারত থেকে যে শুল্ক পাওয়ার কথা তা মওকুফ করার বিষয়টি সঠিক সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি। উক্ত শুল্ক আয় থেকে রাস্থার উন্নয়ন করা যেত।
এদিকে পরিবহন শমিক নেতা সেলিম মিয়া জানান, ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের শেরপুর সেতু মেরামতের কারণে ১০ জুন থেকে ১১দিন যানচলাচল বন্ধ করে দেয়া হলে ফেঞ্চুগঞ্জ-রাজনগর-মৌলভীবাজার-শ্রীমঙ্গল ও মিরপুর হলে যান চলাচল করে। ঐ সময়ে সড়কের বিভিন্ন স্থান দেবে খানাখন্দের সৃষ্টি হয়, যা এখনও পুরোপুরি মেরামত করা হয়নি। ১০টি ভারতীয় তেলবাহি লরি সড়ক দিয়ে ভারতে গেছে এতে তেমন ক্ষতি পরিলক্ষিত হচ্ছেনা। তবে ব্যাপক সংখ্যক তেলবাহি লরি চলাচল করলে সড়কের ক্ষতির আশংকা রয়েছে।

সংবাদটি শেয়ার করতে নিচের “আপনার প্রিয় শেয়ার বাটনটিতে ক্লিক করুন”

মন্তব্য করুন

Social Media Auto Publish Powered By : XYZScripts.com