(ভিডিও সহ) মৌলভীবাজারের ভূট্টা প্রদর্শনীর মাঠ দিবস ও সূর্যমুখী চাষের উদ্বুদ্ধকরণ সমাবেশ অনুষ্ঠিত
স্টাফ রিপোর্টার॥ সিলেট অঞ্চলে শস্যের নিবিড়তা বৃদ্ধিকরণ প্রকল্প এর অর্থায়নে ভূট্টা প্রদর্শনীর মাঠ দিবস ১৬ ফেব্রুয়ারি বৃহষ্পতিবার দুপুর ১২টায় মৌলভীবাজার সদর উপজেলার কনকপুর ইউনিয়নের নলদাড়িয়া গ্রামে অনুষ্ঠিত হয়। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, মৌলভীবাজার সদর এর আয়োজনে ভূট্টা প্রদর্শনীর মাঠ দিবস ও সুর্যমুখী চাষের উদ্বুদ্ধকরণ সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক মো. তোফায়েল ইসলাম।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, মৌলভীবাজার এর উপ-পরিচালক মো. শাহাজান এর সভাপতিত্বে ও উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা অবিনাশ দাশ এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন মৌলভীবাজার সদর উপজেলা চেয়ারম্যান মোঃ মিজানুর রহমান, সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আরিফা জহুরা, অতিরিক্ত উপ-পরিচালক (শস্য) সুরজিত চন্দ্র দত্ত, জেলা বীজ প্রত্যয়ন অফিসার কাজী লুৎফুল বারী, কনকপুর ইউপি চেয়ারম্যান রেজাউর রহমান চৌধুরী। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মলয় চন্দ্র দেব, কৃষক বেনু দেবনাথ প্রমুখ।
আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক তোফায়েল ইসলাম বলেন, কৃষি নির্ভরশীল বাংলাদেশ আজ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছে। তাই আজ বাংলাদেশ থেকে বিদেশে অনেক ফসল রপ্তানি হচ্ছে। এজন্য কৃষি বিভাগ নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। তিনি আরো বলেন, উন্নতমানের বীজ ও আধুনিক কলা কৌশল অবলম্বন করে অল্প জমিত কৃষক ভাইদের অধিক ফসল উৎপাদন করতে হবে। তিনি বিষমুক্ত খাদ্য উৎপাদন এবং জমির উর্বরা শক্তি রক্ষার জন্য জৈব সার ব্যবহারের জন্য বলেন।
আলোচনা অনুষ্ঠানের পূর্বে জেলা প্রশাসক মো. তোফায়েল ইসলাম সহ অতিথিবৃন্দ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সহযোগিতায় মৌলভীবাজার সদর উপজেলার নলদাড়িয়া গ্রামের কৃষক টিটু দেবনাথ এর ভূট্টা ও কৃষক সুধাময় দেবনাথের সূর্যমুখী ক্ষেত পরিদর্শন করে এবং সেখানে কিছু সময় কাটান। অতিথিবৃন্দ উদ্বুদ্ধ করণের লক্ষ্যে উপস্থিত কৃষকদের সাথে নিয়ে প্রদশর্নী প্লট পরিদর্শন করেন। এখানে কৃষক টিটু দেবনাথ ৩০ শতক জমিতে ভূট্টা চাষ ও কৃষক সুধাময় দেবনাথ ৪৫ শতক জমিতে সূর্যমুখী চাষ করেন। এই ভূট্টা ও সুর্যমুখী চাষে এলাকার কৃষকদের মাঝে ব্যাপক উৎসাহ লক্ষ্য করা গেছে।
জানা যায়, উচ্চ ফলনশীল ভূট্টার বাম্পার ফলনের কারনে কৃষকদের মাঝে জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। এই ভূট্টার গাছ সহজে ঝড়ে ভেঙ্গে পড়ে না। ফলের রং স্বণের্র মত উজ্বল। প্রতিটি মোচা এক সমান। মোচাটি খোসা দ্বারা আবৃত হওয়ার কারণে বৃষ্টির পানি প্রবেশ করে না। ফলে পঁচে যাওয়ার সম্ভবনা কম। প্রতিটি মোচায় দানার পরিমাণ বেশী তাই ফলনও বেশী। এই হাইব্রিড ভূট্টার কৃষকদের কাছে পরিচয় করে দিতে আমাদের আজকের এই প্রয়াস।
স্বল্প জমিতে, অল্প পরিশ্রমে অন্য ফসলের তুলনায় বেশি লাভ হওয়ায় ও খুব সহজে সূর্যমুখী থেকে ভোজ্য তৈল তৈরি করতে পারায় সূর্যমুখী চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছেন কৃষকেরা। চাষাবাদের ১শ’ দিনের মধ্যেই সূর্যমুখীর বিচি পরিপক্ক হয় এবং আবাদকালে মাত্র ২ বার সেচ দিতে হয়। আবার অনেকেই সূর্যমুখীর বিচি থেকে তৈরি করছেন ভেজাল মুক্ত ভোজ্য তেল । যা দিয়ে পরিবারের সারা বছরের চাহিদা পূরণ করে আয় করছেন বাড়তি টাকা। ‘সূর্যমুখী চাষের খরচ কম, ফলনও ভালো। অন্য আবাদের চেয়ে লাভও বেশি। আবার বাজার থেকে তেল কিনলে ভেজাল থাকে। কিন্তু আমরা নিজেরাও ভেজালমুক্ত তেল তৈরি করে খাই এবং বিক্রিও করি।’
এদিকে জেলার কৃষি বিভাগ বলছে, তাদের সহায়তায় আগামীতে আরো বাড়বে ভূট্টা ও সূর্যমুখীর আবাদ।
মন্তব্য করুন