মৌলভীবাজারের মনু ও ধলাই নদীর ১৫টি স্থানে বাঁধ ভাঙ্গন, তিন শতাধিক গ্রাম প্লাবিত
স্টাফ রিপোর্টার॥ কয়েকদিনের অবিরাম বৃষ্টি ও ভারত থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলে মৌলভীবাজার জেলার মনু ও ধলাই নদীর ১৩টি স্থানে বাঁধ ভেঙ্গে বন্যার পানি প্রবেশ করছে। পৃথকভাবে মনু প্রকল্পের বাঁধের ২টি স্থানে ভাঙ্গন দিয়েছে। বন্যার পানি প্রবেশ করে প্রায় তিন শতাধিক গ্রাম প্লাবিত করেছে। বন্যায় লক্ষাধিক মানুষ পানি বন্ধি রয়েছেন। বন্যার কারণে সিলেটের সাথে ও জেলা সদরের সাথে অন্যান্য উপজেলার সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। অস্বাভাবিক ভাবে ন দীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় জেলা শহরজুরে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
মনু নদীর বাঁধ ভেঙ্গে বন্যার পানি প্রবেশ করছে কুলাউড়া উপজেলার হাজিপুর, মিয়ারপাড়া, চকসালন। রাজনগর উপজেলার খাসপ্রেমনগর, একামধু, আদিনাবাদ, উজিরপুর ও কোনাগাও এলাকা দিয়ে। অপর দিকে ধলাই নদীর বাঁধ ভেঙ্গে কলগঞ্জ উপজেলার ইসলাপুর ইউনিয়নের গংগানগর, মোকাবিল, মাধবপুর ইউনিয়নের হিরামতি, আদমপুর ইউনিয়নের ঘোড়ামারা ও রহিমপুর ইউনিয়নের লক্ষীপুর বন্যার পানি প্রবেশ করছে। এসব এলাকার শতাধিক গ্রামের রাস্তাঘাট ও বাড়ি ঘর পানির নীচে তলিয়ে গেছে। জেলার ৪টি নদী মনু, ধলাই, কুশিয়ারা ও জুড়ী নদীর পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
মৌলভীবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ জাবেদ ইকবাল জানান, বৃহস্পতিবার সকাল সন্ধ্যা ৬টায় মৌলভীবাজার শহরের কাছে মনু নদীর পানি চাঁদনীঘাট পয়েন্টে বিপদসীমার ১১৯ সেন্টিমিটার ও উজানে রেলওয়ে ব্রীজে বিপদসীমার ৭০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ধলাই নদীর পানি বিপদসীমার ২২ সেন্টিমিটার কুশিয়ারা নদী (শেরপুর) ১১ সেন্টিমিটার, জুড়ী নদী ১৯৫ সেন্টিমিটার বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপপরিচালক সামছুদ্দিন আহমদ জানান, আউশ ধানের ক্ষতির পাশাপাশি সদ্য রোপনকৃত ৭ উপজেলায় আমন ধান ও সবজির ক্ষতি হয়েছে। তবে এই মুহুর্থে ক্ষয়ক্ষতির পরিমান নিরুপন করা যায়নি।
জেলা প্রশাসক উর্মি বিনতে সালাম সহ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উর্ধতন কর্মকর্তারা ঝুকিপূর্ণ স্থানগুলো পরিদর্শন করেন। জেলা প্রশাসনের পক্ষে মাইকে প্রচারণা চালানো হয় শহরে বাসা-বাড়ীতে রাতে নীচ তলায় যাতে কেই না থাকেন। পাশাপাশি মালামাল নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেয়ার জন্য বলা হয়।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর মেজর জেনারেল চৌধুরী মোহাম্মদ আজিজুল হক হাজারী, ওএসপি (বার), এসজিপি, এনডিসি, পিএসসি, এমফিল মৌলভীবাজার জেলার বন্যা দূর্গত কয়েকটি এলাকা পরিদর্শন করেন। দূর্যোগপূর্ণ সময়ে সেনাবাহিনী সবসময় জনগনের পাশে অতিথের মতো থাকবে। এসময় তিনি উদ্ধার কাজ, ত্রাণ বিতরণ ও ক্ষতিগ্রস্ত সকল বাঁধ মেরামতের আশ^াশ দেন।
মন্তব্য করুন