(ভিডিওসহ) মৌলভীবাজারের ৪টি আসন : উদ্বেগ উৎকন্ঠা আর বিচ্ছন্ন ঘটনায় কমে যাচ্ছে ভোটার উপস্থিতি
স্টাফ রিপোর্টার॥ মৌলভীবাজার জেলার ৪টি আসনে আতঙ্ক ও উৎকন্ঠার মধ্য দিয়ে সকাল ৮টা থেকে ভোট গ্রহন চলছে। কনকনে শীতের মধ্যে শুরুর দিকে গ্রাম ও শহর এলাকায় পুরুষ ভোটারের চেয়ে মহিলা ভোটারের উপস্থিতি ছিল লক্ষ্যণীয়।
জেলার ৪টি আসনে প্রথম দিকে দুই একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটলেও ২-৩ ঘন্টা শান্তিপূর্ন ভাবেই ভোট চলে। তবে বেলা বাড়ার সাথে সাথে ভোটার উপস্থিতি যেমন কমতে থাকে তেমনি নৌকা প্রতীকের কর্মী সমর্থকরা আইনশৃংখলা বাহিনীর সহযোগিতায় ভোট কেন্দ্র দখলের মহড়া চলার অভিযোগ গণমাধ্যম কর্মীদের কাছে আসতে থাকে। একের পর এক কেন্দ্রে এমন ঝামেলার খবর ছড়িয়ে পড়ায় ভয়ে ভোটারের উপস্থিতিও কমতে থাকে।
জেলার ৪টি আসনে থাকা গণমাধ্যমের কর্মীরা জানান দুপুর সাড়ে ১২ টার পর থেকে বেশির ভাগ ভোট কেন্দ্র গুলো অনেকটাই ভোটারহীন ফাঁকা পড়ে থাকতে দেখা যায়। আর যে দু চারজন ভোট দিতে আসছেন তারাও তড়িগড়ি করে ভোট দিয়ে দ্রুত ভোট কেন্দ্র ত্যাগ করতে চাইছেন।
বিভিন্ন ভোট কেন্দ্রের আশপাশে দাঁড়িয়ে থাকা লোকজন ও ধানের শীষের কর্মী সমর্থকরা মুঠোফোনে গণমাধ্যম কর্মীদের জানান ভোট কেন্দ্র থেকে সরকারদলীয় নৌকার কর্মী সমর্থকরা ধানের শীষের এজেন্টদের জোর খাটিয়ে বের করে দিচ্ছেন। কোথাও জাল ভোট কিংবা ভোট কেন্দ্র দখলের জন্য তারা হামলে পড়ছেন। এই অভিযোগ প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানিয়েও কোন সুফল পাচ্ছেন না। প্রশাসনের সামনেই এমনটি ঘটলেও তারা নিরব ভুমিকা পালন করছেন বলে অভিযোগ করছেন ধানের শীষের কর্মীরা। বড় ধরনের কোন অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটলেও এখন সময় যত যাচ্ছে ভোটে কেন্দ্র গুলোতেও ততই শঙ্কা বাড়ছে। এ পর্যন্ত ৪টি আসনের অর্ধশতাধিক ভোট কেন্দ্রে থেকে ধানের শীষের কর্মী ও সমর্থকরা এমন অভিযোগ জানিয়েছেন।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জেলার ৪টি আসনে আওয়ামীলীগ ও বিএনপি ও অন্যান্য দল মিলে মোট ১৯ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্ধিতা করছেন।
মৌলভীবাজার-২(কুলাউড়া) আসনে ধানের শীষের এজেন্ট মোস্তফা মিয়া নামের এক ব্যাক্তির মৃতদেহ গতরাত সাড়ে ১২টায় কুলাউড়ার কাদিপুর ইউনিয়নের কৌলারশী এলাকায় পাওয়া যায়। নিহত মোস্তফা মিয়া উছাইল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ধানের শীষের নির্বাচনী এজেন্ট ছিলেন বলে জানিয়েছেন ধানের শীষের কর্মী ও সমর্থকরা।
এদিকে মৌলভীবাজার-৩ আসনের নৌকা প্রার্থী জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি নেছার আহমদ গুরারাই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ও এ আসনের ধানের শীষের প্রার্থী ও জেলা বিএনপির সভাপতি এম. নাসের রহমান বাহারমর্দন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভোট দেন।
অপরদিকে মৌলভীবাজার-২ (কুলাউড়া) আসনে ধানের শীষের প্রার্থী ডাকসুর সাবেক ভিপি ও এমপি সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমদ ভোট দিয়েছেন ব্রাহ্মণবাজার ইউনিয়নে তার নিজ গ্রামের গোবিন্দপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে। আর নৌকার প্রার্থী বিকল্প ধারার নেতা এম এম শাহীন ভোট দিয়েছেন কাদিপুর ইউনিয়নের উছাইল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে।
জানা যায় জেলায় সর্বমোট ভোটার ১২ লক্ষ ৯৬ হাজার ৬৭ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৬ লক্ষ ৫১ হাজার ৭৯৫জন এবং নারী ভোটার ৬ লক্ষ ৪৪ হাজার ৮৭৬জন। জেলায় ৫১২টি কেন্দ্রের মধ্যে ১৭৪টি সাধারণ, গুরুতপূর্ণ ১২৬টি, অতি গুরুত্বপূর্ণ ২১২টি কে ধরা হয়েছে। নির্বাহী ম্যাজেস্ট্রেট ২১ জন ও জুডিশিয়াল ম্যাজেস্ট্রেট ৮জন রয়েছেন। এ ছাড়াও স্টাইকিং ফোর্স হিসেবে পুলিশ সদস্য রয়েছেন ১৪০০ জন, র্যাব ৫৬ জন, বিজিবি ৪২০ জন, আনসার ৬১৪৪ জন ও সেনা সদস্য রয়েছেন।
মন্তব্য করুন