(ভিডিওসহ) মৌলভীবাজারে আমন কাটায় ব্যস্ত : শীষে ধানের পরিমান কম, ইঁদুর ও কচুরিপানায় ক্ষতি কৃষকদের দাবী
স্টাফ রিপোর্টার॥ হাইল হাওর ও কাউয়াদীঘি হাওর বেষ্টিত মৌলভীবাজারে অগ্রহায়নের মৌ মৌ হাওয়া বইছে এখন। মাঠে-ঘাটে কৃষক-কৃষাণীদের উপস্থিতে রোপা আমনকে ঘিরে এক অন্য রকম পরিবেশ বইছে এখন। এক সময় জমি থেকে ধান কেটে নিয়ে বাড়ির উঠান কিবা আ্িগনায় গরু-মহিষ দিয়ে মাড়াই’র কাজ করা হত। এখন আধুনিক যন্ত্রপাতি ব্যবহার করে নিমিষেই গোলায় ধান তুলতে পারেন সবাই। তবে এখনো আধুনিক পন্থা ব্যবহার না করে গ্রমীণ এলাকায় আগের মত ধান মাড়াই করতে দেখা যায়।
মৌলভীবাজার সদর ও রাজনগর উপজেলা বেষ্টিত কাউয়াদিঘি হাওর পাড়ের পুকুরিয়া বিল এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, পাঁকা জমির ধান টাকা দিয়ে চুক্তি করে কাটাচ্ছেন কৃষকেরা। কাটার কাজ শেষ হলে ধানের গোছা একত্রিত করে ঠেলা গাড়ি দিয়ে বাড়ি নিয়ে উপযোগী করে তুলছেন। প্রতি কিয়ার ধান কাটতে ৪/৫শ টাকা দিতে হয় কৃষকদের। আবার মাড়াই করতে হলে প্রতি ২০ বস্তা ধানে ১বস্তা দিতে হয় মাড়াইকারীদের। কৃষকেরা জানান, ধানের বীজ থেকে শুরু করে চারা রোপণ,সার প্রয়োগ ও ধান কেটে বাড়ি আনতে প্রতি কিয়ারে তাদের ৫ হাজার টাকার মত খরচ হয়। কিন্তু হিসেবে নিকেশ করে ৯ হাজার টাকার ধান সগ্রহ করেন। এতে তারা তেমন একটা লাভমান হন না। শুধু নিজের ক্ষেতের মায়ায় এসব ধান রোপণ করেন তারা।
রাজনগর উপজেলার কাউয়াদিঘী হাওর এলাকার পুকুরিয়া বিল পাড়ের সুনামপুর গ্রামের কৃষক জাকারিয়া বলেন, এবার ধান ভাল হয়েছে। তবে শীষে ধানের পরিমান কম। উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়নের শাহাপুর গ্রামের জাকির হোসেন বলেন, হাওর পাড়ের ঘাগটিবিল ও গোয়ালী বিলের পাশে ২ থেকে আড়াইশো কিয়ার আমান চাষবাদ হয়েছিল। ৭০ থেকে ৮০ শতাশ জমির ধান ইদুঁর কেটে শেষ করেছে। আমন অথবা বোরো ধান চাষাবাধে বর্তনানে ইঁদুর ও কচুরীপানা একটা বড় ফ্যাক্টর হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই শতভাগ ধান তুলতে হলে হাওর থেকে ইঁদুর কে যে কোন মূল্যে হঠাতে হবে।
মনু প্রকল্পের আওতাধীন মৌলভীবাজার সদর ও রাজনগর উপজেলায় এবার প্রায় ১১ হাজার হেক্টর জমিতে রোপা আমন চাষাবাদ হয়েছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানিয়েছে, এবার মৌলভীবাজার জেলায় ১ লাখ ১ হাজার ৪শ হেক্টর জমিতে রূপা আমন চাষাবাদ হয়েছে। যার লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১ লাখ ৪শ হেক্টর। সব মিলিয়ে জেলায় এবার লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১২শ ৮০ হেক্টর বেশি জমি আবাদ হয়েছে। মৌলভীবাজার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ লুৎফুল বারী বলেন, শুধু কাউয়াদীঘী ও তৎসংলগ্ন মনূ প্রকল্পে ১১ হাজার হেক্টর জমিতে আমন চাষ হয়। এবার ৬শ হেক্টর বেশি জমি আবাদ হয়েছে মনূ প্রকল্পে। মনূ প্রকল্পে ৫২ হাজার ৯শ মে.টন ধান পাওয়া যাবে এবার।
মন্তব্য করুন