মৌলভীবাজারে লোকনাথ ব্রহ্মচারীর তিরোধান মহোৎসবকে ঘিরে বসেছে রকমারি মেলা
সালেহ আহমদ (স’লিপক)॥ মৌলভীবাজারে ৬ দিনব্যাপী ত্রিকালদর্শী ব্রহ্মজ্ঞ মহাপুরুষ শিবকল্প শ্রীশ্রী লোকনাথ ব্রহ্মচারীর ১৩৪তম তিরোধান মহোৎসব ও হরিনাম সংকীর্তন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। চলবে বৃহস্পতিবার ৬ জুন পর্যন্ত। তিরোধান মহোৎসব ও হরিনাম সংকীর্তনকে উপলক্ষ করে বসেছে জমজমাট রকমারি মেলা।
সোমবার ৩ জুন সন্ধ্যায় মৌলভীবাজার পৌরসভার সৈয়ারপুরস্থ শ্রীশ্রী লোকনাথ সেবাশ্রমে শ্রীশ্রী লোকনাথ সেবা সংঘের আয়োজনে ও ১৩৪তম তিরোধান উৎসব উদযাপন কমিটির পরিচালনায় তিরোধান মহোৎসব ও হরিনাম সংকীর্তনকে উপলক্ষ করে অনুষ্ঠিত মেলা প্রাঙ্গণ সরজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বহুসংখ্যক দোকানীরা মেলায় বেচাবিক্রির জন্য নানা রঙের পণ্য সাজিয়ে বসেছে।
বেলা গড়িয়ে সন্ধ্যা হতেই মেলায় দর্শনার্থীর সংখ্যা বাড়তে থাকে। শুরু হয় দোকানীদের বেচা-বিক্রির ধুম। ছোটদের খেলনা, মেয়েদের চুড়ি, কিশোর যুবাদের হরেক রকমের গাড়ি, বাঁশি, বড়দের জন্য রান্নাবান্নার তৈজসপত্র এবং হিন্দু সনাতন ধর্মালম্বীগণের যজ্ঞ ও আরাধনায় ব্যবহৃত বিভিন্ন দ্রব্যাদির সারিসারি দোকান বসেছে। তাছাড়াও বাতাসা, খৈ, মুড়িমুড়কি, মিষ্টান্ন, চা-পান, বাদাম, চানাচুর, ঝালমুড়ি, ফুসকা-চটপটির দোকানীদেরকেও বেচা বিক্রি নিয়ে ব্যস্ত দেখা গেছে।
মেলায় বিভিন্ন রং-বেরঙের বেলুন বিক্রেতা ইমান আলীর সাথে কথা হলে তিনি জানান, আমি নিয়মিত পশ্চিমবাজার এলাকায় বেলুন বিক্রি করি। শহরের আশপাশে মেলা বা বিভিন্ন অনুষ্ঠান হলে আমি যাই। এই মেলাতে প্রথমদিন থেকেই আসছি। এবার অন্য বছরের চেয়ে বিক্রি একটু কম হচ্ছে।
বেশ কয়েকজন দোকানীর সাথে আলাপকালে তারা জানান, এবার বেচাবিক্রি কম। বিরূপ আবহাওয়া ও মেঘবৃষ্টির কারণে মেলায় অবস্থানে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। তবুও আগত দর্শনার্থীরা সাধ্যানুযায়ী তাদের প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি ক্রয় করে নিচ্ছেন।
স্থানীয় বাসিন্দা ও দৈনিক ডেসটিনি পত্রিকার মৌলভীবাজার প্রতিনিধি রিপন কান্তি ধর (রূপক) বলেন, উৎসব উপলক্ষে সৈয়ারপুর ও আশপাশ এলাকার হিন্দু সনাতন বাসাবাড়িতে মেয়েজামাই এর আগমন ঘটে। দূরদুরান্ত থেকে নিমন্ত্রিত অতিথিদের ভীড়ে বাসাবাড়ি হয়ে উঠে সরগম। এসময় সনাতন ধর্মাবলম্বী সব বাসাবাড়িতে নাড়ু, মুড়ি মুরকি এবং বিশেষ মাছ মাংস সহ উন্নত খাবার আয়োজন থাকে। এই উৎসবকে ঘিরে সপ্তাহব্যাপী সব বয়সের মানুষজন এক অন্যরকম অনাবিল আনন্দে মেতে ওঠেন।
১৩৪তম তিরোধান উৎসব উদযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক রিপন দে জানান, ভক্তদের স্নিগ্ধ সুন্দর উপস্থিতি কীর্তনকে প্রাণোবন্ত করে তুলেছে। প্রতিদিন ভক্তদের মাঝে বাল্যভোগ ও রাজভোগের মহাপ্রসাদ বিতরণ করা হচ্ছে। এছাড়াও তিরোধান মহোৎসব ও হরিনাম সংকীর্তনকে ঘিরে উৎসব প্রাঙ্গণে বসা রকমারি মেলা আশপাশ এলাকার হিন্দু-মুসলমানদের কাছে মিলনমেলায় রূপ নিয়েছে। যা সাম্য ও ভাতৃত্বের ভীত মজবুত সেতুবন্ধনে আবদ্ধ করবে বলে মনে করি।
মন্তব্য করুন