মৌলভীবাজারে ১৪ হাজার কোরবানির পশু ঘাটতি, খামারের গরু আকৃষ্ট করছে ক্রেতাদের
ইমাদ উদ দীন॥ পবিত্র ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে কোরবানির পশু নিয়ে প্রস্থুত মৌলভীবাজারের ছোট-বড় প্রায় ৫ হাজার ৩‘শ ৬৯টি খামার। স্থানীয় এসকল খামারে প্রাকৃতিক খাদ্যে বেড়ে উঠা নানা রংয়ের মোটাতাজা দৃষ্টিনন্দন গরু ও ছাগল আকৃষ্ট করছে ক্রেতাদের। ভালো দামের আশায় ও ক্রেতাদের আকৃষ্ট করতে খামারিরা এসব পশু নিবিড়ভাবে পরিচর্যায় এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন। অনেক খামারে অনলাইনে অগ্রীম পশু বিক্রির বুকিং এবং ওজন মেশিন বসিয়ে পশু বিক্রির ব্যবস্থা রেখেছেন। এবছর জেলার মোট চাহিদার মধ্যে ঘাটতি রয়েছে ১৪ হাজার ৭ শত ৩০টি গবাদি পশু। খামারিরা জানালেন গত কয়েক বছরের তোলনায় এবছর খামারিরা বেশ ভালোভাবেই প্রস্তুতি নিচ্ছেন। খামারে ১৫০ কেজি থেকে প্রায় ৭০০ কেজি ওজনের কোরবানির পশু প্রস্তুত রাখা হয়েছে। পশুর আকার ভেদে খামারীরা মূল্য ওজেনে প্রতি কেজি ৪৫০ টাকা থেকে ৫৫০ নির্ধারণ করে বিক্রি করছেন। এছাড়াও বড় গরুগুলো এককালিন দরেও বিক্রি করছেন। খামারিরা জানান বাজারে গো-খাদ্যের দাম বেড়ে যাওয়া ও শ্রমিক মজুরী কয়েকগুণ বেড়ে যাওয়ায় বেকায়দায় পড়েছেন তারা। এবছর ভালো দাম পাওয়া নিয়ে খামারিরা আশাবাদি হলেও রয়েছে নানা উদ্বেগ উৎকন্ঠা।
তারা ভারতসহ পাশর্^বর্তী দেশগুলো থেকে যাতে চোরাই পথে গরু না আসে সে বিষয়ে সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগের প্রতি জোর দাবি জানান। জেলার অন্যতম গরুর খামার মালিকপুর এগ্রো ফার্র্ম, মৌলভীবাজার এর স্বত্বাধিকারি তরুণ উদ্যোক্তা ও বিশিষ্ট ব্যবসায়ী সুহাদ আহমদ,আরিয়ান ডেইরি ফার্ম,মৌলভীবাজার এর স্বত্বাধিকারি সৈয়দ ফয়ছল আহমদ ও মমরুজপুর আসিয়া এগ্রো ফার্ম মৌলভীবাজার এর স্বত্ত্বাধিকারি মোঃ রাফাত চৌধুরীসহ খামারিরা জানান তারা সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক পদ্ধতিতে পশু লালন পালন করে এবছর কোরবানীর উপযুক্ত করেছেন।
খামারগুলোতে খাওয়ানো হচ্ছে ধানের কুড়া, খৈল, গমের ভুসি ও সবুজ ঘাস ইত্যাদি। এসকল তরুণ উদ্যোক্তা খামারিরা মনে করেন সরকারিভাবে পৃষ্ঠপোষকতা পেলে আরও বড় পরিসরে খামার গড়ে উঠবে। নতুন উদ্দ্যোক্তা সৃষ্টি হবে এবং সারা বছর জুড়ে মাংসের চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি বেকারত্ব দূরীকরনে কার্যকর ভূমিকা রাখবে খামারগুলো। জেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগ জানায় বাজারে সুস্থ পশু বিক্রির জন্য প্রাণি সম্পদ বিভাগ প্রচাণার পাশাপাশি জেলায় ২৩টি মেডিক্যাল টিম গঠন করেছে। তারা জেলার ২১ টি স্থায়ী হাটসহ অন্যান্য অস্থায়ী হাটেও তাদের মনিটরিং কার্যক্রম জোরদার রাখবেন।
এবছর জেলায় কোরবানির পশুর মোট চাহিদা রয়েছে ৯৮ হাজার ৪শত ৪২টি। স্থানীয় খামারিদের কাছে ৮৪ হাজার ৮’শত ১২টি কোরবানির পশু মজুত রয়েছে। ঘাটতি রয়েছে ১৪ হাজার ৭শত ৩০টি গবাদি পশু। জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. আশরাফুল আলম খান বলেন ঘাটতি যেগুলো রয়েছে সেগুলোকে ঘাটতি বলা যাবে না। কারণ কোরবানির জন্য যে ঘাটতি রয়েছে তা ব্যক্তিগতভাবে লালন পালন করা গবাদি পশু দ্বারা পূরণ করা হবে। এগুলো খামারের হিসাবে আসেনী। ঈদকে সামনে রেখে সীমান্ত দিয়ে যাতে অবৈধভাবে গরু প্রবেশ করতে না পারে তার জন্য ইতোমধ্যে মন্ত্রণালয়সহ জেলার সর্বোচ্চ পর্যায়ে বৈঠক হয়েছে। ওই বৈঠকে সীমান্ত দিয়ে ভারতসহ পাশ^বর্তী দেশের গরু যাতে প্রবেশ করতে না পারে তা নিশ্চিতে কার্যক্রর ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে।
মন্তব্য করুন