(ভিডিওসহ) মৌলভীবাজার জেলা পুলিশ চারটি প্রাইভেট কার উদ্ধার সহ বেশ কয়েকটি চাঞ্চল্যকর মামলার রহস্য উদঘাটন
স্টাফ রিপোর্টার॥ মৌলভীবাজার জেলা পুলিশ গত কয়েকদিনে চাঞ্চল্যকর গণধর্ষন, হত্যা, পর্নোগ্রাফী, মানব পাচার মামলার রহস্য উদঘাটন, মোটরসাইকেল ও চারটি প্রাইভেট কার উদ্ধার সহ বেশ কিছু উল্লেখযোগ্য সাফল্য অর্জন করেছে।
২৩ ফেব্রুয়ারি দূপুরে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাকারিয়া সংবাদ সম্মেলন করে জানান, শ্রীমঙ্গল পুলিশ বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে মাইজদী এলাকাস্থ শেখবাড়ী মাদ্রাসার সম্মুখ থেকে ১৯ ফেব্রুয়ারি রাতে ১টি লাল রঙের প্রোবক্স চোরাই গাড়ি রেজিষ্ট্রেশন নং-চট্ট মেট্রো-গ-১১-৭৮৪৬ সহ জাহিদ হাসান জিতু, জসিম মিয়া, সাইদুল ইসলাম ও লিটন মিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী পরে ১টি সাদা রংয়ের নোহা কারগাড়ী রেজিষ্ট্রেশন নং-চট্ট মেট্রো-চ-৫১-০৫৩৮ ও ১ টি সিলভার রংয়ের এক্স করলা (রজিস্ট্রেশন নং-ঢাকা মেট্রো-গ-১৭-৩৪৬৬ গাড়ি উদ্ধার করে। তাদের বাড়ি মৌলভীবাজার সদর ও শ্রীমঙ্গল উপজেলায়। উক্ত অভিযান পরিচালনা করেন শ্রীমঙ্গল থানার ওসি আব্দুস ছালেক।
পৃথক ভাবে গত ২২ ফেব্রুয়ারি অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর) এবিএম মুজাহিদুল ইসলামের নেতৃত্বে জেলা গোয়েন্দা শাখা কর্তৃক অন্য একটি আন্তঃ জেলা গাড়ী চোর চক্রকে একটি ১টি সবুজ রংয়ের ১৫০০ সিসির কেরিনা প্রাইভেটকারসহ সদর থানাধীন শ্যামলী আবাসিক এলাকা হতে গ্রেপ্তার করা হয়।
মৌলভীবাজার শহরের পুলিশ চাঁদনীঘাট এলাকায় আলোচিত অঞ্জনা (তৃতীয় লিঙ্গ) হত্যা মামলাটির রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। ১৫ ফেব্রুয়ারি সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ জিয়াউর রহমান এর নেতৃত্বে মৌলভীবাজার জেলা পুলিশের একটি চৌকস টিম ব্রাহ্মনবাড়ীয়া জেলার সরাইল থানা এলাকা থেকে অভিযান পরিচালনা করে ঘটনার মূল আসামী আসুক মিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়। এর আগে হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত ক্রিকেট ব্যাটটি জব্দ করে পুলিশ। আসামী পরবর্তীতে বিজ্ঞ আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী প্রদান করেন।
পর্নোগ্রাফী সংক্রান্ত বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে শ্রীমঙ্গল সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার আশরাফুজ্জামান এর নেতৃত্বে ১০ ফেব্রুয়ারি একটি চৌকস টিম অভিযান পরিচালনা করে শ্রীমঙ্গলস্থ তানিম রিসোর্টের এক কর্মচারী কর্তৃক উক্ত রিসোর্টে অবস্থানকারী দম্পতির আপত্তিকর ভিডিও গোপনে ধারণ করে অর্থ আদায়ের চেষ্টাকালে পর্নোগ্রাফী নিয়ন্ত্রন আইনে আসামী রেজওয়ান হোসেন গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করা হয়।
মৌলভীবাজার সদর উপজেলার গুরাই এলাকায় চাঞ্চল্যকর গণধর্ষন মামলার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। ২৩ জানুয়ারি সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ জিয়াউর রহমান এর নেতৃত্বে একটি চৌকস টিম গণধর্ষন মামলার রহস্য উদঘাটন করে। পরে গণধর্ষনের সাথে জড়িত আসামী অজুদ মিয়া, খোকন মিয়া, শাহ আলমগনদেরকে গ্রেফতার করে বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করে। তাদের মধ্যে আসামী অজুদ মিয়া বিজ্ঞ আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে।
শ্রীমঙ্গল সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার আশরাফুজ্জামান এর নেতৃত্বে শ্রীমঙ্গল থানা পুলিশ কুখ্যাত মানবপাচার চক্রের সহিত জড়িত আছমা বেগমকে গ্রেপ্তার করে। ১৭ ফেব্রুয়ারি শ্রীমঙ্গল থানার একটি মানব পাচার মামলার তদন্তকালে মানব পাচারকারী চক্রের মূলহোতা আছমা বেগমসহ মোট ৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়।
চলমান ১০ দিনের বিশেষ অভিযানের অংশ হিসেবে গত ৪ দিনে জেলার বিভিন্ন থানার পুলিশ ৩০৬ লিটার দেশীয় মদ, ২৮১ বোতল বিদেশী মদ, ৩৯ পিস ইয়াবা, ২৭০ গ্রাম গাঁজা উদ্ধার করে।
মাদক বহনকারী/বিক্রেতা ও উদ্ধারকৃত মামলা সহ মোট ১৩ জন আসামীকে গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করা হয়।
পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাকারিয়া মাদক নিয়ন্ত্রন, সন্ত্রাস দমন, চাঁদাবাজি রোধ, চুরি, ছিনতাই ও ডাকাতি প্রতিরোধসহ মৌলভীবাজার জেলার সামগ্রিক আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় জেলা পুলিশকে বিভিন্নভাবে তথ্য দিয়ে সহায়তার আহবান করেন।
মন্তব্য করুন