মৌলভীবাজার জেলা সমিতির নির্বাচন মোশতাক-বাবলা পরিষদ বিপুল ভোটে বিজয়ী
স্টাফ রিপোর্টার॥ ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা ও উৎসবমুখর পরিবেশে মৌলভীবাজার জেলা সমিতি ঢাকা’র নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার ২৫ মে মৌলভীবাজার জেলা সমিতি, ঢাকা’র নির্বাহী পরিষদের নির্বাচন ২০২৪-২৫ অনুষ্ঠিত হয়েছে। মতিঝিল এজিবি সরকারি কলোনির মহিলা কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত ভোটারদের স্বতঃস্ফূর্ত উপস্থিতিতে ভোট গ্রহন অনুষ্ঠিত হয়। এসময় নির্বাচন পর্যবেক্ষকসহ বিশিষ্ট ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন এবং অনুষ্ঠিত সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন।
ভোটাররা তাদের রায়ে আবারও সভাপতি নির্বাচিত করেছেন ড. সৈয়দ মোশতাক আহমেদ এবং সাধারণ সম্পাদক হিসেবে নির্বাচিত করেছেন মোঃ হাবিবুর রহমান বাবলাকে।
সহ-সভাপতি হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন যথাক্রমে বনমালী ভৌমিক, এড. জসিম উদ্দিন আহমেদ, আব্দুল মজিদ চৌধুরী (মিন্টু), মোঃ মতিউর রহমান, মোঃ মানিক মিয়া। এছাড়া অন্যান্য পদের মধ্যে কোষাধ্যক্ষ হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন মোঃ এলাইছ মিঞা, যুগ্ম সম্পাদক হিসেবে নির্বাচিত মিসেস ফাহিমা খানম চৌধুরী ও এড. মোঃ আতিকুর রহমান, সহকারী সম্পাদক মোহাম্মদ মাহবুব মোর্শেদ ইমন, সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিষ্টার সীমা করিম, দপ্তর সম্পাদক, ফাহমীর হাবীব চৌধুরী রুবেল, সাহিত্য সম্পাদক মোহাম্মদ নেছার আলী, ক্রীড়া সম্পাদক মোঃ আনোয়ার হোসেন (শিপলু), মহিলা বিষয়ক সম্পাদক কাজী মনিরা আহমেদ (মনি), প্রচার সম্পাদক সৈয়দ তানজিল মোক্তাদির (রাফি)।
সদস্য যারা নির্বাচিত হয়েছেন তারা হলেন, ক্যাপ্টেন (অবঃ) মিজানুর রহমান, এম এ কাদির, নাছির উদ্দিন আহম্মেদ মিঠু, এড. তবারক হোসেইন, মোঃ সালাহ উদ্দিন আহমেদ, এড. আকদ্দছ আলী, মোঃ সাইদুর রহমান ও মোঃ বশির আহমদ।
এছাড়াও এই প্যানেলের সাংস্কৃতিক সম্পাদক পদে প্রার্থী ছিলেন মোহাম্মদ আসলাম আহমেদ। তিনি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন।
পরিষদের সকলে একতাবদ্ধ হয়ে নিরলস শ্রম দিয়ে মৌলভীবাজারবাসীর উন্নয়নে কাজ করে যাবেন প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছেন নির্বাচিত অনেক নেতৃবৃন্দ।
বিপুল ভোটে নির্বাচিত প্রথম সহ-সভাপতি বনমালী ভৌমিক বলেন, মৌলভীবাজার জেলা সমিতির সাথে আমি ২৬ বছর যাবৎ জড়িত। বিভিন্ন দ্বায়িত্বে আমি দীর্ঘ সময় কাজ করেছি। এবারই প্রথম সরাসরি অনুষ্ঠিত নির্বাচনে মোস্তাক-বাবলা পরিষদে সহ-সভাপতি পদে ভোটাররা বিপুল ভোটে আমাকে জয়যুক্ত করেছেন। এজন্য সকলের প্রতি আমার কৃতজ্ঞতা। যারা বিজিত হয়েছে তারাও আমাদের সহযাত্রী। সকলকে নিয়ে চায়ের দেশ মৌলভীবাজারের উন্নয়নসহ সকল বিষয় নিয়ে আমরা কথা বলবো এবং সকল স্টেকহোল্ডারদের নিয়ে কাজ করবো।
এছাড়াও অন্যান্য জেলার সাথে তূলনা করলে আমরা অনেক পিছিয়ে। মৌলভীবাজারে একটা মেডিক্যাল কলেজ নেই, একট বিশ্ববিদ্যালয় নেই। অথচ চা শিল্পে আমরা যেমন সমৃদ্ধ তেমনী বৈদেশির মুদ্রায়ও আমরা সমৃদ্ধ। আমরা যারা ঢাকায় থাকি তাদের নেতৃত্বে মৌলভীবাজারের যারা সোচ্চার কন্ঠ তাদের সবাইকে নিয়ে যাতে আমরা এগুতে পারি সেই চেষ্টাই আমরা করে যাবো।
আমাদের মাননীয় কৃষিমন্ত্রী উপাধ্যক্ষ ড. মোঃ আব্দুস শহীদ এমপি মহোদয়, দীর্ঘ ৭ বারের সংসদ সদস্য। উনার দীর্ঘ অভিজ্ঞতাকে আমাদের কাজে লাগাতে হবে। উনি জানেন কোথায় কিভাবে কাজ হবে এবং আমাদের আরও উন্নয়ন হবে। উনি মৌলভীবাজারের সকল উন্নয়নে ভূমিকা রাখবেন বলে আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস। মৌলভীবাজারবাসীর প্রতি আমার প্রানঢালা শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন।
এ ব্যাপারে সংক্ষিপ্ত প্রতিক্রীয়া জানতে চাইলে মৌলভীবাজার জেলা সমিতির সফল সভাপতি ও বর্তমান নির্বাচিত সভাপতি সৈয়দ মোস্তাক আহমেদ বলেন, আমার প্রতি আস্থা রেখে আবারও আমাকে সভাপতি হিসেবে নির্বাচিত করায় আপনাদের প্রতি গভীরভাবে কৃতজ্ঞ প্রকাশ করছি। বিশেষ করে আমাদের প্যানেলের প্রতি বিশ্বাস করে যেভাবে সমর্থন জানিয়েছেন তার জন্য আমি আমার প্যানেলের পক্ষ থেকে প্রত্যেকের প্রতি আন্তরিকভাবে কৃতজ্ঞ। আপনাদের এই নিরংকুশ রায়ে আমাদের দ্বায়িত্ব আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। তাই মৌলভীবাজার সমিতি তথা মৌলভীবাজারবাসীর প্রতি দ্বায়বদ্ধতা থেকে বলতে চাই, আমাদের সকল দ্বায়-দ্বায়িত্ব নিষ্ঠার সাথে সুচারুভাবে সম্পন্ন করতে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
বিশেষ করে অন্যান্য প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থীদের উদ্দেশ্যে বলতে চাই, আপনারা স্ব স্ব যোগ্যতা নিয়েই নির্বাচনে অংশগ্রহন করেছেন। এজন্য আপনাদের প্রতি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা। কোন ভেদাভেদ নয়, পূর্বের ন্যায় সবার পরামর্শ নিয়ে কাঁধে কাঁধ রেখে আমাদের কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছাবো এবং সফলতা অর্জন করবো ইনশাআল্লাহ।
উল্লেখ্য, মোস্তাক-বাবলা-এলাইচ পরিষদের ইশতেহারের ঘোষনায় ছিল:-
১। মৌলভীবাজার জেলার গরীব, মেধাবী ও অসহায় শিক্ষার্থীদের কথা বিবেচনা করে সমিতির বিলুপ্ত প্রায় শিক্ষা ট্রাস্টকে রেজিস্ট্রেশনের মাধ্যমে পুনরুজ্জীবিত করা হয়েছে। আবার বিজয়ী হলে দেশ-বিদেশ থেকে প্রতিশ্রুত কোটি টাকার স্থায়ী অনুদান সংগ্রহ কবে জেলার কৃতি, মেধাবী ও গরীব উচ্চশিক্ষায় আগ্রহী শিক্ষার্থীদের সহায়তা প্রদান করা হবে।
২। মৌলভীবাজর জেলায় একটি কারিগরী বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিকেল কলেজ স্থাপন ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করা।
৩। সমিতির আজীবন সদস্য সংখ্যা বর্তমান থেকে দ্বিগুণ উন্নীত করার ব্যবস্থা গ্রহণের উদ্যোগ নেয়া হবে।
৪। সমিতির অফিসে মেডিক্যাল ও লিগ্যাল হেল্প ডেস্ক চালু করার পরিকল্পনা রয়েছে। এখান থেকে গরীব ও অসহায় মৌলভীবাজারীদের চিকিৎসা/আইনী বিষয়ে প্রয়োজনীয় সঠিক পরামর্শ ও করণীয় সম্পর্কে সম্যক ধারণা এবং সহযোগিতা করা হবে।।
৫। একটি ইন্টার-একটিভ ওয়েবসাইট চালুকরণ। যেখানে আজীবন সদস্যদের জীবন বৃত্তান্ত ও অন্যান্য তথ্যাদি সংরক্ষিত থাকবে। সমিতির সদস্যরা ওয়েবসাইটে তাদের সুপারিশ ও মতামত রাখতে পারবেন।
মন্তব্য করুন