মৌলভীবাজার সদর উপজেলা নির্বাচন : ঐক্যবদ্ধ জেলা আওয়ামীলীগ কামালকে নিয়ে,তাজও সক্রিয় মাঠে
মু. ইমাদ উদ দীন॥ সদর উপজেলার চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন নিয়ে নানা আইনী জটিলতা চলমান। তারপরও দুই চেয়ারম্যান প্রার্থীর পক্ষে বিপক্ষে হচ্ছে পাল্টাপাল্টি র্যালী ও শো-ডাউন। এমন দৃশ্যে কৌতুহল বাড়ছে ভোটারসহ সর্বমহলের।
শনিবার ১১ মে দীর্ঘদিন পর র্যালীতে জেলা আওয়ামীলীগের কর্মীবান্ধব জনপ্রিয় দুই নেতা একই ছাদখোলা গাড়ি থেকে সড়কের দু’পাশে থাকা উৎসুক জনতাকে হাত নেড়ে অভ্যর্থনা জানান। ওই সময় তাদেরকে সঙ্গ দিয়ে অনুপ্রাণিত করতে গাড়ি ও মোটর সাইকেল নিয়ে দীর্ঘ র্যালীতে অংশ নেন আওয়ামীলীগ ও তার অঙ্গ ও সহযোগি সংগঠনের বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী। দীর্ঘদিন পর দুই নেতার একত্রিত হওয়ার কাঙ্খিত এমন দৃশ্যে উজ্জ্বীবিত হন দলের তৃণমূলের নেতাকর্মীরা।
শনিবার সন্ধ্যার দিকে মৌলভীবাজার শেরপুর ও কাগাবলা এলাকায় সদর উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী জেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো: কামাল হোসেনের সমর্থনে (মোটরসাইকেল প্রতীক) পথসভা ও জনসভা হয়। ওই দিন বিকেলে মৌলভীবাজার শহরের শহীদ মিনার এলাকায় জড়ো হন দলীয় নেতাকর্মীরা। ওখান থেকে জেলা শহর প্রদক্ষিণ করে ছাদখোলা গাড়িতে জেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পৌর মেয়র মো: ফজলুর রহমান ও উপজেলা চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী জেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান চেয়ারম্যান মো: কামাল হোসেনকে সামনে রেখে নানা শ্লোগানে মুখরিত করে র্যালী দিয়ে গন্তব্যে পৌঁছান নেতাকর্মীরা।
জানা যায় ২য় ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে সদর উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে জেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান চেয়ারম্যান মো: কামাল হোসেন এর পক্ষে ঐক্যবদ্ধ মৌলভীবাজার জেলা আওয়ামীলীগ। গেল রমজান মাসে এমনটি ঘোষণা দিয়ে দলের সদর উপজেলার তৃণমূলের নেতাকর্মীদের এমন নির্দেশনা দেন জেলা নেতৃবৃন্দ। ওই সময় পৌর কমিউনিটি সেন্টারে বর্তমান চেয়ারম্যান কামাল হোসেন এর আয়োজনে ইফতার মাহফিলের অংশ নিয়ে জেলা নেতৃবৃন্দ তাকে বিজয়ী করতে মাঠে সক্রিয় থাকতে নেতাকর্মীদের নিয়ে এই প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। ওই ইফতার ও দোয়া মাহফিলে সদর উপজেলার ১২ ইউনিয়নের আওয়ামীলীগের অঙ্গ ও সহযোগি সংগঠনের বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মীসহ নানা শ্রেণী পেশার গণ্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন। এরপর আসন্ন নির্বাচনী মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার পর ঘটে নানা অঘটন। সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে মো: কামাল হোসেনসহ দুইজন প্রার্থী তাদের মনোনয়নপত্র জমা দেন।
কিন্তু ২৮ শে এপ্রিল আপিল শুনানিতে মামলা সংক্রান্ত জটিলতায় অপর চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী মোস্তাফাপুর ইউনিয়নের দুইবারের সাবেক চেয়ারম্যান মো: তাজুল ইসলাম তাজের মনোনয়ন বাতিল হলে একক প্রার্থী হিসেবে মো: কামাল হোসেনকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। এরপর মো: তাজুল ইসলাম তাজ তার মনোনয়ন ফিরে পেতে উচ্চ আদালতে রিট আবেদন করেন। হাইকোর্ট তাজের রিট আবেদন গ্রহণ করে ৯ মে বিচারপতি মো: ইকবাল কবির ও মো: আখতারুজ্জামানের যৌথ বেঞ্চ তার মনোনয়ন বৈধ ঘোষণা করেন। একই সাথে দ্রুত তার প্রার্থিতা ফিরিয়ে দিয়ে নির্বাচন করার জন্য রুলসহ আদেশ দেন। ওই আদেশ পেয়ে চেয়ারম্যান প্রার্থী মো: তাজুল ইসলাম তাজ (আনারস প্রতীক) ও তার উচ্ছ্বসিত সর্মথকরা মোটরসাইকেল ও গাড়িযোগে আনন্দ র্যালী করে নির্বাচনী মাঠে তাদের অবস্থান জানান দেন। ওই র্যালীতে জেলা ও উপজেলা আওয়ামীলীগ ও সহযোগি সংগঠনের একাধিক নেতা ও কর্মীসহ তার অনুসারীরা উপস্থিত ছিলেন।
মুলত তাজুল ইসলাম তাজের ওই র্যালীর পাল্টা র্যালী দিয়ে নিজেদের শক্ত অবস্থান জানান মো: কামাল হোসের সমর্থক ও দলীয় নেতাকর্মীরা। এরপর থেকে সদর উপজেলার ঝিমিয়ে পড়া নির্বাচনী প্রচার প্রচারণার ডামাঢোল অনেকটা সরব হয়ে উঠে। যদিও এখনো চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন নিয়ে আইনী আনুষ্ঠানিকতা শেষ হয়নি। তারপরও এখন এই দুই প্রার্থী নিয়ে আলোচনা “টক অবদ্যা সদর উপজেলা”।
তাজুল ইসলাম তাজ এর সর্মথকরা জানান তিনি আওয়ামীলীগের রাজনীতির সাথে সক্রিয়ভাবে সম্পৃক্ত। তাছাড়া তাকে সর্মথন জানিয়ে প্রচার প্রচারণায় অংশ নিয়েছেন ও নিবেন জেলা ও উপজেলা আওয়ামীলীগ ও সহযোগি সংগঠনের পদবীধারী একাধিক নেতা। তাদের প্রত্যাশা তাদের প্রার্থী গরিবের বন্ধু। তিনি জনগণের ভোটে অবশ্যই বিজয়ী হবেন।
বর্তমান চেয়ারম্যান কামাল হোসেনের সমর্থক ও দলীয় নেতাকর্মীরা বলেন কামাল হোসেনকে বিজয়ী করতে জেলা আওয়ামীলীগসহ অঙ্গ ও সহযোগি সংগঠনের নেতাকর্মীরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে মাঠে কাজ করছেন ও করবেন। তিনি দলের তৃণমূলের নেতাকর্মীসহ সবার কাছে জনপ্রিয় একজন পরীক্ষিত গ্রহণযোগ্য জনপ্রতিনিধি ও নেতা।
সদর উপজেলার সার্বিক উন্নয়ন অব্যাহত রাখতে সন্ত্রাস ও মাদকমুক্ত আইনশৃঙ্খলা ও শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখতে তাকে পুনরায় নির্বাচিত করার প্রত্যাশা করে তার জন্য সবার দোয়া,আর্শিবাদ ও সহযোগিতা চান। তবে আইনী জটিলতায় চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন হবে কিনা এখনো এমন শঙ্কা সচেতন মহলের।
২১ মে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। আইনী কোনো জটিলতা না থাকলে চেয়ারম্যান পদে দুই প্রার্থী ও ভাইস চেয়ারম্যান (পুরুষ) পদে ৪ প্রার্থী প্রতিদ্বন্ধিতা করবেন। ভাই চেয়ারম্যান (মহিলা) পদে বিনা প্রতিদ্ধন্ধিতায় মোছা: শাহীনা রহমান নির্বাচিত হয়েছেন।
মন্তব্য করুন