মৌলভীবাজার ১ আসনে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকায় এগিয়ে নৌকার প্রার্থী শাহাব উদ্দিন
হারিস মোহাম্মদ॥ আর মাত্র তিন দিন বাকি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। আগামী ৭ জানুয়ারির নির্বাচন কে কেন্দ্র করে সারাদেশের ন্যায় মৌলভীবাজার-১ বড়লেখা জুড়ী আসনেও চলছে প্রার্থীদের প্রচার প্রচারণ। মন্ত্রী মোঃ শাহাব উদ্দিন ছাড়াও মৌলভীবাজার-১ আসনে তৃণমূল-বিএনপি থেকে প্রার্থী হয়েছেন মো. আনোয়ার হোসেন মঞ্জু (সোনালী আঁশ), জাতীয় পার্টি থেকে লাঙল প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করছেন আহমেদ রিয়াজ উদ্দিন। এছাড়া স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ট্রাক প্রতীক নিয়ে মাঠে আছেন ময়নুল ইসলাম।
নির্বাচনের দিন ঘনিয়ে আসায় প্রার্থীদের মধ্যে প্রচার প্রচারণা চলছে পুরোদমে। প্রধান বিরোধী দল বিএনপি নির্বাচনে অংশ না নেওয়া ও দেশের অন্যান্য আসনের মতো এই আসনে সরকার দলীয় স্বতন্ত্র প্রার্থী না থাকায় বর্তমান বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ মনোনীত নৌকার প্রার্থী পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মোঃ শাহাব উদ্দিন আছেন পুরোপুরি সেইফ জুনে। শক্ত কোন প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকলেও নৌকার প্রার্থী বর্তমান পরিবেশ মন্ত্রী ভোটারদের মন জয় করতে সকাল থেকে গভীর রাত অবধি প্রচার প্রচারণায় অংশ নিচ্ছেন। ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে আনতে দলীয় নেতাকর্মীরা ভোটারদের ঘরে ঘরে গিয়ে সরকারের উন্নয়ন তুলে ধরে নৌকার পক্ষে ভোট চাইছেন। আবারো নৌকায় ভোট দিতে ভোটারদের দিচ্ছেন নতুন নতুন উন্নয়ের প্রতিশ্রুতি। এছাড়া বর্তমান পরিবেশমন্ত্রী ক্লিন ইমেজের হওয়ায় সাধারণ ভোটারদের কাছে তাঁর জনপ্রিয়তা রয়েছে আকাশচুম্বী। চারবারের এমপি হিসেবে নিজ নির্বাচনী এলাকায় ব্যাপক উন্নয়ন করায় জয়ের পথে রয়েছেন ক্লিন ইমেজের মোঃ শাহাব উদ্দিন, এমপি।
জানা যায়, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মৌলভীবাজার-১ আসনে আওয়ামীলীগের মনোনয়ন পেতে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এসএম জাকির হোসাইন লবিং করলেও শেষ পর্যন্ত বর্তমান পরিবেশমন্ত্রী মোঃ শাহাব উদ্দিন এম’পিই পান নৌকার টিকেট। ইতিমধ্যে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এসএম জাকির হোসাইন স্বতন্ত্র প্রার্থী না হয়ে নৌকার পক্ষেই কাজ করার ঘোষণা দিয়ে মাঠে নৌকার পক্ষে কাজ করছেন।
সরজমিনে মৌলভীবাজার-১ বড়লেখা -জুড়ী এ দুই উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে দেখা যায় নৌকা ছাড়া অন্যান্য প্রার্থীদের নেই তেমন কোন প্রচার প্রচারণা। নির্বাচনের আর মাত্র কয়েকদিন বাকি থাকলেও সব এলাকায় এখনো সকল প্রার্থীদের পোস্টারের দেখা মিলে নি। তবে শেষমুহূর্তে চার প্রার্থীর পক্ষেই গাড়ি দিয়ে গান বাজনার মাধ্যমে চলছে প্রচার-প্রচারণা। সাধারণ ভোটারদের মন জয় করতে সকাল থেকে গভীর রাত অবধি প্রার্থীরা উঠান বৈঠক, সভা ও সমাবেশ করে বিভিন্ন উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ভোটারদের মন জয় করার চেষ্টা করছেন। সাধারণ ভোটাররা বলেন, শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকায় এ আসনের নির্বাচনে আবারো মন্ত্রী শাহাব উদ্দিনই এমপি নির্বাচিত হবেন এমনটাই নিশ্চিত। এছাড়া মন্ত্রী মোঃ শাহাব উদ্দিন সংসদ সদস্য, হুইপ ও মন্ত্রী থাকাকালীন সময়ে এলাকার ব্যাপক উন্নয়ন করায় সাধারণ বর্তমানে যারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন তাদের মধ্যে ভোটারদের পছন্দের তালিকায় রয়েছেন।
জানা যায়, আওয়ামীলীগ থেকে এ আসনে মোঃ শাহাব উদ্দিন ইতিমধ্যে চার বার এমপি নির্বাচিত হয়েছেন। বিগত ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নৌকা মার্কার অন্যতম একক প্রার্থী। ১৯৮৪ সালে প্রথম বড়লেখা উপজেলার সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হিসেবে তিনি নির্বাচিত হন। সে নির্বাচনের পর রাজনীতির মাঠে তাকে আর পেছন ফিরে থাকাতে হয়নি। একটানা ৩ বার ইউপি চেয়ারম্যান ছিলেন। এরপর ১৯৯৬ সালে প্রথম বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন পেয়ে বিএনপির হেভিওয়েট প্রার্থী সাবেক প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট এবাদুর রহমান চৌধুরীকে পরাজিত করে এমপি নির্বাচিত হন। এছাড়া ২০১৪ সালের দশম জাতীয় সংসদে এবং ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নির্বাচিত হয়ে পরপর তিনবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন তিনি। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এমপি নির্বাচিত হওয়ার পর তিনি সরকারের পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পান। এছাড়াও ২০১৪ সালের দশম জাতীয় সংসদে সরকার দলীয় হুইপের দায়িত্ব পালন করেন।
চারবার জাতীয় সংসদ সদস্য, জাতীয় সংসদের হুইপ ও পরিবেশমন্ত্রী থাকাকালীন সময়ে জুড়ী বড়লেখার উন্নয়নে তিনি ব্যাপক ভূমিকা রেখেছেন । তারমধ্যে উল্ল্যেখযোগ্য এক হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে জুড়ী উপজেলার লাঠিটিলা বনে দেশের তৃতীয় বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক একনেকে অনুমোদন। ব্যাপক উন্নয়ন করার ফলে আওয়ামীলীগ সহ সাধারণ ভোটাররা এখনো আস্থা রেখেছেন সাদা মনের মানুষ হিসেবে পরিচিত মোঃ শাহাব উদ্দিনের উপর।
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মোঃ শাহাব উদ্দিন এমপি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশের অভূতপূর্ব উন্নয়ন সাধিত হয়েছে। বিগত সময়ে বড়লেখা ও জুড়ীতে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও জনগন আবারো নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে বিপুল ভোটে জয়ী করবে ইনশাল্লাহ।
মন্তব্য করুন