যুবককে ছুরিকাঘাতে ভুড়ি বের করা হয়,আসামীরা এখনও ধরা ছোঁয়ার বাহিরে!
মৌলভীবাজার প্রতিনিধি॥ শ্রীমঙ্গলে এক যুবককে ডেকার (ছুরি) দিয়ে পেটের ভুড়ি বের করা হলেও ঘটনার ৭ দিন অতিবাহিত হলেও পুলিশ এখনও কোন আসামীকে গ্রেফতার করতে পারেনি।
গত ১৯ জানুয়ারী শহরের নতুন বাজার এলাকায় ফুল মিয়ার মার্কেটের সামনে উপজেলার কড়ুইতলার আনকার মিয়ার ছেলে শাওনকে মখন মিয়ার লোকজন ডেকার দিয়ে পেটের সামনের দিকে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করলে তার ভুড়ি বের হয়ে যায়। ওই দিন মুমুর্ষ অবস্থায় শাওনকে শ্রীমঙ্গল ও মৌলভীবাজার সরকারি হাসপাতল থেকে সিলেট এম এ জি হাসপাতালে প্রেরণ করা হয় হলেও রোগীর অবস্থা এখনও আশংকাজনক বলে জানান আনকার মিয়া। এ ঘটনায় আনকার মিয়া শহরের মখন মিয়াকে প্রধান আসামী করে আরও ৩ জনকে আসামী দিয়ে মামলা দায়ের করেন।
মামলা সূত্রে জানা যায়,শহরের ক্যাথলিক মিশন রোড এলাকার মৃত আব্দুর নূর এর ছেলে মখন মিয়া দীর্ঘ বছর যাবৎ উপজেলার বিভিন্ন বালু মহাল থেকে সরকারি রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে আসছেন। অবৈধ বালু উত্তোলনে তিনি শক্তিশালী সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছেন। এ অবৈধ বালু তোলার বিরুদ্ধে আনকার মিয়া ও তার ছেলে বাঁধা দিলে মখন মিয়া তাদের বিরুদ্ধে প্রাণে হত্যার হুমকি দিতে থাকেন। এ সব ঘটনায় মখন মিয়া ও তার লোকজনের বিরুদ্ধে আনকার মিয়া থানায় ও আদালতে বিভিন্ন সময়ে মামলা দায়ের করেন। যাহা বিচারাধীন রয়েছে।
গত ১৯ জানুয়ারী সন্ধ্যাা পর শাওন ও তার পিতা সিন্দুরখান রোড তাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে ঘটনাস্থলে ব্যবসায়িক কাজে আসলে পূর্ব থেকে ওঁৎ পাতিয়া থাকা আসামী উপজেলা সাইটুলা এলাকার মৃত মাহমুদ মিয়ার ছেলে জসিম মিয়া,ওই এলাকার হাবিজ মিয়ার ছেলে মনির মিয়া ও কাকিয়ার পুর এলাকার মৃত সিরাজ মিয়ার ছেলে মইনুল ইসলামসহ অজ্ঞাতনামা আরও ৫ জন মিলে তার পিতার সামন থেকে শাওনকে পথ আটকিয়ে ধরে টেনে হিঁচড়ে ফুল মিয়ার মার্কেটের ভেতরে নিয়ে যায়। সেখানে শাওনকে ধস্তাধস্তি করে মখন মিয়ার ব্যবসায়িক আড়ৎ এর সামনে নেয়া অবস্থায় মখন মিয়া তার আড়ৎ থেকে বের হয়ে নির্দেশ দেন ‘শালার বেটাকে জানে মারি লা’ বলার সাথে সাথে আসামী জসিম,মনির তাদের হাতে থাকা ডেগার দিয়ে শাওনের নাভির ডান ও বাম পাশ বরাবর উপর্যুপরি আঘাত করিলে তার ভুড়ি বের হয়ে আসে। এ সময় শাওন মাটিতে লুটিয়ে পড়ে গেলে আসামী মইনুলের হাতে থাকা ডেগার দিয়ে প্রাণে হত্যার উদ্দেশ্যে মাথা বরাবর দুটি কুপ মারিলে শাওন বাম হাত দ্বারা ফিরাইলে কনুইর নিচে পড়ে হাতে কাটা রক্তাক্ত জখম হয়। এসময় আসামীরা শাওনের নিকট থেকে নগদ এক লক্ষ টাকা ও ৩০ হাজার টাকা মূল্যের মোবাইল ফোন চুরি করে নিয়ে যায়। এসময় শাওন ও তার পিতার হাল্লা চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে আসলে আসামীরা পালিয়ে যায়। পরে মুমূর্ষ অবস্থায় শাওনকে উপস্থিত লোকজন প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কম্প্রেক্সে নিয়ে গেলে দ্রুত তাকে মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। সেখান থেকে মুমূর্ষ অবস্থায় সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। বর্তমানে সেখানে শাওন চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
এ ব্যাপারে মখন মিয়ার মুঠো ফোনে ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি এ ঘটনার সাথে তার কোন সংশ্লিষ্ঠা নেই বলে জানান।
এ ব্যাপারে শ্রীমঙ্গল থানার অফিসার ইনচার্জ বিনয় ভূষন রায় জানান,বাদীর বিলম্বে অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা দায়ের করা হয়। আসামীদের গ্রেফতার করতে পুলিশি তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে বলে তিনি জানান।
মন্তব্য করুন