যেমন যাচ্ছে রাজনৈতিক দলগুলোর ইফতার আয়োজন
ইমাদ উদ দীন॥ নানা কারণে হঠাৎ করে পাল্টে গেল জেলার রাজনৈতিক দলগুলোর ইফতার আয়োজনের রেওয়াজী ঐতিহ্য। গেল দু’বছর থেকে ঘটেছে এ ব্যতয়। এবছরও সামাজিক ও পেশাজীবী সংগঠনগুলো মাহে রমজানে রোজাদারদের সম্মানে ইফতার পার্টির আয়োজনে সরগরম হলেও ভিন্ন চিত্র জেলার রাজনৈতিক দল গুলোর। গেল দু’বছর থেকে বয়ে চলা রাজনৈতিক অস্থিরতার প্রভাব পড়েছে দলীয় উদ্দ্যোগে মাহে রমজানে রোজাদারদের সম্মানে আয়োজিত ইফতার পার্টিতেও। এবছরও সরগরম নয় রাজনৈতিক দলগুলোর ইফতার পার্টির আয়োজন। বিশাল বিশাল সামিয়ানা, সপ্তাহ জুড়ে প্রস্তুতির কাজ, চিঠি বিতরণ কর্মব্যস্ত নেতাকর্মীদের আয়োজনস্থল পরিদর্শন গেল বছরের মত এ বছরও চোখে পড়েনি জেলার কোথাও। মামলা হামলা আর নিজ দলের প্রভাবশালী অধিকাংশ নেতা কারাগারে থাকায় ২০ দলীয় জোট দলীয় ব্যানারে ইফতার পার্টির আয়োজনের তেমন তৎপর নয় এবছরও। আর অভ্যন্তরীণ দ্বন্ধসহ নানা কারণেই ১৪ দলীয় জুটের বড় দল গুলোর একই অবস্থা। জেলা জুড়ে প্রতি বছরই ইফতার পার্টির আয়োজনের মাধ্যমে রাজনৈতিক দলগুলো নিজ দলের সক্রিয়তা জানান দেয়। কিন্তু গেল দু’বছর থেকে দলীয় ইফতার পার্টি অনেকটা কমে গেছে। এবছর ১৫ রমজান অতিবাহিত হলেও আওয়ামীলীগ, বিএনপি, জামাত, জাতীয় পার্টি কোন দলই এ পর্যন্ত চোখে পড়ার মত কোন ইফতার পাটির আয়োজন করতে পারে নি। যদিও রেওয়াজ অনুযায়ী প্রতিবছর রমজান মাসকে ঘীরে দলীয় রাজনীতি অনেকটা চাঙ্গা হয় ইফতার পার্টির মাধ্যমে। ইফতার পার্টিকে কেন্দ্র করে সরগরম থাকে রাজনীতির মাঠও। ১ম রমজান থেকে ২৯ রমজান পর্যন্ত রাজনৈতিক দলগুলোর ব্যানারে আয়োজন থাকে আলোচনা সভা, দোয়া ও ইফতার পার্টির। দলীয় বিশাল এ আয়োজন নেতাকর্মীদের মাঝে প্রাণচাঞ্চল্য আনে। প্রতিবছর মৌলভীবাজার জেলা শহর ছাড়াও উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড কমিটির উদ্যোগে মাসজুড়ে ইফতার পার্টির সাথে আলোচনা সভার মাধ্যমে দলের শাখা কমিটিগুলোও সরব হয়ে উঠে। কিন্তু গেল দু’বছর থেকে প্রচলিত এ রেওয়াজে ঘটেছে ব্যতয়। এ বছর এখন পর্যন্ত ভিন্ন চিত্র মৌলভীবাজারের সবকটি উপজেলার। ঘটা করে ইফতার পার্টির আয়োজনের কোন তথ্য দিতে পারেন নি দলগুলোর নেতাকর্মীরা।এ নিয়ে তৃণমূলের নেতাকর্মীরা মন কষ্টের অন্ত নেই। নেতাকর্মীরা জানান, অন্যান্য বছর এ সময়ের মধ্যেই বড় পরিসরে ইফতার পার্টির আয়োজন করা হয়। কিন্তু এবছর সংশ্লিষ্ট দলের দায়িত্বশীল নেতৃবৃন্দের আগ্রহ না থাকায় তৃণমূলের নেতাকর্মীদের প্রত্যাশা হচ্ছে উপেক্ষিত। দু’একটি দলের সহযোগী ও অন্য সংগঠনের নামমাত্র ইফতার পার্টি হলেও তাতে সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণ তো নেইই এমনকি দলীয় সব নেতাকর্মীদেরও অংশ গ্রহণের সুযোগ হয় নি। দলীয় ব্যানারে ইফতার পার্টির আয়োজন নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর জেলা নেতৃবৃন্দের কাছে জানতে চাইলে তারা বলেন নানা কারণে অন্য বছরের তুলনায় গেল দু’বছর থেকে ইফতার পার্টির আয়োজন কম হচ্ছে স্বীকার করে তারা জানান, ২০/২৫ রমজানের মধ্যেই জেলার অনান্য উপজেলার সকল নেতাকর্মীদের নিয়ে জেলা শহরে বড় পরিসরে ইফতার পার্টির আয়োজনের পরিকল্পনা রয়েছে এ বিষয়ে নিজ দলের নেতাকর্মীদের সাথে তারা আলাপ আলোচনা করছেন। সুশীল সমাজের ধারণা, বর্তমান রাজনীতির বেহাল দশার কারণে এ বছর জেলার ইফতার রাজনীতি জমে উঠেনি। তবে, দলের সমর্থক ও সাধারণ মানুষের ভিন্ন কথা। তাদের ধারণা গণতন্ত্র ও রাজনীতির চর্চা না থাকাসহ ভোটের অনিশ্চয়তার কারণেই নাকি নেতারা ফ্রন্ট লাইনে আসছেন না। তা না হলে ইফতার পার্টি, আলোচনা সভা রাজপথের আন্দোলন সবই থাকত জমজমাট।
মন্তব্য করুন