যে কথা হয়নি বলা, বলি বলি করে
সাদেক আহমেদ : গভীর আগ্রহ ভরে প্রতিবেশী বৃহৎ গণতান্ত্রিক দেশ ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আমেরিকার রাষ্ট্রীয় সফরে মার্কিন কংগ্রেসে ভাষণ শুনছিলাম। ভারত ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বেসামরিক পারমাণবিক চুক্তির আওতায় ভারত আমেরিকা থেকে বেশ উপকৃত হচ্ছে। নরেন্দ্র মোদী প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তানকে জঙ্গি রাষ্ট্র হিসাবে অভিহিত করে বক্তব্য দিয়েছেন। গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রী অন্য একটি গণতান্ত্রিক দেশে তার বক্তব্যে কংগ্রেস সদস্যগণ মুহুর্মুহু করতালি দিয়ে অভিনন্দন জানায়। এশিয়ার ভারসাম্য রক্ষাকল্পে চীনের মোকাবেলায় ভারতের দিকে আমেরিকা ঝুকে পড়ছে। তবে বাংলাদেশের ভূ-রাজনৈতিক কারণে আমেরিকার গুরুত্ব দিনে দিনে বাড়ছে। বাংলাদেশের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক ব্যবস্থায় গণতন্ত্রের কি হাল তা অবশ্য নরেন্দ্র মোদীর বক্তব্যে চেপে যাওয়া হয়েছে। গতকাল দীপ্ত টিভিতে “ডিজরাপশন” নামে একটা ডকুমেন্টারীতে প্রকৃতি ও পরিবেশের ব্যাপক ক্ষতিতে আমেরিকার নিউইয়ার্কে প্রকৃতিবাদীদের ব্যাপক অংশগ্রহণে একটি বিরাট সমাবেশের ছবি দেখছিলাম। এতে নিক্সন,বুশ ও মার্টিন লুথার কিং সহ অনেক আমেরিকার প্রেসিডেন্টদের স্বচিত্র বক্তব্য দেখাচ্ছিল। গত কয়েকদিন পূর্বের একটা পত্রিকার পাতায় লেখা- ‘তুঘলকি শাসন’ আমার চোখে পড়ল। বাংলাদেশে এখন কোন শাসন চলছে তা গণতান্ত্রিক দেশগুলোই ভাল বলতে পারবে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থা ও মৌলিক অধিকারের জন্য বাংলাদেশ সরকারকে বার বার তাগিদ দিচ্ছে। গত রাতে সেহরীর আগে একটা টিভি চ্যানেলের বদৌলতে মিশরের জাকাত না দেওয়ার করাণে মহান আল্লাহর শাস্তি স্বরূপ দাবিয়ে দেওয়া কারুনের বিশাল মরুভূমি প্রান্তর দেখছিলাম। কারুন ছিল হজরত মুসা (আঃ) এর চাচাত ভাই। সে একটা ঘরে প্রার্থনা করত এবং আল্লাহর নিকট সম্পদ চেয়ে বিপুল সম্পদের অধিকারী হয়েছিল। পরবর্তীতে সে মুসা (আঃ) আহবানে গরীব দুঃখীকে সাহায্য তো করেনি বরঞ্চ সম্পদের অহমিকায় সে দম্ভ নিয়া চলাফেরা করত এবং ভাবত সে সারাজীবন পৃথিবীতে বেঁচে থাকবে। অথচ নশ্বর এই পৃথিবী থেকে একদিন বিদায় নিতে হবে তা সে সম্পদের অহমিকায় ভুলে গিয়েছিল। সমস্ত সম্পদ সোনা-দানা সবকিছুই মহান আল্লাহর গজবে তলিয়ে যায়। তার প্রার্থনার ঘরটি এখনো বহাল আছে। যা অতীত নিদর্শন হিসাবে ইতিহাসের স্বাক্ষী হয়ে রয়েছে। চীনের জিনজিয়াং প্রদেশে যখন রোজা পালনের জন্য বিধি নিষেধ দেওয়া হয়েছে। তখন একটা সংবাদ দেখলাম- ভারতের লাখনৌতে হাজার হাজার লোক প্রতিবাদ স্বরূপ চীনা পণ্য বর্জনসহ প্রতিবাদে ফেটে পড়েছে। তাই জাতীয় কবি নজরুল ইসলামের একটা গান এই মুহুর্তে মনে পড়ে- “আল্লাহতে যার পূর্ণ ঈমান, কোথা সে মুসলমান”। বাংলাদেশের নেত্রকোনাতেও দেখলাম কমুনিস্ট রাষ্ট্র চীনের এই ঐদ্ধত্যপূর্ণ সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ হয়েছে। তবে বাংলাদেশের মানুষের জন্য গণতন্ত্র ও মানবাধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য যদি আমেরিকার সরকার দৃঢ়ভাবে অবস্থান নেয় তাহলে কোন প্রতিবেশী এখানে পানি ঘোলা করে মাছ মিকার করতে পারবে না। আর তাদের মন মত সরকারের পরিবর্তে বাংলাদেশের নিরীহ জনগণের পক্ষে কাজ করতে তাদের বিবেক তাদেরকে তাড়িত করবে। মার্কিন ডেমোক্রেটিক দলের হয়ে হিলারী ক্লিনটন সবকিছুতে জয়লাভ করে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের দিকে এগিয়ে চলেছেন। এশিয়ায় বাংলাদেশের ব্যাপারে যার স্বচ্ছ ধারণা এমনকি প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলের মানুষ জনের আচার ব্যবহার এমনকি ষড়ঋতুর দেশ বাংলাদেশের সম্পর্কে যিনি সম্যক জ্ঞান রাখেন। আমরা ভবিষ্যতের দিকে চেয়ে আছি। এছাড়া আমার বলার কিছু ছিল না। আল্লাহ দেশের মঙ্গল করুন।
মন্তব্য করুন