যৌতুকেই স্বপ্ন ভঙ্গ, অতঃপর রেহেনার আত্মহত্যা
রাজনগর প্রতিনিধি॥ রাজনগর উপজেলার কামারচাক ইউনিয়নের খাসপ্রেমনগর গ্রামরে দিনমজুর গফ্ফার মিয়ার মেয়ে রেহেনা বেগমের (১৯) বিয়ে ঠিক হয়েছিল মৌলভীবাজার সদর উপজেলার বলিয়ারভাগ গ্রামের মৃত চেরাগ মিয়ার ছেলে রিপন মিয়ার (২৮) এর সঙ্গে।
১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা দেন মোহর ধার্য করে বিয়ের তারিখও ঠিক হয়ে যায়। আগামী ২৭ নভেম্বর আনুষ্ঠানিক ভাবে বিয়ের হওয়ার কথা। কেনাকাটাও প্রায় শেষ। কিন্তু নতুন ঘর বাঁধার কল্পনায় বিভোর রেহেনা বেগমের স্বপ্ন ভেঙ্গে যায় যৌতুকের থাবায়।
যৌতুক লোভী শশুরের ২ লক্ষ টাকা বায়না পূরণ করতে না পারায় অন্তিম সময়ে ভেঙ্গ যায় রেহেনার বিয়ে। নিজের ঘরের তীরের সঙ্গে ওড়না পেছিয়ে আত্মহত্যা করে স্বপ্নের সমাধি ঘটায় রেহেনা।
নিহতের পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, খাস প্রেমনগর গ্রামের রেহেনা বেগমের (১৯) বিয়ের দিন ধার্য ছিল ২৭ নভেম্বর। বিয়ের ১০ দিন আগে ঘটকের মাধ্যে রেহেনার শশুর ২ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন। রেহেনার পিতা দিনমজুর গফ্ফার মিয়ার পক্ষে পাহাড়সম যৌতুকের ভার বহন সম্ভব নয়। তাই ভেঙ্গে যায় রেহেনার বিয়ে। বিয়ে ভেঙ্গে যাওয়ার বেদনা সইতে না পেরে বৃহস্পতিবার বিকালে ঘরের তীরের সঙ্গে ওড়না পেছিয়ে সে আত্মহত্যা করে। মূমুর্ষ অবস্থায় পরিবারের লোকজন তাকে উদ্ধার করে মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যার হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
পরে শুক্রবার বিকালে মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে লাশের ময়না তদন্ত শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।
রেহেনা বেগমের ভাই জুনেদ মিয়া বলেন, বিয়ের সব আয়োজন শেষ হয়েছিল। আত্মীয়-স্বজনদের দাওয়াতও শেষ পর্যায়ে। ঘটকের মাধ্যমে হঠাৎ খবর আসে এই বিয়ে হবে না। কারণ জানতে চাইলে জানানো হয় ২ লাখ টাকা দিতে হবে। এ ঘটনায় আমার বোন মর্মাহত হয়ে পরিবারের অজান্তে আত্মহত্যা করে। আমরা মামলা করবো।
এ ব্যাপারে জানতে বর রিপন মিয়ার মোবাইল বেশ কয়েককবার ফোন করা হলেও বন্ধ পাওয়া যায়।
রাজনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শ্যামল বণিক বলেন, মডেল থানার এসআই তাপশ কুমার সুরতহাল রিপোর্ট করেছেন। রাজনগর থানায় এখনো কেউ অভিযোগ করে নি।
মন্তব্য করুন