রমজানের তাৎপর্য ও রোজার উপকারিতা
মোহাম্মদ আবু তাহের॥ অনন্য সাধারণ ও মহিমান্বিত মাস হলো পবিত্র রমজান। এ মাস নিঃসন্দেহে অন্যান্য মাস থেকে আলাদা ও শ্রেষ্ঠত্বের দাবী রাখে। রমজান শব্দের অর্থ বিদগ্ধ করা। আরবী রামাদু থেকে রমজান যার অর্থ জ্বালিয়ে ভস্ম করে দেওয়া। ইসলামের পঞ্চ স্তম্ভের অন্যতম হলো রমজান মাসে সিয়াম পালন। এই সিয়াম বা রোজা পালন করা ফরজ। অল্প বয়ষ্ক বা শিশুদের জন্য এ বিধান প্রযোজ্য নয়। তবে শিশুরা রোজা পালন করতে চাইলে হযরত ওমর(রাঃ) তাদের উৎসাহিত করতেন যাতে শিশুরা সিয়াম পালনে অভ্যস্ত হয়। সিয়াম শব্দের অর্থ হলো বিশ্রাম নেয়া, বিরত থাকা। শরীয়তের পরিভাষায় সিয়ামের অর্থ সুবেহ সাদিক থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত নিয়ত করে যাবতীয় পানাহার, কামাচার ও পাপাচার থেকে বিরত থাকা। মুসাফির, অতিবৃদ্ধ, মারাত্মক রোগাক্রান্তদের ক্ষেত্রে সিয়াম সাধনা শিথিল করা হয়েছে। কোরআন মজিদে এরশাদ হয়েছে কেউ পীড়িত থাকলে বা সফরে থাকলে অন্য সময় সংখ্যা পূরণ করে নিতে হবে। আর রোজা যাদের জন্য অতিশয় কষ্ট দায়ক তারা এর পরিবর্তে ফিদয়া দিবে একজন মিসকিনকে খাদ্য দান করে (সুরা বাকারা আয়াত ১৮৪)।
রোজার প্রকৃত তাৎপর্য হচ্ছে তাকওয়া অর্জনের মাধ্যমে মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করা। তাকওয়ার আভিধানিক অর্থ হচ্ছে বিরত থাকা বা বেঁচে থাকা। যে ব্যক্তি ইবাদত বন্দেগী সহ জীবনের সর্বক্ষেত্রে তাকওয়া অবলম্বন করে জীবন পরিচালনা করে তাকেই মুত্তাকী বলে।
হাদিস শরীফে বর্ণিত আছে যে ব্যক্তি পবিত্র রমজান মাসে রোজা রাখে তার জন্য সব ফেরেশতা, পশুপাখি, গাছপালা, বৃক্ষলতা, কীটপতঙ্গ সহ যত প্রাণী পৃথিবীতে রয়েছে সবাই রোজাদার ব্যক্তির জন্য আল্লাহর দরবারে মাগফেরাত কামনা করতে থাকে। হযরত আবু হোরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত মহানবী (সঃ) বলেছেন প্রতিটি জিনিসের যাকাত রয়েছে আর শরীরের যাকাত হচ্ছে রোজা। রোজা পালনের মাধ্যমে একজন মুসলমান অধিকতর তাকওয়া অর্জন করতে সক্ষম হয়। এ জন্যই মহান আল্লাহ এরশাদ করেন, হে ইমানদারগণ তোমাদের উপরে রোজা ফরয করা হলো যেমন ফরয করা হয়েছে তোমাদের পূর্ববর্তীদের উপরে যেন তোমরা তাকওয়া অবলম্বনকারী হতে পারো। (সুরা বাকারা আয়াত ১৮৩)।
হযরত ওমর (রাঃ) কা’ব আল আহবার (রাঃ) কে প্রশ্ন করেছিলেন তাকওয়া কি? জবাবে তিনি জিজ্ঞাসা করলেন আপনি কি কখনো কন্টকাকীর্ণ পথে হেঁটেছেন? তখন আপনি কি পন্থা অবলম্বন করেন? ওমর (রাঃ) বললেন আমি সতর্ক হয়ে কাপড় গুটিয়ে হেঁটেছি যাতে কাঁটায় কাপড় আটকে না যায়। কা’ব বললেন এটিই হচ্ছে তাকওয়া।
তাকওয়ার আর একটি উদাহরণ হলো এরকম, কোন ব্যক্তি যখন দ্রুত গতিতে হাইওয়েতে গাড়ী চালায় তখন তার মনে একটা ভয় কাজ করবে নিমিষের অসতর্কতা গাড়ীটি গভীর খাদে পড়ে যেতে পারে। ভয়াবহ দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পেতে হলে চালককে প্রতি মুহুর্তে চোখ ও মন খোলা রাখতে হয়। সারাক্ষণ তাকে সতর্ক থাকতে হয়। চালকের জন্য এটি হচ্ছে তাকওয়া। আর মুমিনের জন্য তাকওয়া হচ্ছে সঠিক পথ থেকে বিচ্যুৎ হওয়ার সার্বক্ষণিক ভয়। রমজান হলো তাকওয়া অর্জনের প্রশিক্ষণের মাস।
রোজার মূল লক্ষ্য হচ্ছে তাকওয়া অর্জন করা। রোজাদার ব্যক্তি সুবহে সাদিক থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত বৈধ পানাহার থেকে আল্লাহর নির্দেশে নিজেকে বিরত রাখে, নির্জনে যেখানে কারও দেখার কোন সম্ভাবনা নাই সেখানেও কিছুই পানাহার করে না, কারন রোজাদার বিশ্বাস করে সবখানেই আল্লাহ বিরাজমান। দীর্ঘ একমাস এই সাধনার ফলে রোজাদারের বিশ্বাস আরও দৃঢ় হয়, রোজাদার পরিপূর্ণ মোত্তাকীরূপে নিজেকে গড়ে তোলার সুযোগ লাভ করে। যার ফলে পরবর্তী ১১ মাস আল্লাহর নির্দেশ অনুযায়ী নিজের জীবন পরিচালনায় গুণগত উন্নতি সাধিত হয়।
রোজার মাহাত্ম্য ও তাৎপর্য হচ্ছে পূর্ণ একমাস সংযমের মাহাত্ম্য। দিনভর খালিপেটে থাকার মানসিক ও শারীরিক উপকারিতাও অটুট থাকে। মার্কিন চিকিৎসক মিশেল মোসলে ক্ষুধা পেটে থাকার শারীরিক উপকারিতা নিয়ে তার কিছু মতামত প্রকাশ করেছেন। তিনি নিজে প্রতি সপ্তাহে দুদিন নিয়ম করে উপোস থেকেছেন। দেখা গেছে তার শরীরের ক্যালরী ৬০০ কমে গেছে। তিনি জানিয়েছেন এভাবে উপোস থাকার মধ্য দিয়ে জীবনের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি ও বেশীদিন বেঁচে থাকা সম্ভব। আরব আমিরাতের একদল গবেষক জানিয়েছেন দীর্ঘ একমাস নিয়ম করে উপোস থাকার ফলে শরীরের কোলেষ্টেরলের মাত্রা কমে এবং এতে হৃদযন্ত্র সুস্থ থাকে। রক্তে কোলেষ্টেরলের উপস্থিতি উল্লেখযোগ্য মাত্রায় হ্রাস পাওয়ায় কমে যায় স্ট্রোক অথবা হার্ট এ্যাটাকের ঝুঁকি। তাছাড়া শরীরের হজম শক্তিও বাড়ে। সারাদিন না খেয়ে থাকার কারনে দেহ থেকে এক ধরনের হরমোন তৈরি হয় যার নাম এডিপনেসটিন। এটি শেষ রাতে খাওয়া এবং সারাদিন না খেয়ে থাকার কারনে তৈরি হয়। গবেষকরা বলেছেন রোজা থাকার কারনে শরীরে অনেক বিষাক্ত উপাদানও মরে যায় বা নিঃশেষ হয়ে যায়। চিকিৎসা বিজ্ঞানের বিশ্লেষণ থেকে জানা যায় রোজার মাধ্যমে ২১ প্রকার রোগের চিকিৎসা অর্জন করা সম্ভব। মহাত্মা গান্ধী প্রায় সারা বছরই রোজা থাকতেন, তিনি তাঁর অনুসারীদের নিয়মিত রোজা রাখতে পরামর্শ দিতেন।
রমজান মাস অন্যান্য মাস থেকে নিঃসন্দেহে মহিমান্বিত । এ মাস পবিত্র কোরআন নাজিলের মাস। পবিত্র কোরআন পাকে আল্লাহ পাক বলেন রমজান মাস এমন একটি পবিত্র ও মুবারক মাস যে মাসে আল্লাহ তা’আলা পবিত্র কোরআন শরীফ অবতীর্ণ করেছেন যা মানুষের জন্য হেদায়াত, সৎপথের স্পষ্ট নিদর্শন এবং হক বাতিলের মধ্যে পার্থক্যকারী। সুতরাং তোমাদের মধ্যে যে এ মাস পাবে সে যেন এ মাসে রোজা রাখে (সুরা বাকারা আয়াত ১৮৫)। শুধু কোরআন মজিদই নয় রমজান মাসের প্রথম তারিখে হযরত ইব্রাহিম (আঃ) এর উপর সহিফা অবতীর্ণ হয়েছে। রমজান মাসের ছয় তারিখে হযরত মুসা (আঃ) এর উপর তাওরাত কিতাব, রমজান মাসের ১২ তারিখে হযরত দাউদ (আঃ) এর উপর জাবুর কিতাব, রমজান মাসের ১৩ তারিখে হযরত ঈসা (আঃ) এর উপর ইনজিল কিতাব এবং রমজান মাসের শবেকদরের রাতে বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ (সঃ) এর উপর বিশ্ব ইতিহাসের কালজয়ী মহাগ্রন্থ পবিত্র কোরআন শরীফ অবতীর্ণ হয়েছে।
হযরত আবু হোরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত নবীজী (সঃ) বলেছেন আল্লাহ তা’আলা বলেন, রোজা ছাড়া বনি আদমের প্রতিটি কাজ নিজের জন্য। রোজা আমার জন্য, আমি নিজেই তার প্রতিদান দেব। (বোখারী শরীফ)। পবিত্র রমজান মাসকে নবী করিম (সঃ) বরকত পূর্ণ মাস ও মর্যাদাবান মাস নামে আখ্যায়িত করেছেন। কাম, ক্রোধ, লোভ, মোহ প্রভৃতি কুপ্রবৃত্তির হাত থেকে আত্মরক্ষার হাতিয়ার হলো রোজা। মাসব্যাপি রোজায় অভ্যস্ত হয়ে সর্বাবস্থায় ধৈর্য্য ধারন করার শিক্ষা দেয় মাহে রমজান।
জীবন ও দেহের তিনটি দাবী আছে- এগুলো হলো এক ক্ষুন্নিবৃত্তি, দুই যৌন আবেগ এবং তিন বিশ্রাম। ক্ষুন্নিবৃত্তি জীবন রক্ষার জন্য আবশ্যক। যৌন আবেগ বংশ বিস্তারের জন্য প্রয়োজন। বিশ্রাম গ্রহন নিজের কর্মক্ষমতা বাড়ানোর জন্য প্রয়োজন। মানুষের এ তিনটি দাবি যদি নিজ নিজ পরিসীমার মধ্যে থাকে তাহলে সে মানুষ কখনো বিপথগামী হবে না।
রোযা মানুষের এ তিনটি বাসনাকে নিয়ন্ত্রণ করে রাখে। এক মাসের এক সুমহান প্রশিক্ষণ কোর্সের মাধ্যমে রোজাদারগণ তাকওয়া অর্জনের এক অপূর্ব সুযোগ লাভ করে।
ঈমান ও সৎকর্ম চালু রাখা, সত্য ও ন্যায়ের সংরক্ষণ করা ব্যক্তি ও সমাজের জন্য অত্যন্ত কঠিন কাজ। এ কঠিন কাজকে সম্পাদনের জন্য ধৈর্য্য বা সবরের প্রয়োজন। পবিত্র রমজানের দীর্ঘ সীয়াম সাধনা ও সংযমের মাধ্যমে তা অর্জন করা সম্ভব। সীয়াম সাধনার ফলে যে মানবিক গুন অর্জিত হয় তা শুধু ব্যক্তির গুনই নয় বরং গুনটি কারও মধ্যে সৃষ্টি হলে সমাজ জীবনেও এর প্রভাব পড়ে অর্থাৎ সামাজিক জীবনে উদ্দীপক হিসেবে কাজ করতে পারে।
হযরত আবু হোরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন নবীজী (সঃ) এরশাদ করেছেন রোজাদারের জন্য দুটি আনন্দ রয়েছে, একটি হচ্ছে তার ইফতারের সময় এবং দ্বিতীয়টি হচ্ছে তার প্রতিপালকের সাথে সাক্ষাতের সময়। (বোখারী শরীফ)।
রোজা একজন রোজাদারকে যাবতীয় পানাহার ও পাপাচার থেকে রক্ষার ক্ষেত্রে সহযোগীতা করে এজন্য হাদিসে বলা হয়েছে রোজা মুমিনের জন্য ঢালস্বরূপ। নবীজী (সঃ) বলেছেন রোজা অবস্থায় যদি তোমাকে কেউ গালি দেয় অথবা ঝগড়া করে তবে তাকে বলো যে আমি রোজাদার আমি তোমার সঙ্গে ঝগড়া করবো না। রমজান মাসের রোজা পালনের মাধ্যমে আত্মার পরিশুদ্ধি ঘটিয়ে নিজেকে বদলিয়ে ফেলার এক অসাধারণ সুযোগ দিয়েছেন আল্লাহ্ তা’আলা।
এছাড়া রোজার রয়েছে অনেক সামাজিক উপকারিতা। রমজান মাসে সমাজে অপরাধ কমে যায়। রমজান মাসে সামাজিক সম্প্রীতি বৃদ্ধি পায়। রমজানের ইফতার কালচার মানুষে মানুষে সম্পর্কের চমৎকার উন্নতি হয়। আশেপাশের ও সমাজের অভাবী মানুষের প্রতি সহানুভূতি প্রকাশের একটা উত্তম সুযোগ সৃষ্টি করে দেয় রমজান মাস। আধুনিক বিজ্ঞানের সাম্প্রতিক এক গবেষণা থেকে জানা যায় রোজার কারনে মানুষের মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। রোজা অবস্থায় মানুষের মস্তিষ্কের কোষগুলো বাড়তে থাকে। রোজার কারনে মানুষের চিন্তাশক্তির ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। রোজাদারের ক্ষতিকর এলডিএল কোলেস্টরেল এর মাত্রা কমে যায় এবং এইচ ডি এল কোলেস্টরেল এর মাত্রা বেড়ে যায়। শরীরের অভ্যন্তরে জমাটবাঁধা চর্বি ঝরে যায়। আখেরাতেও রয়েছে রোজাদারের জন্য ভিআইপি মর্যাদা। রোজাদারদের জন্য জান্নাতে প্রবেশ করার জন্য রাইয়ান নামে একটি বিশেষ দরজা থাকবে। শুধুমাত্র রোজাদারগণ সে দরজা দিয়ে বিশেষ সম্মানে জান্নাতে প্রবেশ করবেন।
রমজানের তাৎপর্য আমাদের প্রত্যেকেরই গভীরভাবে উপলব্ধি করা আবশ্যক। সিয়াম সাধনার শিক্ষা ও এর মাধ্যমে অর্জিত জীবনবোধ যদি জীবনাচরনে প্রতিফলিত হয় তাহলে ব্যক্তি পরিবার ও সামাজিক জীবনে শান্তি প্রতিষ্ঠিত হবে। রমজান সর্বক্ষেত্রে আমাদের সংযমী হওয়ার শিক্ষা দেয়। নিজেকে মুত্তাকী হিসেবে গড়ে তোলার জন্য এ শিক্ষা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। পবিত্র মাসে সংযমের এ শিক্ষাকে ব্যক্তি বা পারিবারিক জীবনেও কাজে লাগাতে হবে। পরিবার পরিজন, আত্মীয় স্বজন এবং অপর মানুষের সাথে আচার আচরণের ক্ষেত্রেও দরদী হতে হবে। জীবন থেকে অসহিষ্ণুতার মনোভাবকে ঝেড়ে ফেলতে হবে। রসুল সঃ বলেছেন যে লোক স্ত্রীর দূর্ব্যবহারে সবর এখতিয়ার করবে সে হযরত আইয়ূব (আঃ) এর ন্যায় পুরস্কার পাবে। আর যে মহিলা স্বামীর দূর্ব্যবহারে ধৈর্য্য ধারণ করবে সে ফেরআউনের স্ত্রী আছিয়ার ন্যায় পুরস্কার প্রাপ্ত হবে। সিয়াম সাধনাকে কাজে লাগিয়ে নিজের পারিবারিক জীবনকেও সমৃদ্ধ করতে হবে।
রমজান শেষে রোজাদারদের জন্য আসে মহাখুশীর ঈদ। ঈদ আরবী শব্দ যার অর্থ আনন্দ বা খুশী। ঈদুল ফিতরের অর্থ স্বাভাবিকতায় প্রত্যাবর্তনের উৎসব। মুসলমানরা দীর্ঘ এক মাস রোজা রাখার পরে ঈদুল ফিতরের দিন থেকে স্বাভাবিকতায় ফিরে আসেন। হযরত ওয়াহাব ইবনে মুনাবেবহ থেকে বর্ণিত ঈদের দিনগুলোতে শয়তান চিৎকার করে কাঁদতে থাকে। কান্নার অবস্থা দেখে অন্যান্য শয়তান জিজ্ঞেস করে হে আমাদের সরদার, আপনার এ করুন অবস্থা কেন? তখন শয়তান উত্তর দেয় আজকে ঈদের দিন আল্লাহ-তাআলা উম্মতে মুহাম্মদীকে মাফ করে দিয়েছেন। এখন তোমাদের কর্তব্য হলো উম্মতে মুহাম্মদীকে দুনিয়ার লোভ লালসা দেখিয়ে আখেরাতের ব্যাপারে গাফিল করে দেওয়া।
হযরত ওয়াহাব ইবনে মুনাবিবহ (রাঃ) ঈদের দিন কাঁদছিলেন, কারন জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন আজ খুশীর দিন ঐ ব্যক্তির জন্য যার রোজা কবুল হয়েছে। ঈদুল ফিতর হলো পুরষ্কার লাভের দিন।
লেখাটি শেষ করতে চাই হযরত লুকমান(আ:) তাঁর ছেলেকে যে উপদেশ দিয়েছিলেন তা দিয়ে, উপদেশাবলী হলো-
১. তুমি কারও উপকার করলে তা গোপন রাখবে।
২. তোমার উপর যদি কেউ জুলুম করে তা গোপন রাখবে, কারও কাছে প্রকাশ করবে না।
৩. মৃত্যুকে কখনো ভুলবে না।
৪. মহান আল্লাহ্ তা’আলাকে কখনো ভুলবে না।
৫. দিলকে বা আত্মাকে সব সময় হেফাজত রাখবে।
৬. জবানের হেফাজত করবে।
৭. পেটকে হারাম থেকে হেফাজত করবে।
৮. চোখের হেফাজত করবে।
উপরোক্ত ৮টি উপদেশ মেনে চললে তাকওয়াপূর্ণ জীবন যাপন করা সম্ভব।
মহান আল্লাহ আমাদের সবাইকে পরিপূর্ণ ঈমান ও ইখলাছের সঙ্গে রোজা রাখার তওফিক দিন এবং পবিত্র রমজান ও রোজার পূর্ণ ফজিলত আমাদের দান করুন । লেখক ব্যাংকার ও কলামিষ্ট এবং আইন কর্মকর্তা(এসপিও) পূবালী ব্যাংক লিঃ আঞ্চলিক কার্যালয়, মৌলভীবাজার।
মন্তব্য করুন