রাজনগরের কিংবদন্তি মেজর জেনারেল (অব:) বীর মুক্তিযোদ্ধা এম এ রব আর নেই

আউয়াল কালাম বেগ : মৌলভীবাজার রাজনগরের কৃতি সন্তান ৪ নং সেক্টর ‘ক’ এর সাব সেক্টর কমান্ডার মরহুম মেজর জেনারেল (অব:) বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আব্দুর রব (পিএসসি) আমাদের মাঝে আর নেই। (ইন্নাইলাহি ওয়া ইন্নাইলাহি রাজিউন) ২ মার্চ ২০২৫ (শনিবার) দীর্ঘদিন অসুস্থ থেকে ঢাকা সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে ইন্তেকাল করেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮১ বছর।
তিনি স্ত্রী, তিন পুত্র সন্তান সহ অসংখ্য আত্মীয় স্বজন গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। ৫ মার্চ ২০২৫ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় ঢাকা বনানী কবরস্থানে উনাকে দাফন করা হয়। দাফনের আগে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সম্মান গার্ড কর্তৃক রাষ্ট্রীয় মর্যাদাসহ সকল প্রক্রিয়া শেষ করে মোনাজাতের পর নিকট আত্বীয়র কাছে পতাকা হস্তান্তর করার পর দাফন কাজ সম্পন্ন করে বাংলােেদশ সেনাবাহিনী প্রধানের পক্ষে সেনাবাহিনীর শোক ঞ্জাপনকারী অফিসার নাসির আফজাল মরহুমের কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
মরহুম মোহাম্মদ আব্দুর রব এর সংক্ষিপ্ত জীবনী ১৯৪৩-২০২৫ মৌলভীবাজার জেলার রাজনগর উপজেলার সদর ইউনিয়ন মশরিয়া গ্রামে এক সম্ভ্রান্তশালী মুসলিম পরিবারের মরহুম হাজী কোরবান আলী ও মাতা মরহুমা আয়শা বেগমের ঘর আলোকিত করে ২২ মার্চ ১৯৪৩ সালে জন্মগ্রহন করেন। উনার নানা বাড়ি একই ইউনিয়নের পাটানটুলা গ্রামের বেগ বাড়ী। রাজনগর পোর্টিয়াস উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা থেকে তাঁর কর্মময় জীবন শুরু হয়। পরবর্তীতে তিনি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে যোগদান করেন।
১৯৬৬ সালে ৫ জুন তিনি আর্মি সার্ভিস করে ২৯ সাপ্লাই ট্রান্সফোর্ট ব্যাটলিয়ানে যোগদান করেন। তৎকালীন পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে তিনি কমিশন প্রাপ্ত হন। ইউনিট প্রশিক্ষণের দায়িত্ব প্রাপ্ত অফিসার হিসেবে গৌরবান্বিত হন। আপার উদ্যাম সম্ভাবনার সাক্ষর রাখেন। ১৯৭১ সালের মার্চে সেনাবাহীনিতে তিনি ক্যাপ্টেন থাকা অবস্থায় ছুটিতে বাংলাদেশে আসার পর, মুক্তিযুদ্ধ ঘোষণা হলে পাকিস্তানে তাঁর কর্মস্থলে না গিয়ে ভারতে চলে যান এবং ৪ নম্বর সেক্টর ‘ক’ এর সাব কমান্ডার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন ক্যাপটেন মোহাম্মদ আব্দুর রব। ১৯৯৬ সালে মেজর জেনারেল হিসাবে চাকরি থেকে অবসর নেন তিনি। বর্ণাঢ্য কর্মজীবনে জাহানাবাদ ক্যন্টনমেনট, খুলনার কমানডেনট, ডাইরেক্টর অব ডিজিএফআই, সুপ্রিম কমান্ড হেড কোয়ার্টারস, বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা কল্যান ট্রাস্ট এর চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ হকি ফেডারেশনের চেয়ারম্যান, জীবন বীমা কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান, ডাইরেক্টর অব বাংলাদেশ ওরডিনেন্স হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। অবসর নিয়ে তার মাতার নামে “আয়েশা মেেমারিয়াল হসপিটাল “মহাখালী ঢাকা নির্মাণ করেন। এছাড়াও টঙ্গীতে ইন্টারন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ অফ বাংলাদেশ এবং ইন্টারন্যাশনাল নার্সিং কলেজ অফ বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করেন ।
মন্তব্য করুন