রাজনগরের চিরচেনা সাদা মনের মানুষ শহীদ মেম্বার আর আমাদের মাঝে নেই
মোস্তাক চৌধুরী॥ রাজনগর উপজেলার মুন্সিবাজার ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক সফল মেম্বার জেলা জাসদ নেতা আব্দুস শহীদ আর আমাদের মাঝে নেই, ৬ আগষ্ট রবিবার মরহুমের প্রথম নামাজে জানাজা বিকেল ২.০০ ঘটিকার সময় তিনির গ্রামের বাড়ি মেদিনী মহলে অনুষ্ঠিত হয়, দিত্বীয় নামাজে জানাজা সুন্সীবাজারের হজরত কাজী খন্দকার (র:) এর মাজারে সাড়ে তিন ঘটিকার সময় অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত মরহুমের নামাজের জানাজায় লোকে লোকারন্য হয়ে উঠে। জানাজায় রাজনগর উপজেলা চেয়ারম্যান উপজেলা আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক আছকির খান, জেলা জাসদ, সাধারণ সম্পাদক হাজী নাজিম উদ্দিন নজরুল, রাজনগর উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি সাবেক উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মিছবাউদোজ্জা বেলাই, জেলা জাসদ নেতা জামাল উদ্দিন, সেলিম আহমেদ রাজনগর উপজেলা জাসদ সভাপতি হুমায়ুন কবির ময়ূন , সাধারণ সম্পাদক, মোস্তাক চৌধুরী মুন্সীবাজার ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান সাতির মিয়া, রফিকুল ইসলাম, আব্দুল মন্নান, বর্তমান চেয়ারম্যান ছালেক আহমেদ, সহ বিভিন্ন সামাজিক, রাজনৈতিক ও ব্যবসায়িক নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। মুন্সীবাজার ইউনিয়নের গন মানুষের জননেতা আব্দুস শহীদের অকাল মৃত্যুতে তার রুহের মাগফেরাত কামনা করে বিবৃতি দিয়েছেন গন প্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্যমন্ত্রি জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু, সাধারণ সম্পাদক শিরিন আক্তার, রাজনগর মৌলভীবাজার আসনের সংসদ সদস্য সায়রা মহসীন এমপি, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আজিজুর রহমান, সদস্য রাকিবা সুলতানা, যুক্তরাজ্য জাসদের সাধারণ সম্পাদক নূরে আলম জিকু, জেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক নেছার আহমদ, জেলা জাসদ সভাপতি আব্দুল হক প্রমুখ।
গন মানুষের নেতা আব্দুস শহীদ জেলা জাসদের সদস্য, রাজনগর উপাজেলা জাসদের সহ সভাপতি ও মুন্সিবাজার ইউনিয়ন জাসদের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি আপাদ মস্তক একজন সৎ সত্যবাদী, পরোপকারী ব্যাক্তি ছিলেন, তিনি মুন্সীবাজার ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার নির্বাচিত হলে সততা ও দক্ষতার সাতে সেই দায়িত্ব পালন করেছেন। দির্ঘদিন তিনি মেদিনী মহল লতিফিয়া দাখিল মাদ্রাসা ও মেদিনী মহল শাহী ঈদগাহের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। তিনি মুন্সীবাজার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়াম্যান পদে প্রার্থী হলে সামান্য ভোটের ব্যবধানে একাদিকবারের নির্বাচিত চেয়ারম্যান সাতির মিয়ার সাথে পরাজিত হন।
তিনি সমাজ সেবায় মুন্সীবাজারের দুঃখি মানুষের একমাত্র ভরসাস্থল ছিলেন। তিনি সব সময় চাইতেন দল, মত, পথ, নির্বিশেষে দেশের জন্য কাজ করতে তিনি সাদাকে সাদা আর কালোকে কালো বলতেন। তার স্বপ্ন ছিল মুন্সীবাজার ইউনিয়নকে দারিদ্র ও নিরক্ষর মুক্ত একটি আধুনিক মডেল ইউনিয়নে রুপান্তরিত করতে প্রান পন চেষ্টা করে গেছেন। মেদিনী মহল লতিফিয়া দাখিল মাদ্রাসাটিকে প্রতিষ্ঠিত করতে প্রানপন চেষ্টা করে গেছেন, মেদিনী মহল জনতা উচ্চ বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠায় তিনি আমাদের সাথে রাতকে দিন করে কাজ করেছেন, নিদনপুর কমিউনিটি ক্লিনিক প্রতিষ্ঠা করতে আমার সঙ্গে অনেকদিন রাজনগর গেছেন, মেদিনী মহল সড়কটি পাকাকরণ করতে আমার সাথে অনেক দিন আমাদের প্রয়াত মন্ত্রি সৈয়দ মহসীন আলীর বাড়িতে গিয়েছিলেন, তিনি আজ আর আমাদের মাঝে নেই। তবে বেঁচে থাকবেন তিনির কর্মের মধ্যে মেদিনীমহল লতিফিয়া মাদ্রাসা, জনতা উচ্চ বিদ্যালয়, নিদনপুর কমিউনিটি ক্লিনিক, মেদিনীমহল শাহী ঈদগাহ এর উন্নয়ন সহ অত্র এলাকার সকল উন্নয়ন কর্মকান্ডের মধ্যে। তিনি বেঁচে থাকবেন চিরদিন, চির অম্লান হয়ে। উন্নয়ন মূলক কর্মকান্ড সহ সামাজিক কর্মকান্ডের মধ্যে তিনি বেঁচে আছেন, বেঁছে থাকবেন চির স্মরনীয় হয়ে।
তিনি আজ আর আমাদের মধ্যে নেই, এ শুন্যতার পূরন হবার নয়, আমি মেম্বার থাকাবস্থায় আমার সকল কর্মকান্ড তিনিকে নিয়েই করেছি। তিনি আমাকে সব সময় সহযোগিতা করেছেন। তিনি একজন প্রকৃত সমাজসেবক ও সাদা মনের মানুষ ছিলেন। সব সময় মানুষের সুঃখে দুঃখে পাশে থাকার চেষ্টা করতেন। বয়সে তিনি আমার ৫-৭ বৎসরের বড় হলেও চলতাম একসাথে, চলতে চলতে একসময় সহপাঠী হয়ে যাই, স্কুল, কলেজ, রাজনীতি, সমাজনীতি, একসাতেই ছিলাম, অনেক বৎসর কাটালাম, তিনির চেয়ারম্যানি নির্বাচন করলাম। অন্যায় আমি সহ্য করতে পারতাম না, বেজালে জড়িয়ে পরতাম, আর তিনি মিটমাট করে দিতেন। স্কুল জীবন থেকে রাজনীতি জীবন পর্যন্ত এরকমই চলেছে। এইতো কয়েকদিন পূর্বে তিনি যখন মরনব্যাধী ক্যান্সারে মারাত্মক আক্রান্ত হয়ে ঢাকা থেকে ফিরে আসেন বাড়ীতে, তখন তিনি কথা বলতে পারতেন না, ছেলেকে পাঠালেন আমার কাছে মধুকে দিয়ে, মৌলভীবাজার সরকারি কলেজে ভর্তি করবে বলে। আমি নজরুল ভাইকে বলে ভর্তি করে দিলাম, মারাত্মক অসুখ হওয়ার পরে আমি একদিন ঢাকায় গিয়ে দেখা করেছি এবং একদিন বাড়িতেও গিয়েছিলাম, সেই মুছকি হাসি দিয়ে আমার সংঙ্গে আর কথা বলেননি, শুধু চেয়ে চেয়ে দেখেছেন। আমার ভালো লাগেনি চলে আসলাম। তিনির সাথে আর আড্ডা হবে না, চলা বসা হবে না, অনেক দূরে চলে গেছেন, না ফেরার দেশে,তিনির এ অকালে চলে যাওয়ায় বড় কষ্ঠ দেয়, ধুমরে মুছরে যায় মনটি, কি করব তিনিত আর ফিরে আসবেন না। তিনিকে বিদায় দিয়ে আসলাম। তিনির এ চির বিদায় শান্তিময় হোক, তার শোক সম্মত পরিবার যেন শোক সইবার শক্তি দেন পরম করুময়।
মন্তব্য করুন