রাজনগরে ইউএনওর হস্তক্ষেপে বাল্য বিয়ে পন্ড কনের পিতাকে ১ মাসের জেল

December 6, 2016,

রাজনগর প্রতিনিধি॥ রাজনগর উপজেলার উত্তরভাগে জেএসসি পরীক্ষার্থির বিয়ে দেয়া ও অর্থের বিনিময়ে মিথ্যা তথ্য দিয়ে জন্মসনদ নেয়ায় কনের পিতাকে এক মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমান আদালত।
৫ ডিসেম্বর সোমবার বিকাল সাড়ে চারটার সময় তার কার্যালয়ে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করে এ দন্ড দেয়া হয়। এদিকে ভ্রাম্যমান আদালত চলাকালে উত্তরভাগ ইউপি সচিব সুজিত লাল দাশকে আদালত থেকে ফোন করে জন্মসনদ রেজিষ্টার ও আবেদন ফরম নিয়ে আদালতে হাজির হওয়ার জন্য বললে তিনি অসৌজনমূলক আচরণ করেন। বিষয়টি জেলা প্রশাসককে জানানো হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার কার্যলয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার উত্তরভাগ ইউনিয়নের লালাপুর গ্রামে ফেঞ্চুগঞ্জের মাহমুমুদস সামাদ-ফারজানা চৌধুরী গার্লস হাই স্কুলের জেএসসি পরীক্ষার্থীর বাল্য বিয়ে অনুষ্ঠিত হবে বলে গত দুই দিন পূর্বে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে ফোন আসে। তিনি বিষয়টি স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানকে জানিয়ে এটি বন্ধ করার জন্য বলেন। চেয়ারম্যান শদিুজ্জান ছালিক মেয়ের বাবাকে অপরিণত বয়সে বিয়ে না দেয়ার জন্য বলেন। কিন্তু সোমবার মেয়ের বাবা আবির মিয়া আমলে না নিয়ে বিয়ের আয়োজন চালিয়ে যান। বিষয়টি জানতে পেরে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ শরিফুল ইসলাম স্থানীয় চেয়াম্যানকে বিয়ে বন্ধ করে কনে ও তার পিতাকে নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে নিয়ে আসার জন্য বলেন। বিকালে চেয়ারম্যান তাদেরকে নির্বার্হী অফিসারের কার্যালয়ে নিয়ে আসেন।
এদিকে ওই ছাত্রীর জেএসসির রেজিষ্ট্রেশন কার্ড অনুযায়ী ৮ম শ্রেনীর এ ছাত্রীর বিয়ের বয়স না হওয়ায় কনের পিতা আবির মিয়া উত্তরভাগ ইউপি সচিবের সঙ্গে অবৈধ লেনদেনের মাধ্যমে ১৮ বছর দেখিয়ে ২৪ নভেম্বর একটি ভূয়া জন্ম সনদ ইস্যু করেন। এটি দেখে উপজেলা নির্বাহী অফিসার এক্সিকিউটিভ ম্যজিস্ট্রেট মোহাম্মদ শরিফুল ইসলাম স্থানীয় ইউপি সচিবকে জন্মসনদ রেজিষ্ট্রার ও ওই ছাত্রীর আবেদন ফরম নিয়ে আসার জন্য বলেন। এতে ইউপি সচিব সুজিত লাল দাশ ক্ষিপ্ত হয়ে তিনি আসতে পারবেন না বলে জানান। উপজেলা নির্বাহী অফিসার তার পরিচয় দেয়ার পরও ইউপি সচিব আসতে পারবেন না বলে জানিয়ে দেন এবং ইউএনওকে যা পারেন করে নেয়ার জন্য বলেন।
এব্যাপারে জানতে ইউপি সচিব সুজিত লাল দাশের মোবাইল ফোনে বেশ কয়েকবার ফোন করলেও তিনি রিসিভ করেন নি।
রাজনগর উপজেলা নিবাহী অফিসার মোহাম্মদ শরিফুল ইসলাম বলেন, তথ্য গোপন করে ভুয়া জন্মসনদ নিয়ে বাল্যবিয়ে দেয়ার অপরাধে এক মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ড দেয়া হয়েছে। ইউপি সচিবের বিষয়টি জেলা প্রশাসক মহোদয়কে জানানো হয়েছে। বিধি মোতাবেক ব্যবস্থ্যা নেয়া হবে বলে তিনি আশ^াস দিয়েছেন।

সংবাদটি শেয়ার করতে নিচের “আপনার প্রিয় শেয়ার বাটনটিতে ক্লিক করুন”

মন্তব্য করুন

Social Media Auto Publish Powered By : XYZScripts.com