রাজনগরে টানা বর্ষণ ও পাহাড়ী ঢলে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত ৪০ গ্রামের ১৫ হাজার মানুষ পানিবন্দী
শংকর দুলাল দেব॥ মৌলভীবাজারের রাজনগরে টানা বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এতে উপজেলার উত্তরভাগ, ফতেহপুর, কামারচাক, টেংরা ও মন্সীবাজার ইউনিয়নের ৪০টি গ্রামের ১৫ হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন। উপজেলার প্রধান নদী মনু ও কুশিয়ারার বিভিন্ন স্থানে ভাঙনের আশংকা রয়েছে। ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে উভয় নদী পাড়ের শতাধিক পরিবার।
সরেজমিনে ঘুরে ও স্থানীয় লোকজনের সাথে কথা বলে জানা গেছে, মনু ও কুশিয়ারা নদীর উজানে ভারতের আসাম, ধর্মনগর, কৈলাশহর সহ বেশ কয়েকটি এলাকায় প্রবল বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে মৌলভীবাজারের রাজনগরে মনু ও কুশিয়ারা নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। শ্রীমঙ্গলস্থ মৌলভীবাজার আবহওয়া অফিস জানায় গত ২৪ ঘন্টায় মোট ৩৩.২ মি:মি: বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। চলতি সপ্তাহে মাঝারি থেকে ভারি বর্ষণ অব্যাহত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। গত তিনদিনের টানা বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলে রাজনগরের ৫টি ইউনিয়নের ৪০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এতে এসব এলাকার প্রায় ১৫ হাজার মানুষ পানিবন্ধি হয়ে পড়েছেন। এছাড়াও পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় নতুন করে আরো ১৫/২০ টি গ্রাম প্লাবিত হওয়ার আশংকা রয়েছে। বেশ কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পানি ঢুকে পড়ায় এসব প্রতিষ্ঠানের পাঠদান কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। মনু নদীর আদিনাবাদ এলাকা ও কুশিয়ারা নদীর আব্দুল্লাহপুর নামক স্থানে ভাঙনের আশংকা রয়েছে। কুশিয়ারা প্রতিরক্ষা বাঁধের বেশ কয়েকটি স্থানে ভাঙন সৃষ্টি হয়েছে। উভয় এলাকার মানুষ ভাঙন রোধে চেষ্ঠা চালিয়ে যাচ্ছেন। পাশাপাশি সম্ভাব্য দূর্যোগ প্রতিরোধে উপজেলা প্রশাসন ১৭ জুন বিভাগীয় ৮ জন কর্মকর্তার সমন্বয়ে দুর্যোগ মোকাবেলায় কন্টোল রুম স্থাপন করেছেন। সম্প্রতি উপজেলা চেয়ারম্যান, উপজেলা নির্বাহী অফিসার, জনপ্রতিনিধি ও উপজেলা আওয়ামীলীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ এসব এলাকা পরিদর্শন করেছেন। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এ পর্যন্ত দুর্গত ২শ টি পরিবারের মধ্যে শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়াও দুর্গত মানুষদের আরো ত্রাণ সহায়তার জন্য উপজেলা প্রশাসন কাজ করে যাচ্ছে বলে জানা যায়।
রাজনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) বাবলু সূত্রধর জানান, দুর্গত এলাকা পরিদর্শন করেছি এবং দুর্গত মানুষের সাথে কথা বলেছি। এ পর্যন্ত ২শ টি পরিবারকে শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে। দূর্গতদের পর্যাপ্ত ত্রাণ সহায়তার জন্য জেলা প্রশাসক মহোদয়ের সাথে কথা বলেছি। দ্রুত তাদের যথাযত সহযোগিতার ব্যবস্থা করা হবে। এছাড়াও দুর্গতদের স্বার্থে যা করার সব ব্যবস্থা করা হবে।
মন্তব্য করুন