রাজনগরে নববধুর রহস্যজনক মৃত্যু : আটক-২

March 19, 2018,

আউয়াল কালাম বেগ॥  প্রেমিকের হাত ধরে পালিয়ে এসে বিয়ে করেছিলেন উপজেলার টেংরা ইউনিয়নের সালন গ্রামের নাজিম মিয়ার মেয়ে রিমা বেগম (১৮)। কিন্তু মেহেদীর রং শুকানোর আগেই তার স্বপ্ন ভেঙ্গে চুরমার হয়ে যায়।

স্বামীর পরিবারের লোকজন বলছেন, রিমা গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। এদিকে রিমার বাপের বাড়ির লোকজনের অভিযোগ তাকে শ^াস রোধে হত্যা করা হয়েছে। ঘটনাটি ঘটে ১৮মার্চ রোববার দুপুরে রাজনগর উপজেলার পরিষদের পার্শবর্তী পদিনাপুর গ্রামের বারিক মিয়ার কলোনিতে।

নিহতের পরিবার ও রাজনগর থানা পুলিশ সূত্রে জানাযায়, মৌলভীবারের রাজনগর উপজেলার টেংরা ইউনিয়নের সালন গ্রামের নাজিম মিয়ার মেয়ে রিমা বেগমের (১৮) সম্পর্ক ছিল মনসুরনগর ইউনিয়নের পরচক্র গ্রামের করিম মিয়ার ছেলে ইলেক্ট্রিক মিস্ত্রী পাভেল মিয়ার (২২) সঙ্গে। মোবাইল ফোনে পরিচয়ের পর দীর্ঘদিন কথাবার্তার এক পর্যায়ে উভয়ে প্রেমে জড়িয়ে পড়ে।

দেড় মাস আগে পাভেল মিয়ার সঙ্গে পালিয়ে যায় রিমা বেগম। পরবর্তিতে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সহায়তায় প্রেমিক-প্রেমিকার অভিভাবকরা আপোস-মিমাংসায় রাজি হওয়ায় কাজী এনে তাদের বিয়ে পড়িয়ে দেয়া হয়। বিয়ের পর প্রেমিক পাভেল মিয়া নববধু রিমা বেগম ও মা পারভীন বেগমকে নিয়ে উপজেলা পরিষদের পার্শবর্তী পদিনাপুর গ্রামের বারিক মিয়ার কলোনিতে বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস শুরু করেন। কিন্তু দেড় মাসের মাথায় রিমা বেগমের রহস্যজনক মৃত্যু হওয়ায় তার অভিভাবকরা দাবী করছেন- তাকে (রিমা বেগম) খুন করা হয়েছে।         

১৮ মার্চ রোববার দুপুরে ওই কলনীতে গিয়ে দেখা যায়, যে ঘরে পাভেল-রিমা পরিবার নিয়ে থাকত সে ঘরটি তালাবদ্ধ। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পাশের ঘরের এক মহিলা জানান, প্রতিদিনই পাভেলের অনুপস্থিতিতে বউ-শ্বাশুড়ির মধ্যে ঝগড়া হত এবং শাশুড়ী পুত্র বধুকে নির্যাতন করতেন। ঘটনার দিন সকালে ভাত খাওয়া নিয়ে রিমা ও তার শ্বাশুড়ির মধ্যে ঝগড়া হতে শুনেছেন।  

নিহতের খালা রুলি বগেম জানান, রিমা যদি গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করতো তাহলে তারা পুলিশকে খবর দিয়ে নিয়ে আসল না কেন। মৌলভীবাজার হাসপাতালে নিয়ে যাবার পর আমরা জেনেছি। রিমা আমাকে কয়েকদিন আগে ফোন দিয়ে বলেছিল, পাভেলের সাথে পালিয়ে আসায় প্রায়শই শ্বাশুড়ি তাকে নির্যাতন করতো। রিমাকে ওরা হত্যা করেছে। আমরা মামলা করবো।

এ ব্যাপারে রাজনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শ্যামল বণিক জানান, গৃহবধুর লাশ মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে রাখা রয়েছে। সদর থানার পুলিশ লাশের ময়নাতদন্ত করছে। রিপোর্ট না পাওয়া পর্যন্ত বিস্তারিত কিছু বলা যাচ্ছে না। এ ব্যাপারে তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। এ ঘটনায় রিমার স্বামী পাভেল মিয়া ও শ্বাশুড়ি পারভীন বেগমকে আটক করা হয়েছে।

সংবাদটি শেয়ার করতে নিচের “আপনার প্রিয় শেয়ার বাটনটিতে ক্লিক করুন”

মন্তব্য করুন

Social Media Auto Publish Powered By : XYZScripts.com