রাজনগরে নারী ইউপি সদস্যেকে পুরুষ সদস্যের মারধরের প্রতিবাদে মানববন্ধন-স্মারকলিপি
রাজনগর প্রতিনিধি॥ রাজনগরে ৪০ দিনের কর্মসৃজনের কাজ চলাকালে টেংরা ইউনিয়নের নারী ইউপি সদস্যের ওপর হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন ও স্মারকলিপি দিয়েছেন নারী সদস্যরা।
২০ মার্চ সোমবার দুপুরে রাজনগর উপজেলা পরিষদের সামনে তারা এ মানববন্ধন করেন। এতে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ও দুই ইউপি চেয়ারম্যানও উপস্থিত ছিলেন। এদিকে গুরুতর আহত ইউপি সদস্য ইয়ারুন্নেছাকে সিলেট ওসমানী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ব্যাপারে রাজনগর থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে। তবে, অভিযুক্ত পুরুষ ইউপি সদস্য মারধরের বিষয়টি অস্বীকার করেছেন।
স্মারকলিপি ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রবিবার উপজেলার টেংরা ইউনিয়নের ৪, ৫ ও ৬ নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত আসনের নারী সদস্য ইয়ারুন্নেছা বেগম চাউরুলি-পন্ডিতনগর রাস্তায় ৪০ দিনের কর্মসৃজনের কর্মীদের দিয়ে মাটির কাজ করাচ্ছিলেন। স্থানীয় ইউপি সদস্য ইলিয়াছুর রহমান কর্মসৃজনের এ কাজে বারবার বাধার সৃষ্টি করছেন বলে ওই নারী সদস্য উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও চেয়ারম্যানকে জানান বলে অভিযোগ করা হয়। এদিকে ইউপি সদস্য ইলিয়াছুর রহমান রমজান যথাযথ কাজ না হওয়া ও নির্ধারিত শ্রমিকদের দিয়ে কাজ করানো হচ্ছে না বলে লিখিত অভিযোগ দেন উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে। এমতাবস্তায় গত রোববার ওই রাস্তায় কাজ চলাকালে ইউপি সদস্য তার লোকজন নিয়ে বাধার সৃষ্টি করেন। এসময় উভয় পক্ষের মধ্যে কথাকাটাকাটির এক পর্যায়ে নারী ইউপি সদস্য ইয়ারুন্নেছাকে শারিরিক মারধর ও নির্যাতন করেন। এতে তিনি গুরুতর আহত হলে প্রথমে তাকে মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যার হাসপাতাল ও পরে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এ ঘটনার প্রতিবাদে রাজনগর উপজেলা পরিষদের সামনে মানববন্ধন ও স্মারকলিপি দিয়েছে রাজনগর উপজেলা নারী উন্নয়ন ফোরাম। সোমবার দুপুরে মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ডলি বেগম, টেংরা ইউনিয়নের চেয়াম্যান টিপু খান, উত্তরভাগ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শাহ সাহিদুজ্জামান ছালিক, নারী উন্নয়ন ফোরামের সাধারণ সম্পাদক ইউপি সদস্য সেলিনা বেগম। পরে তারা রাজনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের হাতে স্মারকলিপি দেন।
ইউপি সদস্য ইলিয়াছুর রহমান রমযান নারী সদস্যকে মারধরের বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, উক্ত ওয়ার্ডে কর্মসৃজনের কাজে অনিয়মসহ টাকা হরিলুটের পায়তারা হচ্ছে দীর্ঘদিন থেকে আমি এর প্রতিবাদ করছি এ ব্যাপারে লিখিত জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবরে। ঘটনার দিন ইয়ারুন্নেছা বেগম যথাযথভাবে কাজ করাছেন না। যে শ্রমিকদের দিয়ে কাজ করানোর কথা তাদের বাদ দিয়ে কুলাউড়ার ৭-৮ জন শ্রমিককে দিয়ে কাজ করাচ্ছেন। আমি তার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।
টেংরা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বলেন, কাজে অভিযোগ থাকলে তিনি যথাযথ কর্তৃপক্ষকে জানাবেন। একজন নারী সদস্যের গায়ে হাত তুলা অন্যায়। ওই নারী সদস্য এখন জীবন সংকটে আছেন।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ শরিফুল ইসলাম বলেন, আমি অভিযোগ পেয়েছি। এ ব্যাপারে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
মন্তব্য করুন