রাজনগরে প্রবল বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে ২৮ গ্রাম প্লাবিত মনু কুশিয়ারার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় বন্যার আশংকা
শংকর দুলাল দেব॥ মৌলভীবাজারের রাজনগরে প্রবল বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে উপজেলার দুদিকে বহমান মনু ও কুশিয়ারা নদীর পানি বিপদ সীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে সাধারণ মানুষের মধ্যে বন্যার আশংকা দেখা দিয়েছে। দুটি নদীর বিভিন্ন স্থানে ভাঙ্গন সৃষ্টি হয়েছে। অব্যাহত বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে ইতোমধ্যে প্লাবিত হয়েছে বিস্তীর্ন এলাকা।
উপজেলার নদী তীরবর্তী বিভিন্ন এলাকা সরেজমিনে ঘুরে স্থানীয় লোকজনের সাথে কথা বলে জানা গেছে, কয়েক দিন যাবৎ প্রবল বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে উপজেলার দুদিকে বহমান মনু ও কুশিয়ারা নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। অব্যাহত বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে ইতোমধ্যে উপজেলার ফতেহপুর, টেংরা, উত্তরভাগ, কামারচাক ও রাজনগর সদর ইউনিয়নের বিস্তীর্ন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। মনু ও কুশিয়ারা নদীর বিভিন্ন স্থানে ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। অব্যাহত বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে উপজেলার প্লাবিত এলাকা গুলো হচ্ছে- ফতেহপুর ইউনিয়নের জাহিদপুর, চরকারপাড়, আব্দুল্লাহপুর, রশিদপুর, কাশিমপুর, সোনালুয়া, শাহপুর, বেড়কুড়ি, লামা বিলবাড়ি, সাদাপুর, তুলাপুর, উত্তরভাগ ইউনিয়নের ছিক্কাগ্রাম, কামালপুর, নয়াটিলা, আমনপুর, সুরিখাল, জুগিকোনা, কেশরপাড়া, সোনামপুর, উমরপুর, কান্দিগাঁও, রুস্তমপুর, রাজনগর সদর ইউনিয়নের নন্দীউড়া, ভূজবল, কামারচাক ইউনিয়নের পঞ্চানন্দপুর, হাটি করাইয়া, তেঘরি, টেংরা ইউনিয়নের রাউবাড়ি। প্লাবিত এসব এলাকায় খাবার পানি, গোখাদ্য সহ নানান সমস্যা দেখা দিয়েছে। অব্যাহত বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে বাড়িঘর প্লাবিত হওয়ায় দুর্গত এলাকার লোকজন কষ্টকরে নিজ বাড়িতে অবস্থান করলেও মনু ও কুশিয়ারা নদীর পানি অব্যাহত বৃদ্ধির কারণে বন্যার আশংকায় রয়েছেন অসহায় লোকজন।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে উভয় নদীর প্রতিরক্ষা বাঁধের বিভিন্ন স্থানে ভাঙ্গনের সৃষ্টি হলে মৌলভীবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) কর্তৃপক্ষ তা প্রতিরোধে যথা সময়ে ব্যবস্থা নেয়না। ফলে নদী তীরবর্তী মানুষজন বর্ষা মৌসুমে চরম আশংকায় দিনাতিপাত করেন এবং সঠিক সময়ে ভাঙ্গন রোদ না কয়ায় অনেকের বাড়িঘর নদী ভাঙ্গনের স্বীকার হয়্।
আব্দুল্লাহপুর গ্রামের ইউপি সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিমল দাশ(৭০) জানান, এলাকার লোকজন নিয়ে নদীভাঙ্গন প্রতিরোধে কাজ করে যাচ্ছি। ইতোপূর্বে নিজে উদ্যোগ নিয়ে দুটি ভাঙ্গন মেরামত করেছি। এরপরও শুধু ফতেহপুর ইউনিয়নে প্রায় ১১টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।
এব্যাপারে মৌলভীবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী জাবেদ ইকবাল জানান, মনু ও কুশিয়ারা নদীর ভাঙ্গন প্রতিরোধ মূলক কাজ চলমান রয়েছে। আপাতত বৃষ্টির জন্য কাজ বন্ধ রয়েছে। ইতোমধ্যে উভয় নদীর বেশ কয়েকটি স্থানে ভাঙ্গন মেরামত করা হয়েছে এবং নদী তীরবর্তী এলাকার ইউপি সদস্যদের নিকট ভাঙ্গন প্রতিরোধক জিও ও সিনথেটিক বেগ হস্তান্তর করা হয়েছে। ভাঙ্গন প্রতিরোধে সব ধরণের ব্যবস্থা অব্যাহত থাকবে।
মন্তব্য করুন