রাজনগরে বাড়ছে যক্ষা রোগীর সংখ্যা
রাজনগর সংবাদদাতা॥ মৌলভীবাজার জেলার রাজনগর উপজেলার চা বাগানগুলোতে যক্ষা রোগীর সংখ্যা দিনে দিনে বাড়ছে। এক বছরে এ উপজেলায় শিশুসহ ৪৬৫ জন যক্ষায় আক্রান্ত রোগী শনাক্ত করা হয়েছে। এসব রোগীর বেশির ভাগই চা বাগান এলাকার। এসব এলাকায় এই রোগ সম্পর্কে সচেতনতার অভাব থাকায় আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্যমতে, যক্ষা শনাক্তে গত বছরের জানুয়ারী-ডিসেম্বর পর্যন্ত এ উপজেলার উদনা, ইটা, ইন্দানগর, রাজনগর, উত্তরভাগ, করিমপুর, মাথিউড়া চা বাগানসহ ১৪ টি বাগান ও উপজেলার বিভিন্ন এলাকার ২৬৭৬ জনকে বিভিন্ন পরীক্ষা করা হলে ৪৬৫ জন যক্ষা আক্রান্ত রোগী পাওয়া যায়। এদের মধ্যে কফে জীবানুযুক্ত ২৫২ জন, এক্স-রে পরীক্ষায় ১৪৫ জন ও ফুসফুসের বাহিরে আক্রান্ত ৫৬ জন রোগী রয়েছে। আক্রান্তদের মধ্যে ১৮ জন শিশুও রয়েছে। চিকিৎসা নেয়ার পর পূনরায় আক্রান্ত হয়েছেন ১২ জন। বর্তমানে এ উপজেলার ২১৩ জন রোগীকে যক্ষা রোগের চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
যক্ষা ঝুঁকিপ্রবণ চা বাগানগুলোতে মানুষ সচেতন না হওয়ায় এ রোগ আরো বাড়ছে বলে মনে করছেন চিকিৎসকরা। আক্রান্ত রোগীদের সংস্পর্শে থাকা শিশুরাও রয়েছে ঝুঁকিতে। এসব এলাকার রোগীদের সচেতন করতে সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থা কাজ করছে। চা বাগানগুলোতে যক্ষা নির্মূলে বেসরকারি সংস্থা হীড বাংলাদেশ ও সীমান্তিক কাজ করছে।
২৪ মার্চ শুক্রবার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সম্মেলন কক্ষে জাতীয় যক্ষা নিয়ন্ত্রন কর্মসূচী ও হীড বাংলাদেশের যৌথ আয়োজনে বিশ্ব যক্ষা দিবসের আলোচনা সভায় এসব তথ্য জানান হীড বাংলাদেশের ল্যাব টেকনেশিয়ান নিখিল মালাকার। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আরএমও রাসমিনা আক্তারের সভাপতিত্বে এতে প্রধান অতিথি ছিলেন উপজেলা চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা আছকির খান। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন ডা. দুলাল বণিক, হাসপাতালের এইচআই জয়নাল আবেদীন, ফিল্ড ইনচার্জ হরিপদ দেব প্রমুখ।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আরএমও রাসমিনা আক্তার বলেন, “যক্ষা রোগে চা বাগান এলাকার মানুষ বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে। এসব এলাকায় বেশি মানুষ এ রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। হাঁচি-কাশির মাধ্যমে এ রোগ দ্রুত ছড়াচ্ছে। তবে রোগ প্রতিরোধের উপায় সম্পর্কে সচেতন করা গেলে আক্রান্তের সংখ্যা কমে আসবে।”
মন্তব্য করুন