রাজনগরে হঠাৎ করে ভয়াবহ বিদ্যুৎ বিপর্যয় ব্যবসা-বানিজ্য ও অফিসিয়াল কার্যক্রমে ধস
শংকর দুলাল দেব॥ রাজনগরে হঠাৎ করে ভয়াবহ বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের সৃষ্ঠি হয়েছে। যথাযত বরাদ্ধ পাওয়ার পরও দৈনিক ৮ থেকে ১০ ঘন্টা বিদ্যুৎ বিহীন অবস্থায় চরম ভূগান্তির মধ্যে দিনাতিপাত করতে হচ্ছে রাজনগর বাসীকে। প্রচন্ড গরমের মধ্যে অনাকাঙ্খিত এ বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের কারণে জনজীবন বিপর্যস্থ হয়ে পড়েছে। ব্যবসা-বানিজ্য ও বিভিন্ন সরকারী বেসরকারী অফিসিয়াল কার্যকমে দেখা দিয়েছে ধস। হঠাৎ করে এ বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের ব্যাপারে রাজনগর পল্লী বিদ্যুৎ অফিস সুনির্দিষ্ট কোন কারণ ব্যাখ্যা করতে পারেনি। এতে বিক্ষোব্ধ হয়েছে উঠছে সর্বস্তরের মানুষ।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগ কিংবা সুনির্দিষ্ট কোন কারণ ছাড়াই হঠাৎ করে রাজনগরে ভয়াবহ বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের সৃষ্ঠি হয়েছে। প্রচন্ড গরমের মধ্যে রাজনগরে পল্লীবিদ্যুতের সরবরাহ ব্যবস্থা একেবারেই ভেঙ্গে পড়েছে। শিক্ষাবর্ষের মাঝামাঝি স্কুলগামী কোমলমতি শিক্ষার্থীদের চলতি অর্ধ্ববার্ষিক পরীক্ষার মধ্যে চরম অন্তরায় সৃষ্টি করেছে অনাকাঙ্খিত এ বিদ্যুৎ বিপর্যয়। শিক্ষার্থীরা রাতে পড়ালেখা করতে পারছেনা। ব্যবসায়-বানিজ্য ও সরকারী বেসরকারী বিভিন্ন অফিসের অফিসিয়াল কাজকর্মে ধস নেমেছে। ডিজিটালাইজ ব্যাংক-বীমা সহ বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়ায় ভোগান্তিতে পড়েছেন অসহায় সেবা গ্রহিতা সাধারণ মানুষ। প্রতিদিন ৮ থেকে ১০ ঘন্টা বিদ্যুৎ না থাকায় রাজনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের রোগীদের অবস্থা কাহিল। এ ব্যাপারে রাজনগর পল্লী বিদ্যুৎ অফিস সুনির্দিষ্ট কোন কারণ ব্যাখ্যা করতে পারেনি। এ অবস্থায় রাজনগরের সর্বস্তরের মানুষের মধ্যে চরম ক্ষোভের সৃষ্ঠি হয়েছে। রাজনগরের বিভিন্ন বিদ্যুৎ গ্রাহক অভিযোগ করে বলেন, সরকার দফায় দফায় বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি করলেও রাজনগরের বিদ্যুৎ সেবার কোন অগ্রগতি নেই। বরং দিনদিন রাজনগরের বিদ্যুৎ সেবায় ধস নামছে। এছাড়াও রাজনগর বিদ্যুৎ বিভাগের লাইনম্যান ও অফিসিয়ালদের বিরূদ্ধে গ্রাহকদের সাথে অশালিন-দুর্ব্যবহার করার মত রয়েছে গুরতর অভিযোগ। অফিসে সেল ও ল্যান্ডফোন সংযোগ থাকলে অফিসিয়ালরা তা ধরেননা।
এ বিষয়ে রাজনগরের বিশিষ্ঠ ব্যবসায়ী নরুল ইসলাম বাবর বলেন, বর্তমানে বিদ্যুতের যে অবস্থা তার দ্রুত সমাধান না করলে রাজনগরে ব্যবসা-বানিজ্য গুটিয়ে ফেলতে হবে। ব্যাংক-বীমা সহ অনলাইন নির্ভর বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠানে অচলাবস্থার সৃষ্ঠি হওয়ায় সাধারণ মানুষ চরম ভোগান্তিতে পড়েছে। সাধারণ মানুষ বিক্ষোব্ধ হয়ে কিছু করে ফেললে এর দায় কে নেবে। এ অবস্থা চলতে থাকলে রাজনগরের বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থা ভয়াবহ রুপ ধারণ করবে।
এ ব্যাপারে রাজনগর পল্লীবিদ্যুৎ অফিসের এজিএম মোস্তাফিজুর রহমান জানান, বর্তমানে রাজনগরে প্রায় ৭শ কিমি বিদ্যুৎ লাইন রয়েছে। নতুন করে আরো সংযোগ দেয়া হচ্ছে। গ্রাহক রয়েছেন প্রায় ১৯ হাজার। গ্রাহক বৃদ্ধির সাথে চাহিদাও বাড়ছে। বর্তমানে রাজনগরে প্রতি দিনের বিদ্যুৎ চাহিদা রয়েছে সাড়ে ৯ মেগাওয়াট। ফেঞ্চুগঞ্জ বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র থেকে রাজনগরের জন্য প্রতিদিন চাহিদা অনুযায়ী বরাদ্ধও দেয়া হচ্ছে। বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের ব্যাপারে তিনি বলেন, অনেক সময় ১১কেভি ডিস্ট্রিভিউশন লাইনে গাছপালা পড়ে লাইন বন্ধ হয়ে যায়। সরবরাহ লাইনেও ঘনঘন ত্রুটি দেখা দিচ্ছে। লাইন মেরামতের জন্য বিদ্যুৎ কানেকশন বন্ধ রাখতে হয়। প্রকৃত পক্ষে তা বিদ্যুৎ বিপর্যয় বলা যাবেনা। তিনি বলেন, দিনের চাইতে রাতে চাহিদা বেশী থাকে। তবে শীঘ্রই রাজনগরে কোন লোড শেডিং থাকবে না বলে তিনি জানান।
মন্তব্য করুন