রাজনগরে ১০ টাকা চাল বিতরনের তালিকায় অনিয়ম
রাজনগর প্রতিনিধি॥ মৌলভীবাজারের রাজনগর উপজেলায় ২নং উত্তর ভাগ ইউনিয়নে হতদরিদ্রদেও জন্য সরকার নির্ধারিত মূল্যে কার্ডের মাধ্যমে খাদ্য শস্য বিতরন কার্যক্রমে চরম অনিয়ম ধরা পড়েছে। উপজেলার ইউনিয়ন গুলো চলতি অক্টোবর মাস থেকে চাল বিতরণ শুরু করেছে। তালিকা তৈরির অনিয়মের কারনে ৮৯৮ জন সুবিধাভোগীর মাঝে শুধু ১২ জনের নাম তালিকায় স্তান পেয়েছে। বাদ পড়েছে অনেক ভিক্ষুক ও দিন মজুর। এদিকে তালিকা তৈরিতে চরম অনিয়ম, দুর্নীতি ও দলীয়করনের অভিযোগ উঠেছে। ইউনিয়ন পরিষদের সচিব কোন চিঠি পায় নি। মেম্বারদের তালিকা তৈরিতে অন্তর্ভূক্ত ছাড়াই তালিকা প্রণয়ন করা হয়েছে। তথ্যানুসান্ধানে জানা যায়, ইউনিয়ন পর্যায়ে হত দরিদ্রদের ইউনিয়নওয়ারি তালিকা প্রণয়নের করে ২০ আগষ্ট ১৬ ইং তারিখের মধ্যে উপজেলা নির্বাহী অফিসারে কার্যালয়ে প্রেরনের নির্দেশ প্রদান করা হয়। কিন্তু রহস্য জনক কারণে ২৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চিঠি উত্তরভাগ ইউপি সচিবের নিকট পৌঁছেনি। ২৫ সেপ্টেম্বর ইউনিয়ন পরিষদের একটি মিটিং এ চেয়ারম্যান শাহ শাহিদুজ্জামান ছালিক হতদরিদ্রর তালিকা পরিষদের মেম্বারদের নিকট তুলে ধরেন এবং স্বাক্ষর করতে অনুরোধ করেন। প্রচুর হট্রগুলের পর চেয়ারম্যানের অনুরোধে মেম্বার গন স্বাক্ষর করেন। ৮ নং ওয়ার্ড মেম্বার জুয়েল আহমদ স্বাক্ষর করেননি। এব্যাপারে ২ নং উত্তরভাগ ইউপি সচিব সুজিত লাল দাস প্রতিবেদককে জানান, তিনি উপজেলা নির্বাহী অফিসারের অফিস থেকে কোন চিঠি পাননি। যে কারনে হতদরিদ্র তালিকার বিষয়ে মিটিং আহব্বান করেন নাই। এব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ শরিফুল ইসলামের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলে ফোন রিসিভ করেননি। ইউপির ৮ নং ওর্য়াডের হতদরিদ্র কার্ড নাম্বার ৬৫৮ সত্যেন্দ্র দেবনাত স্বচ্ছল ব্যাক্তি, পাকা ঘর বাড়ি, নুপুর বেগম (কার্ড নাম্বার ৬৮৬) ছেলে প্রবাসি, বাবুল চন্দ্র দাস (কার্ড নাম্বার ৬৫৫) ব্যবসায়ী, করুনাময় নাথ (কার্ড নাম্বার ৬৬৩) ছেলে প্রবাসি ও স্বাবলম্বী কৃষক, শাহ ছাখাওয়াত আলী (কার্ড নাম্বার ৬৬৭) একজন ন্বাবলম্বী লোক, অখিল দাস (কার্ড নাম্বার ৬৭৩) অন্য ভাতাভোগী, মাখন বিবি (কার্ড নাম্বার ৬৭৮) অন্য ভাতাভোগী, জরিনা বেগম (কার্ড নাম্বার ৬৮০) তালিকায় নাম রয়েছে কিন্তু তিনি চাউল পান নাই, জমিরুন্নেছা (কার্ড নাম্বার ৬৮১) অন্য ভাতাভোগী, কর্মজিত দে (কার্ড নাম্বার ৬৮৬) একজন ব্যবসায়ী, মুক্তি রাণি (কার্ড নাম্বার ৬৪৭) মাসিক বরাদ্বের চাল পান হতদরিদ্রের ১০ টাকা কেজি চালের কার্ড পেয়েছেন। ৮নং ওয়ার্ড মেম্বার জুয়েল আহমদ প্রতিবেদককে জানান, ইউনিয়ন পরিষদের কোন মেম্বার কে না জানিয়ে তালিকা তৈরি করা হয়েছে। ২৫ সেপ্টম্বর চেয়ারম্যান ইউনিয়নের একটি মিটিং এ হতদরিদ্রের তালিকায় স্বাক্ষও করার অনুরোধ করলে সকল মেম্বাররা প্রতিবাদ করেন। পরে চেয়ারম্যাননের বিশেষ অনুরোধে অন্যরা স্বাক্ষর করলেও তিনি করেন নি। তার ওয়ার্ডের তালিকায় যথেষ্ট অনিয়ম রয়েছে। এলাকার ব্যবসায়ী নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ব্যবসায়ী, ডাক্তার,অত্র ইউপি ছাত্র লীগের সাবেক যুগ্ম আহব্বায়ক মখলু মিয়া সহ অনেকের অভিযোগ হতদরিদ্রদের তালিকায় যথেষ্ট অনিয়ম রয়েছে। ইউপি মেম্বাররা তালিকা করেন নাই স্বাক্ষর করেছেন বলে স্বীকার করেছেন। কমিটির সদস্য বাতির মিয়া ও বিষয়টির সত্যতা স্বীকার করেন। কমিটির সভাপতি উপ সহকারী প্রকৌশলী মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম বলেন, এ ব্যাপারটি ইউপি চেয়ারম্যান বলতে পারবেন। ইউপি চেয়ারম্যান শাহ শাহিদুজ্জামান ছালিক তালিকার অনিয়ম, দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতির কথা স্বীকার করেন নি। তবে দলীয় প্রভাব ও দাপট দেখিয়ে তথ্য প্রদান কারীর উপর ক্ষিপ্ত হন। এতে করে মাঠে মারা যাচ্ছে সরকারের দশ টাকার কেজি চাল বিতরনের মহতি উদ্যোগ।
মন্তব্য করুন