রাজনগরে ১০ টাকা দরের চাল চোরাইপথে বিক্রি, থানায় মামলা খাদ্যনিয়ন্ত্রককে প্রাণনাশের হুমকি
রাজনগর সংবাদদাতা॥ মৌলভীবাজারের রাজনগরে খাদ্য বান্ধব কর্মসূচীর ১০ টাকা কেজি দরের চাল চোরাই পথে বিক্রির ও উপজেলা খাদ্যনিয়ন্ত্রককে প্রাণনাশের হুমকির দায়ে ডিলারের বিরোদ্ধে মামলা করেছেন উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক। এ সময় অবৈধভাবে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির চালও উদ্ধার করা হয়।
মামলার সূত্রে জানা যায়, রাজনগর উপজেলার মনসুরনগর ইউনিয়নের বিচইনকীর্তি গ্রামের মো. সেলিম (৫৫) উপজেলা খাদ্যবান্ধব কর্মসূচীর একজন ডিলার। তার অধিনে ২৪৯ জন কার্ডধারী হতদরিদ্র রয়েছেন।
২০১৬ সালের অক্টোবর মাস থেকে এসব হতদরিদ্রদের মাঝে চাল বিতরণ করা হচ্ছে। চলতি এপ্রিল মাসে ওই কার্ডধারীদের কাছে ১০ টাকা দরে বিতরণের জন্য ৭ হাজার ৪শ’ ৭০ কেজি চাল বরাদ্দ দেয়া হয়। ১৪ এপ্রিল ওই চাল পুরোটাই বিতরণ করা শেষ হয়েছে বলে ডিলার মো. সেলিম উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক বিনয় কুমার দেবকে জানান। কিন্তু কার্ডধারীদের মাঝে চাল বিতরণ শেষ হলেও ওই ডিলারের অধীনে থাকা অনেকেই খাদ্যবান্ধবের চাল পান নি।
এ নিয়ে বৃহস্পতিবার কার্ডধারী কয়েকজন স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মিলন বখতের কাছে অভিযোগ করেন। তিনি বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রককে জানান। এ ব্যাপারে লিখিত অভিযোগও দেয়া হয়। পরে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ শরিফুল ইসলাম বৃহস্পতিবার বিকালে ওই ডিলারের দোকানে ও বাড়িতে অভিযান চালালেও সেখানে কোনো চাল পাননি।
পরে ২১ এপ্রিল শুক্রবার সকালে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক বিনয় কুমার দেব ও খাদ্য পরিদর্শক আব্দুল্লাহ আল মামুন সিদ্দিক বিচাইনকীর্তি গ্রামের মজবুল মিয়ার বাড়িতে অভিযান চালিয়ে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচীর ১ বস্তা চাল উদ্ধার করেন। এ সময় উপজেলা খাদ্যনিয়ন্ত্রক বিষয়টি জানতে ডিলার মো. সেলিমকে ফোন করলে তিনি ঘটনাস্থলে গিয়ে তাকেসহ উপস্থিত স^াক্ষীদের প্রাণনাশের হুমকি দেন। এব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নির্দেশে রাজনগর থানায় ডিলার মো. সেলিম কে আসামী করে মামলা করা হয়েছে।
বিচাইনকীর্তি গ্রামের স্বপ্না বেগম ও আতাউর রহমান বলেন, আমরা প্রথম মাসে ৩০ কেজি চাল পেয়েছি। ওই সময় তিনি আমাদের কার্ড নিয়েনেন। আর ফেরত দেননি। পরবর্তী ৩ মাসে আমরা কোন চাল পাইনি। ডিলারের কাছে কার্ড চাইলেও তিনি তা দেন নি।
এব্যাপারে উপজেলা খাদ্যনিয়ন্ত্রক বিনয় কুমার দেব বলেন, অবৈধ ভাবে চাল বিক্রির অভিযোগ রয়েছিল তার বিরোদ্ধে। পরে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে শুক্রবার সকালে ১বস্তা চাল উদ্ধার করা হয়েছে। আমি থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ শরীফুল ইসলাম বলেন, খাদ্যবান্ধব কর্মসূচী মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ভাবমূর্তির বিষয়। এব্যাপারে কোন ছাড় দেয়া হবে না। উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
মন্তব্য করুন