রাজনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন হয়নি দুই দশকে
কুলাউড়া অফিস॥ সম্মেলন হয়েছিলো সেই দুই দশক আগে। এরই মধ্যে কমিটির সহ-সভাপতি, সম্পাদকম-লীর সদস্য ও সাধারণ সদস্যদের অনেকেই মৃত্যুবরণ করেছেন। অনেকে চলে গেছেন প্রবাসে। এলাকাও পরিবর্তন করেছেন কেউ কেউ। এই হলো মৌলভীবাজারের রাজনগর উপজেলা আওয়ামীলীগের দশা। দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীদের সাথে আলাপ করে জানা গেছে,কমিটির সভাও হয়নি আট-দশ বছরেও। এতে দলীয় কার্যক্রমে স্থবিরতা দেখা দিয়েছে।
উপজেলা আওয়ামীলীগের সর্বশেষ সম্মেলন হয়েছিলো ১৯৯৫ সালে। তখন ৩১ সদস্যবিশিষ্ট কমিটির সভাপতি নির্বাচিত হয়েছিলেন সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মিছবাহুদ্দোজা ভেলাই ও সাধারণ সম্পাদক হয়েছিলেন বর্তমান উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আছকির খান। ওই কমিটির নামেই এখনও দলের কার্যক্রম চলছে। নেতাকর্মীরা জানান, কমিটির পাঁচজন সহ-সভাপতির মধ্যে দু’জন আবদুল হামিদ খান ও আবদুল মতিন মারা গেছেন। আরেক সহ-সভাপতি শফিকুল ইসলাম চৌধুরী যুক্তরাজ্যে আছেন। যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবদুল লতিফ খান, কোষাধ্যক্ষ আব্দুর রইছ ওরফে তুঁতি মিয়া ও দপ্তর সম্পাদক নৃপেন্দ্র কুমার দেব মারা গেছেন। সদস্যদের মধ্যে মারা গেছেন আতাউর রহমান, আজির উদ্দিন ও ইসমাইল হোসেন।
দীর্ঘ আট-দশ বছর ধরে কমিটির সভা না হওয়ায় সাংগঠনিক কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়েছে। নতুন করে কেউ দলীয় কার্যক্রমে যুক্ত হতে পারছেন না। সাংগঠনিক কার্যক্রম না থাকায় অনেকেই নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েছেন বলে নেতাকর্মীরা মনে করছেন।
এ বিষয়ে উপজেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ফয়সল আহমদ জানান, বিগত প্রায় ১০ বছরের মধ্যে কমিটির কোনো সভা হয়নি। দলীয় কোনো কার্যক্রমও নেই। এমনকি জাতীয় দিবসগুলোতেও দলের উদ্যোগে কোনো কার্যক্রম হয় না। উপজেলা পরিষদের কার্যক্রমে দলের নেতাকর্মীরা অংশ নেন। সহযোগি সংগঠন ছাত্রলীগ ও যুবলীগ থেকে অনেক নতুন নেতা বের হচ্ছেন। কিন্তু দলের সম্মেলন না হওয়ায় তাঁরা কোথাও স্থান পাচ্ছেন না। সম্মেলন না হওয়ায় নতুন নেতৃত্ব সৃষ্টি হচ্ছে না।
এদিকে দলে জায়গা না পেয়ে উদীয়মান নেতাকর্মীরা ঝরে যাচ্ছেন বলে মনে করেন উপজেলা যুবলীগের সভাপতি ও মনসুরনগর ইউপি চেয়ারম্যান মিলন বখত। তিনি জানান,মনে হয় কমিটির ১২-১৩ জন আছেন। কেন্দ্র থেকে চিঠি আসে সম্মেলন করার জন্য। কিন্তু সম্মেলনের কোনো প্রক্রিয়া নেই। এখানে আওয়ামীলীগ আছে কি না, অনেকে জানেই না। সম্মেলন করে তাঁরাই (বর্তমান সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক) আবার প্রেসিডেন্ট-সেক্রেটারী হন, সমস্যা নেই।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি মিছবাহুদ্দোজা ভেলাই জানান, দলীয় সরকার ক্ষমতায় থাকায় কেউ বিষয়টিতে গা লাগায়নি। এজন্য এতোদিন সম্মেলন হয়নি। এখন সম্মেলন হবে। দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে মৌলভীবাজার জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক নেছার আহমদ জানান, উপজেলার আট ইউনিয়নের মধ্যে ছয়টি’র সম্মেলন হয়ে গেছে। বাকি দু’টির সম্মেলন হয়ে গেলে উপজেলা কমিটির সম্মেলন হবে। এতোদিন সম্মেলন করার ক্ষেত্রে কোনো প্রতিবন্ধকতা ছিলো না। এই করছি, করবো বলে সময় চলে গেছে।
মন্তব্য করুন