রেডিও পল্লীকণ্ঠের আয়োজনে আন্তর্জাতিক গ্রামীণ নারী দিবস পালিত
স্টাফ রিপোর্টার : আন্তর্জাতিক গ্রামীণ নারী দিবস রেডিও পল্লীকণ্ঠের আয়োজনে পালিত হয়েছে। গ্রামের নারীদের অধিকার আর সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রতিবছর এই দিনে পালিত হয় দিবসটি। এবারের দিবসের প্রতিপাদ্য হচ্ছে দুর্যোগে নারীর সুরক্ষায় দরকার সচেতনতা সৃষ্টি এবং সরকারের কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ।
মঙ্গলবার ১৫ অক্টোবর আন্তর্জাতিক গ্রামীণ নারী দিবস উপলক্ষে রেডিও পল্লীকণ্ঠের আয়োজনে আন্তর্জাতিক গ্রামীণ নারী দিবস উদযাপন কমিটির পক্ষ থেকে দিপালী দেবনাথকে সনদপত্র দেওয়া হয়।
দুই মেয়ে ও এক ছেলের জননী দিপালী দেবনাথের বাড়ি মাতার কাপন (নাথপাড়া) গ্রামে। বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার কারনে নিজের পড়াশোনা শেষ করতে না পারলেও তিন সন্তানকে উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত করেছেন। নিজের সংসার ও সন্তানদের সামলানোর পাশাপাশি একটি এনজিওতে চাকরি করতেন এই সংগ্রামী নারী। এছাড়াও স্বামীকে কৃষিকাজ ও গবাদিপশু পালনে সাহায্য করতেন। চাকরি চলে যাওয়ার পর দারিদ্রতার সম্মুখীন হন দিপালী। কিন্তু থেমে যাননি তিনি। স্বামীর সাথে শক্ত হাতে সংসারের হাল ধরেন। সংসার ও সন্তানদের পড়াশোনার ব্যয়ভার বহনের জন্য শুরু করেন হাঁসমুরগি পালন। এখন তিন সন্তানের মধ্যে বড় দুই মেয়ে পড়ালেখা শেষ করে চাকরিরত আছেন এবং ছেলে লেখাপড়া করছেন। দিপালী একজন সংস্কৃতিমনা মানুষ। ব্যস্ততার মাঝে অবসর পেলেই হারমোনিয়াম নিয়ে গান গাইতে ভালবাসেন। ধামাইল, রামপ্রসাদী ও বাউল গান তার খুব প্রিয়। এখন স্বামী-সন্তান নিয়ে সুখেই আছেন দিপালী।
এসময় উপস্থিত ছিলেন রেডিও পল্লীকণ্ঠের অনুষ্ঠান প্রযোজক পিংকি রানী দাস, সংবাদ প্রযোজক পলি রানী দেব নাথ, ভিডিও কন্টেন্ট ক্রিয়েটর হৃদয় সূত্রধর।
উল্লেখ্য, আন্তর্জাতিক গ্রামীণ নারী দিবস পালনের প্রস্তাব গৃহীত হয় ১৯৯৫ সালে। বেইজিংয়ে অনুষ্ঠিত জাতিসংঘের চতুর্থ নারী সম্মেলনে ১৫ অক্টোবরকে স্বীকৃতি দেয়া হয় বিশ্ব গ্রামীণ নারী দিবস হিসেবে। এরপর ১৯৯৭ সাল থেকে জেনেভাভিত্তিক একটি আন্তর্জাতিক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ‘উইমেনস ওয়ার্ল্ড সামিট ফাউন্ডেশন’ দিবসটি পালনের জন্য বিশ্বের বিভিন্ন দেশে উদ্বুদ্ধকরণ কর্মসূচি পালন করে।
সভ্যতা আর প্রযুক্তির দিক দিয়ে উন্নয়নের ধারায় পৃথিবী এগিয়ে গেলেও পিছিয়ে রয়েছে গ্রামের জনগোষ্ঠী। বিশেষ করে গ্রামের নারী সমাজ। দেশীয় নারী সংগঠন নারীদের অধিকার আদায়ে সোচ্চার হলেও প্রতিবাদের সুরে এখনও তাল মেলাতে পারেনি গ্রামের নারীরা। আর তাই তাদের জন্যই আজকের এই দিবসটি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ।
মন্তব্য করুন