রেফারেন্ডামের ভোটগ্রহন সম্পন্ন ফলাফলের প্রতীক্ষায় নির্ঘুম ব্রিটেন
মুনজের আহমদ চৌধুরী,যুক্তরাজ্য ॥ ব্রিটেনের ইউরোপে থাকা না-থাকার প্রশ্নে বহুল প্রতীক্ষিত রেফারেন্ডামের ভোটগ্রহন কিছুক্ষন আগে লন্ডন সময় বৃহস্পতিবার রাত ১০টায় সম্পন্ন হয়েছে। আজ ম্যানচেষ্টার থেকে ঘোষিত হবে নির্বাচনের ফলাফল।
আজ ঘোষিত এ জনরায়েই সূচিত হবে ব্রিটেনের আগামী দিনের পথচলা, রাজনীতি অর্থনীতির নতুন রুপরেখা। ফলাফলে ব্রিটেন ইউরোপ থেকে বেরিয়ে গেলে তাতে করে গত এক শতকের ইতিহাসে ব্রিটেনের সবচেয়ে ঐতিহাসিক ঘটনার পটভূমি হতে পারে এই ব্রেক্সিট। শুক্রবার ভোররাতে এ রির্পোট লেখা পর্যন্ত মিডিয়ার নানামুখী সমীকরন আর হিসেব নিকেশ চলে।
রাজনীতিসচেতন মানুষ নির্বাচন ঘিরে নানা বিশ্লেষন জানতে নির্ঘুম রাত কাটান টেলিভিশন স্ক্রীন আর অনলাইনে। বুধবার রাত পর্যন্ত সিদ্বান্তহীনতায় থাকা ভোটাররা এ নির্বাচনের ফলাফলে প্রভাবকের অন্যতম ভুমিকায় থাকবেন এমনটিই বলছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। এছাড়া রাজনৈতিক দলের সাথে সরাসরি সম্পৃক্ত নন এমন ভোটাররাও ভুমিকা রাখবেন অনেকটা দলীয় সিদ্বান্তের বৃত্ত ভেঙ্গে দেয়া এ ভোটে।
দিনভর প্রবল বৃষ্টি আর বৈরী আবহাওয়া উপেক্ষা করে গতকাল সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত প্রায় প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে ভোটারদের উপস্থিতি ছিল লক্ষনীয়। ব্রিটেনের গত জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও সদ্য সমাপ্ত লন্ডনের মেয়র নির্বাচনেও কেন্দ্রে কেন্দ্রে ভোটারদের এমন উপচে পড়া লাইন দেখা যায় নি। রাত সাড়ে নয়টার দিকে ক্রয়োডনের হোয়াইট হাউস জুনিয়র একাডেমী কেন্দ্রের ভেতরে দেখা যায়,ভোটারদের দীর্ঘ লাইন। ৪৬.০৫ মিলিয়ন রেজিষ্টার্ড ভোটার এবারের রেফারেন্ডামে ভোট প্রয়োগে নিজেদের নাম লিপিবদ্ধ করান। শেষ সময়ে এসেও আরো একদফা ভোটারদের ব্যাপক আগ্রহের কারনে বাড়ানো হয় রেজিষ্ট্রেশনের সময়।
ব্রিটেনের ইতিহাসে নানা কারনে সবচেয়ে গুরুত্বপুর্ন হয়ে উঠা এ রেফারেন্ডামের ফলাফল পেতে অপেক্ষা করতে হতে পারে শুক্রবার সকাল অবধি। চার মাস ধরে এ রেফারেন্ডামের মুল ক্যাম্পেইন চললেও মুলত গত জাতীয় নির্বাচনের আগ থেকেই ব্রিটেনের রাজনীতিতে ইউরোপে থাকা আর না থাকার প্রশ্নে এ রেফারেন্ডাম ঘিরে চলতে থাকে নানা সমীকরন।
এদিকে রেফারেন্ডাম ঘিরে বুধবার রাত থেকেই ফেসবুক,টুইটার সহ স্যোশাল মিডিয়ায় এবার স্বতস্ফুর্তভাবে নিজেদের মতামত জানাতে দেখা গেছে ব্রিটেনের বাংলাদেশী বংশোব্দুত ভোটারদের। ব্রেক্সিটের পক্ষে যেমন ছিল সুচিন্তিত মতামত তেমনি রিমেইনের পক্ষেও ছিল নানা বিশ্লেষন। ব্রিটেনের কনজারভেটিভ পার্টি বা লেবার পার্টির রাজনীতির সাথে জড়িত নন,এমন বিপুল একটি জনগোষ্ঠিও এবারের রেফারেন্ডাম ঘিরে রাজনৈতিক পরিস্থিতির চুলচেরা বিশ্লেষন করেই নিজেদের ভোট দিতে চেয়েছেন। ব্রিটেনের বাংলাদেশী বংশোব্দুত ভোটাররা বলেছেন, নিজেদের ব্যাক্তিগত লাভ আর ক্ষতি নয়,ব্রিটেনের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করেই ভোট দিয়েছেন তারা।
গতকাল প্রধানমন্ত্রী ক্যামেরন বলেছেন,ব্রিটেনের অর্থনৈতিক ও সার্বিক নিরাপত্তার কথা চিন্তা করেই রিমেইনের পক্ষেই থাকবে জনরায়। অন্যদিকে সাবেক লন্ডন মেয়র বরিস জনসন বলেছেন, ব্রেক্সিটের পক্ষে ভোট দিয়ে ব্রিটেনের স্বাধীনতার দিন হিসেবে দিনটিকে ঐতিহাসিক রুপ দেবেন ভোটাররা।
শুক্রবারের ফলাফল যে দিকেই যাক,দিন আজ ব্রিটেনের ইতিহাস নতুন করে গড়বার। দিন আজ নবযাত্রার।
মন্তব্য করুন