রোহিঙ্গা মুসলমানদের উপর বর্বর নির্যাতন: নিন্দা জানানোর ভাষা অভিধানে পরাজিত

November 19, 2016,

এহসান বিন মুজাহির॥ বার্মার মজলুম রোহিঙ্গা মুসলমানের কান্নায় পৃথিবীর আকাশ ভারি হয়ে ওঠছে। মুসলিম নারী-পুরুষ ও শিশুরা বাঁচাও বাঁচাও বলে আর্তচিৎকার করছে। মায়ানমারের বর্বর সরকার তাদের ওপর নির্যাতনের স্টিম রোলার চালাচ্ছে। হত্যা করছে অসংখ্য নিষ্পাপ শিশু, যুবক, বৃদ্ধাদের। ধর্ষণ করে কলঙ্কিত করছে অসংখ্য মা-বোনদের। বিধবা করছে হাজারো নারীদের। সন্তানহারা করছে অসংখ্য মাকে। মজলুম রোহিঙ্গা মুসলমানদের আহাজারিতে পৃথিবীর আকাশ বাতাস প্রকম্পিত হয়ে উঠছে। কোথায় আজ বিশ্ব মুসলমানদের সহযোগিতা ও ভ্রাতৃত্বের লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠিত সংস্থা ওআইসি। নীরব কেন আজ মানবাধিকার সংস্থা? নিশ্চুপ কেন জাতিসংঘ?। পৃথিবীতে দেড়শ কোটি মুসলমান থাকার পরও কেন দেশে-দেশে মুসলমানরা আজ নির্যাতিত? রোহিঙ্গাদের ওপর নির্মম নির্যাতন এটা পরিষ্কার করে দিয়েছে যে গোটা বিশ্বের অমুসলিম শক্তি আজ মুসলমানদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ। আমরা এখনও নিশ্চুপ! রোহিঙ্গা মুসলমানদের কিই বা দোষ ছিল, যার কারণে তাদের আজ নির্মম-জুলুম নির্যাতন ভোগ করতে হচ্ছে? কারণ একটাই ওরা যে মুসলমান।
মজলুম রোহিঙ্গাদের বিভৎস চেহারাগুলো দেখে কার চোখ না অশ্রুসিক্ত হবে? আপনার সামনে আপনার ভাই-বোন, মা-বাপ, ছেলেমেয়েদের যদি আগুনে পুড়িয়ে ছাই করে, শরীরের ওপর কামান তুলে মাথার মগজ বের করে ফেলে, চোখের সামনে তাজাদেহ দ্বিখন্ডিত করে ফেলে তখন আপনার কেমন লাগবে? আহ! বার্মার মুসলমানদের সাথে তাই করা হচ্ছে! জাতিসংঘ রোহিঙ্গা সম্প্রদায়কে বিশ্বের সবচেয়ে বর্বর নির্যাতনের শিকার জনগোষ্ঠী হিসেবে অভিহিত করেছে।
রাখাইন প্রদেশে সম্প্রতি শুরু হওয়া রোহিঙ্গাদের ওপর ভয়াবহ অত্যাচার-নির্যাতন চালাচ্ছে মিয়ানমার সরকার। মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশে বসবাসকারী আদিবাসী রোহিঙ্গা মুসলমানরা কয়েক দশক ধরে জাতিগত নিধনের শিকার হচ্ছে। তাদের নাগরিক হিসেবে স্বীকৃতি দিতেও অস্বীকার করে আসছে মিয়ানমার সরকার।
৮ অক্টোবর থেকে রোহিঙ্গা মুসলমারদের বিরুদ্ধে গণহত্যা অভিযান চালাচ্ছে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী, সীমান্তরক্ষী এবং সীমান্ত পুলিশ। বিবিসি, ইরাবদী, ডিবিভি এবং এএফসিহ সব মিডিয়া সংবাদ জানাচ্ছে রাখাইন প্রতিবেদক এবং সরকারি সূত্রের বরাতে। এমনটি তারা ২০১২ সালের রাষ্ট্রীয় নিপীড়নের সময়েও করেছিল। রোহিঙ্গারা মূলত মিয়ানমারের নাগরিক। ধর্মীয় পার্থক্য ও বৈপরীত্যের কারণেই রোহিঙ্গাদের উপর এমন নির্যাতন চালানো হচ্ছে। মুসলিম রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর সামরিক শক্তি নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে, অমানবিক এবং নৃশংস হত্যাকান্ডের মাধ্যমে মুসলমান শূন্য করার খেলায় মেতে উঠেছে। বিবিসির এক খবরে জানা যায় ৯ অক্টোবর থেকে ১৬ অক্টোবর পর্যন্ত এক সপ্তাহে মিয়ানমারে ৬৯ জন রোহিঙ্গা মুসলিমকে হত্যা করেছে দেশটির সেনাবাহিনী। বার্মিজ সরকারপন্থী পত্রিকা সূত্রে জানা  গেছে ৮টি মসজিদসহ ২০০০ রোহিঙ্গার ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। (দ্যা নিউ লাইট অব মায়নমার, ২৬ অক্টোবর)।
জাতিসংঘের তথ্যমতে রোহিঙ্গারা বিশ্বের সবচেয়ে বেশি ভাগ্যাহত জনগোষ্ঠী। শত শত বছর ধরে তারা নির্যাতিত ও নিপিড়ীত হচ্ছে। নির্যাতনের চিত্রগুলো বিশ্বমিডিয়ায় প্রকাশ পেয়েছে। নির্বিচারে হত্যা ও নারীদেরকে ধর্ষণের শিকার হতে হচ্ছে রোহিঙ্গাদের। সম্পত্তি জোর করে কেড়ে নেয়াসহ শিক্ষা ও স্বাস্থ্য সেবার সুযোগ দেয়া হয় না। তাদের সংখ্যা যাতে বাড়তে না পারে সে জন্য বিয়ে করার অনুমতি দেয়া হয় না। ধর্মীয় ইবাদ-বন্দেগী পালনেও বাঁধা দেয়া হয়। বৌদ্ধ রাখাইনদের টার্গেট হলো নিরস্ত্র রোহিঙ্গা মুসলিম জনগোষ্ঠীকে নির্যাতনের মাধ্যমে নির্মূল করা। সেই লক্ষ্যে স্থানীয় সরকার, কেন্দ্রীয় সরকার ও সেনাবাহিনী পরকল্পিতভাবে রোহিঙ্গাদেরকে দেশ থেকে বের করে দিতেই যত্যাযজ্ঞ চালাচ্ছে।
শুক্রবার ১৮ নভেম্বর দৈনিক যুগান্তরের আন্তর্জাতিক পাতায় রোহিঙ্গা মুসলমানরা মানবতাবিরোধী অপরাধের শিকার শিরোমে প্রকাশিত খবরে জানা যায়, মিয়ানমারের রোহিঙ্গা মুসলমানরা ভয়াবহ নির্যাতনের শিকার। মিয়ানমারে রোহিঙ্গা মুসলমানরা ব্যাপকহারে মানবতাবিরোধী অপরাধের শিকার হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন মিশরের আল আজহার বিশ্ববিদ্যালয়েল গ্রান্ড ইমাম ড. আহমেদ আল তাইয়েব। গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে গ্রান্ড ইমাম ড. তাইয়েব বলেন, মিয়ানমারে রোহিঙ্গা মুসলমানদের হত্যা ও বাড়িঘর পুড়িয়ে দেয়ার ঘটনা ঘটছে যা মানবতাবিরোধী অপরাধ। এসব নিষ্ঠুর কর্মকা- সব ধর্মের শিক্ষার বিরোধী ও আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী স্পষ্টতই অপরাধ। রাখাইন প্রদেশে সম্প্রতি শুরু হওয়া বিদ্রোহ দমনের অংশ হিসেবেই এই হামলা চালানো হয়েছে বলে  সেনাবাহিনী স্বীকারও করছে। আর রোহিঙ্গা সূত্রগুলো বলছে, শুধু হত্যা করেই শেষ নয়, সেনাবাহিনী  সেখানে মুসলিম জনগোষ্ঠীর উপর হত্যার পাশাপাশি রাখাইন সন্ত্রাসীরা এবং কতিপয় সেনাসদস্যরা রোহিঙ্গা মেয়েদের তুলে নিয়ে ধর্ষণ করছে। গ্রামের পর গ্রামও তারা জ্বালিয়ে দিয়েছে। অনেক  রোহিঙ্গা প্রাণভয়ে পালাচ্ছে সাগরে কিংবা জঙ্গলে, তবুও রক্ষা হচ্ছে না। ধর্মীয় পার্থক্য ও বৈপরীত্যের কারণেই রোহিঙ্গাদের ওপর মায়ানমারের সামরিক জান্তা, প্রশাসন ও বৌদ্ধ এবং সাম্রাজ্যবাদী গোষ্ঠীরা তাদের ওপর সীমাহীন জুলুম চালাচ্ছে।
রোহিঙ্গা পরিচিতি: উইকিপিডিয়া থেকে জানা যায় বর্তমান মায়ানমারের রোহিং (আরাকানের পুরনো নাম) এলাকায় এ জনগোষ্ঠীর বসবাস। ওরা ইসলাম ধর্মে দীক্ষিত। ইতিহাস ও ভূগোল বলছে, রাখাইন প্রদেশের উত্তর অংশে বাঙালি, পার্সিয়ান, তুর্কি, মোগল, আরবীয় ও পাঠানরা বঙ্গোপসাগরের উপকূল বরাবর বসতি স্থাপন করেছে। রাখাইনে দুটি সম্প্রদায়ের বসবাস ‘মগ’ ও ‘রোহিঙ্গা’। মগরা বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী। মগের মুল্লুক কথাটি বাংলাদেশে পরিচিত। দস্যুবৃত্তির কারণেই এমন নাম হয়েছে ‘মগ’দের। এক সময় তাদের দৌরাত্ম্য ঢাকা পর্যন্ত পৌঁছেছিল। মোগলরা তাদের তাড়া করে জঙ্গলে ফেরত পাঠায়। রোহিঙ্গাদের সম্পর্কে একটি প্রচলিত গল্প রয়েছে এভাবে যে সপ্তম শতাব্দীতে বঙ্গোপসাগরে ডুবে যাওয়া একটি জাহাজ থেকে বেঁচে যাওয়া লোকজন উপকূলে আশ্রয় নিয়ে বলেন, আল্লহর রহমে বেঁচে গেছি। এই রহম থেকেই এসেছে রোহিঙ্গা। তবে ওখানকার রাজসভার বাংলা সাহিত্যের লেখকরা ঐ রাজ্যকে রোসাং বা রোসাঙ্গ রাজ্য হিসাবে উল্লেখ করেছেন। মায়ানমারের রোহিঙ্গা মুসলমানগণ বিশ্বের সবচেয়ে ভাগ্যাহত জনগোষ্ঠী। এককালে যাদের ছিল স্বাধীন রাষ্ট্র, ক্ষমতা ও প্রভাব প্রতিপত্তি এখন তারাই সন্ত্রাসী বৌদ্ধদের অমানুষিক নির্যাতনের শিকার। মায়ানমারের মুসলিম জনগোষ্ঠীর ভাগ্য বিড়ম্বনার ইতিহাস যে কাউকে তাড়িত করবে। এই উপমহাদেশ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় সর্বপ্রথম যে কয়টি এলাকায় মুসলিম বসতি গড়ে ওঠে, আরাকান তার মধ্যে অন্যতম। রোহিঙ্গারা সেই আরাকানী মুসলমানের বংশধর। এক সময় আরাকানে স্বাধীন মুসলিম রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৪৩০ সালে প্রতিষ্ঠিত মুসলিম শাসন দুইশ বছরেরও অধিককাল স্থায়ী হয়। ১৬৩১ সাল থেকে ১৬৩৫ সাল পর্যন্ত আরাকানে ব্যাপক দুর্ভিক্ষ হয়। এরপর মুসলিম শাসনের অবসান ঘটে। ১৬৬০ সালে আরাকান রাজা থান্দথুধম্মা নিজ রাজ্যে আশ্রিত মোগল সাম্রাট শাহজাদা সুজাকে সপরিবারে হত্যা করে। এরপর শুরু হয় মুসলমানের ওপর তার নিষ্ঠুর অমানবিক অত্যাচার নিপীড়ন। প্রায় সাড়ে তিনশ বছর মুসলমানদের কাটাতে হয় এই দুর্বিষহ অবস্থার মধ্যে। ১৭৮০ সালে বর্মী রাজা বোধাপোয়া আরাকান দখল করে নেয়। সেও ছিল ঘোর মুসলিম বিদ্বেষী। বর্মী রাজা ঢালাওভাবে মুসলিম নিধন করতে থাকে। ১৮২৮ সালে বার্মা ইংরেজদের শাসনে চলে যায়। তবে ১৯৩৭ সালে বার্মা স্বায়ত্তশাসন লাভের পর বৌদ্ধদের পরিকল্পিত সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা ব্যাপক রূপ নেয় এবং তারা প্রায় ৩০ লাখ মুসলিম হত্যা করে। শত শত বছর ধরে তারা মায়ানমারে বাস করে এলেও মায়ানমার সরকার তাদের সেদেশের নাগরিক হিসেবে স্বীকৃতি দেয়নি। বলা হয় এরা বহিরাগত। ইতিহাস অনুসন্ধানে দেখা যায় এই উপমহাদেশ ও দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার মধ্যে সর্বপ্রথম গড়ে ওঠা মুসলিম বসতিওয়ালা প্রদেশের মধ্যে বর্তমানের আরাকান তথা রাখাইন প্রদেশ ছিল উল্লেখযোগ্য। ১৪৩০ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় আরাকানের স্বাধীন মুসলিম রাষ্ট্র। ২০০ বছরের বেশি সময় সেটা ছিল স্থায়ী। ১৬৩১ থেকে ১৬৩৫ পর্যন্ত আরাকান রাজ্য এক কঠিন দুর্ভিক্ষ দেখা দেয়। আর এই দুর্ভিক্ষই আরাকান থেকে মুসলিম প্রশাসকের পতন ঘটে। ১৯৮১ সালে মায়ানমারের সামরিক শাসনকর্তা আরাকান রাষ্ট্রের নাম পরিবর্তন করে রাখাইন প্রদেশ করে, এটা বুঝানো উদ্দেশ্য যে, এ রাজ্য বৌদ্ধ রাখাইন সম্প্রদায়ের, রোহিঙ্গা মুসলমানদের নয়। ১৯৮২ সালে মায়ানমারের সরকার রোহিঙ্গা মুসলিমদের নাগরিকত্ব বাতিল করে দেয় এবং সরকারিভাবে তাদের সেখানে ‘বসবাসকারী’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়। তাদের ভোটাধিকার নেই। নেই কোনো সাংবিধানিক ও সামাজিক অধিকার। নিজ দেশে পরবাসী তারা। তারা মায়ানমারের অন্য প্রদেশে অনুমতি ছাড়া যেতে পারে না। এক সময় যেখানে রোহিঙ্গারা ছিল সংখ্যাগুরু আজ সেখানে তারা সংখ্যালঘু। আজও রোহিঙ্গা সম্প্রদায় ভাগ্য বিড়ম্বনার শিকার। বার্মা বা মায়ানমার দেশটির রাখাইন রাজ্যে শত শত বছর ধরে বসবাসকারী রোহিঙ্গা জাতিগোষ্ঠীর অস্তিত্বকে অস্বীকার করছে এবং তাদের প্রতিবেশী বাংলাদেশ থেকে আসা বাঙালি অভিবাসী বলে চিহ্নিত করার চেষ্টা চালাচ্ছে।
রাখাইন রাজ্যে ১০ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা বসবাস করে। বার্মা সরকারের নির্যাতনের কারণে দেশ ত্যাগে বাধ্য হয়ে ৫ লক্ষের অধিক রোহিঙ্গা বাংলাদেশ এবং প্রায় ৫ লাখ সৌদিআরবে বাস করার একটি পরিসংখ্যান উইকিপিডিয়া থেকে জানা যায়। তাদের নাগরিকত্ব ও মৌলিক অধিকারকে অস্বীকার করছে মায়ানমার সরকার। বর্তমানে লক্ষাধিক রোহিঙ্গাকে বাড়িঘর থেকে উচ্ছেদ করে অভ্যন্তরীণ উদ্বাস্তু শিবিরে আটক অবস্থায় রয়েছে। মায়ানমারের সামরিক জান্তা তার অধিবাসী মুসলমানদের জন্য সে দেশকে জাহান্নামের অগ্নিকু-ে পরিণত করেছে। তাদের থেকে কেড়ে নেয়া হয়েছে উপার্জিত সব সম্পদের মালিকানা, নাগরিক অধিকার, মানবিক অধিকার, এমনকি বেঁচে থাকার অধিকারও। তাই তারা সমূহ বিপদের কথা জানার পরও মরিয়া হয়ে ছুটছে একটুখানি নিরাপদ ঠিকানার সন্ধানে। সর্বহারা এসব আদম সন্তান মৃত্যুর অপেক্ষায় আছে। বাংলাদেশ মায়ানমারের প্রতিবেশী দেশ হিসেবে মানবিক কারণেই মায়ানমারের মজলুম মুসলমানদের পাশে দাঁড়ানো আমাদের কর্তব্য।
শেষ কথা হচ্ছে, রোহিঙ্গারাও মানুষ, তারা আমাদের ভাই। রোহিঙ্গাদের বাঁচাতে, তাদের মানবিক ও নাগরিক অধিকার নিয়ে জাতিসঙ্ঘে অধিকারের আওয়াজ তুলতে হবে। রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব ফিরিয়ে দেয়ার পাশাপাশি মুসলিম নিধন বন্ধ করতে মায়ানমারের বর্বর সরকারকে বাধ্য করতে অগ্রণী ভুমিকা রাখতে হবে জাতিসংঘ ও আইসিকে।

সংবাদটি শেয়ার করতে নিচের “আপনার প্রিয় শেয়ার বাটনটিতে ক্লিক করুন”

মন্তব্য করুন

Social Media Auto Publish Powered By : XYZScripts.com