লেখিকা শিরিন আক্তারের ছোট গল্পের নতুন বই ‘যে যায় সে যায়’
এস এম মুকুল॥ ছোট ছোট গল্প তো নয়- যেন ছোট ছোট ঢেউ। ছোট গল্প লেখার মাঝে যে মাধুর্যতা, সাবলীলতা আর পাঠকের মনস্তাত্বিক মগ্নতার প্রয়োজন হয় লেখিকা শিরিন আক্তার সেই বিদ্যাটা ভালই জানেন। ‘কৈশোরের স্বপ্নপুরুষ’ আর ‘আফাল’-এর পর ২০১৭ অমর একুশে গ্রন্থমেলায় প্রকাশিত হয়েছে শিরিন আক্তারের ছোট গল্পের নতুন বই ‘যে যায় সে যায়’। উন্নয়ন সংস্থা এফআইভিডিবিতে উর্ধ্বতন পর্যায়ের কর্মকর্তার ব্যস্ততা তাঁকে মুটেও দমাতে পারেনি লেখনি জগতের ভালবাসা থেকে। আপাদমস্তক সুচিন্তার মানুসপটে প্রেম-প্রকৃতি আর যাপিত জীবনের নানান ঘাত-সংঘাতকে গল্পালাপের ছলে তিনি তুলে আনেন জীবনের মজ্জাগত মর্মবাণী। লেখিকার ভাষায় মানুষের মন এক উদাম, বল্গাহীন, দিগন্তহীন উঠোন। যেখানে সে স্বাধীন ও মুক্তমনা। চাওয়া-পাওয়,া আনন্দ-বেদনার দোলাচলে মানুষ কখনো অনেকের মাঝে একা। কখনোবা একাকীত্বের মাঝেও মনুষত্বের মহাশক্তিতে বলীয়ান হয়ে উঠে সে। তেমননি কিছু বোধ আর বাসনা সম্মিলনে “যে যায় সে যায়” শিরিন আক্তারের নতুন ছোট গল্পের বই। বিকারগ্রস্ত এক যুবতীর গল্প, দ্বিচারিণী, হাওর-বাঁওড়ের বিবাগী মন এবং ক্ষোভ মোট চারটি গল্প দিয়ে মলাট বাঁধাই বইটি পাঠকের মননশীলতার দরজা খুলবে। গল্পগুলোয় আবেগীয়, বিশ্লেষণী এবং পঠনে ধারাবাহিকতা পাঠকের জন্য আনন্দদায়ক হবে। মানুষের সূক্ষাতিসূক্ষ মনস্তাত্বিক বিষয়কে গল্পের চরিত্রায়নে তিনি এমনভাবে সন্নিবেশিত করেছেন যা পাঠকের মানবীয় বোধ আর উপলব্ধিকে উস্কে দিবে।
মানুষের মন কখনো দামাল বাতাসের মতোন ঝড় তোলে, ঢেউয়ের গর্জন তোলে। আবার কখনো নিঃঝ্ঝিম, হিম শীতল নিরবতায় হৃদয়াঙ্গম মিলন তীর্থতা জাগায় অথবা বেদনার সূর তোলে হাহাকার- একাকার করে ভাঙ্গাগড়ার খেলায় মাতে। সমাজ জীবনের বহুমাত্রিক রূপকে নানান ঢঙ্গে তিনি গল্পের সৃষ্টি করেছেন যার নাম দিয়েছেন- ‘যে যায় সে যায়’। সবগুলো গল্পই শক্ত গাঁথুনির আর বিদগ্ধ বাস্তবতার বক্রালয়ে সাবলিলভাবে উপস্থাপিত হয়েছে। গল্পগুলো ভাল লাগবে যে কারো। মনে প্রশ্ন জাগলে জাগতেও পারে আসলে কি -যে যায় সে কি শুধুই যায়, নাকি ফিরেও আসে কিংবা এমন কিছু কি রেখে যায়- স্মৃতির খাতায়! এক নিঃশ্বাসে পড়ে শেষ করার মত বই। লেখিকা শিরিন আক্তারের ‘যে যায় সে যায়’ বইটি পাওয়া যাবে বইমেলার চৈতন্য প্রকাশনীর ৬৩৪ও ৬৩৫ নং স্টলে।
অভিব্যক্তি : এস এম মুকুল, লেখক, কলামিস্ট ও বিশ্লেষক
মন্তব্য করুন