শিক্ষকের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ
হোসাইন আহমদ॥ কুলাউড়া উপজেলার রাউৎগাঁও উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মোঃ আব্দুস ছত্তার এর বিরুদ্ধে নানা অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এনিয়ে সংশ্লিষ্ট মহলে আলোচনা সমালোচনা চলছে। শিক্ষক আব্দুস ছত্তার নিজের অনিয়ম ধামাচাঁপা দেয়ার জন্য তিনি বিভিন্ন অসদোপায় অবলম্ভন করছেন। একাডেমীক সার্টিফিকেট অনুযায়ী উনার বাবার মৃত্যুর ৬ বছর পর তার জন্ম। হাস্যকর এ বিষয় নিয়ে জেলা ব্যাপী কৌতুহল সৃষ্টি হয়েছে।
অনুসন্ধানে জানাযায়, আব্দুস ছত্তার বিগত ১৯৮৪ সালে কুলাউড়া উপজেলার শ্রীপুর ফাজিল (ডিগ্রী) মাদ্রাসা থেকে দাখিল পরীক্ষায় উত্তির্ণ হন। ওই পরীক্ষার সার্টিফিকেট অনুযায়ী আব্দুস ছত্তার এর জন্ম তারিখ ২৪ এপ্রিল ১৯৭০ ইং। কিন্তু তার মা ছমিরুন নেছা ও বড় ভাই আব্দুর রহমান, আব্দুল গণি এবং আব্দুল মন্নান স্বাক্ষরিত রেজিষ্ট্রিকৃত দলিল অনুসন্ধানে জানাযায়, উনার পিতা আব্দুল্লাহ বিগত ১৯৬৪ সালে মারা গেছেন। ওই দলীল ও সার্টিফিকেটে প্রমাণিত হয় তার বাবা আব্দুল্লাহর মৃত্যুর ৬ বছর পর তার জন্ম হয়েছে!। দাখিলের সার্টিফিকেটে বাবার নাম মোঃ আবিদ আলী ছিল পরবর্তীতে গত ২০০৩ সালে এটা সংশোধন করে আব্দুল্লাহ লেখান। ওই শিক্ষক গত ২০০২ সালে মৌলভীবাজার টাউন কামিল মাদ্রাসা থেকে কামিল পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করে স্ত্রী নাছিমা বেগম এর সাথে পরীক্ষার খাতা বদল করার অপরাধে কর্তৃপক্ষ উভয়কে কেন্দ্র থেকে বরখাস্থ করেন।
সরেজমিন ২৩ ডিসেম্বর কুলাউড়া উপজেলার রাউৎগাঁও ইউনিয়নের পালগ্রামে গেলে দেখা হয়, বয়োজ্যৈষ্ট আব্বাস উল্যাহ, লেবু উল্যাহ, মধু মিয়া, আইয়ুব আলী, আব্দুল খালিক, আরশাদ আলী, সাইস্তা মিয়া, লতিব মিয়া ও মানিক মিয়া’র সাথে। তারা সকলে বলেন, একই গ্রামের পার্শ্ববর্তী বাড়ির আব্দুস ছত্তার জাল দলিলের মাধ্যমে এলাকার অধিকাংশ লোকের জায়গা দখল করার চেষ্টা করছেন। যে জায়গা গুলো ১৯৬৪ সালে ঊনার বাবার মৃত্যুর পর মা ছমিরুন নেছা ও বড় ভাই আব্দুর রহমান (সৎভাই) স্বাক্ষরিত দলিলের মাধ্যমে বিক্রি করেন। ঐ দলীলে স্বাক্ষী ছিলেন ঊনার সৎ ভাই আব্দুল গণি, সহোদর ভাই আব্দুল মন্নান এবং তৎকালিন গ্রামের মুরব্বি হাজী নোয়াব উল্যাহ। বিক্রিত ওই জায়গাসহ অন্যান্য জায়গা জাল দলিল করে পূনরায় দখল করার জন্য তিনি নানা পায়তারা চালাচ্ছেন।
এবিষয়ে ভোক্তভুগিরা বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করলেও আজ পর্যন্ত কোন সমাধান পাননি। ভোক্তভুগি মোঃ আব্দুর রব বলেন, আব্দুস ছত্তার একজন ধর্মীয় শিক্ষক হয়েও অনিয়মের আশ্রয় নিয়ে বিক্রিত জায়গাগুলো ভূয়া দলীলের মাধ্যমে দখল করার চেষ্টা করছেন। তিনি বলেন, একজন ধর্মী শিক্ষক হয়েও এরকম অনিয়ম ও অনৈতিক কাজের আশ্রয় নিয়ে এলাকার নিরীহ মানুষকে হয়রানি করছেন।
অভিযোক্ত রাউৎগাঁও উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আব্দুস ছত্তার দলিল জালিয়াতি ও জায়গা দখলের অভিযোগ গুলো অস্বীকার করে বলেন, সমাজে আমার মান-সম্মান ক্ষুন্ন করার জন্য ওই মিথ্যা অভিযোগ আনা হয়েছে। জন্ম তারিখের বিষয়ে তিনি বলেন, তখন শিক্ষকরা চাকুরির সুবিধার জন্য কিছু বয়েস পিছলামিয়ে দাখিলের ফরম পূরণ করেন।
মন্তব্য করুন